৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৫:১৫:২৭ অপরাহ্ন


বিএনপির সমাবেশে কি বার্তা পাওয়া গেলো
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-০৭-২০২৫
বিএনপির সমাবেশে কি বার্তা পাওয়া গেলো বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর


বাংলাদেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে বা আদৌও হবে কি-না তা নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। একের পর এক বিভিন্ন ধরনের কর্মকান্ড ঘটনা আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে মন্তব্য বা বক্তব্য সার্বিক পরিস্থিতিকে সন্দেহজনক করে তুলছে। তবে এরই মধ্যে সর্বশেষ বিএনপি’র পক্ষ থেকে এক সমাবেশে একটি বার্তা পাওয়া গেলো। তবে ও-ই বার্তায় ধারণা পাওয়া যাচ্ছে দলটি ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন না হলে কি করতে পারে।

কি বললো বিএনপি

সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়। ওই বেঠক শেষে উভয় পক্ষ ‘সন্তুষ্ট’ বলে জানিয়েছেন তাঁদের প্রতিনিধিরা। এতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান খলিলুর রহমানের পাঠ করা লিখিত যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, বৈঠকটি অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে তারেক রহমান আগামী বছরের রমজানের আগেই নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব দেন। তিনি জানান, খালেদা জিয়ারও এ প্রস্তাবকে সমর্থন করেন। 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগেও নির্বাচন সম্ভব হতে পারে। আর এরপর থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠা পেয়ে যাচ্ছে যে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। কিন্তু মাঠে প্রতিষ্ঠিত ধারণা যে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে হতে যাচ্ছে। কিন্তু এমন ধারণা পাল্টে দিতে বা সোজা ভাষায় বলতে গেলে বলতে হয় ওই নির্বাচন আদৌ ফেব্রুয়ারিতে হচ্ছে কি-না তা নিয়ে বিস্তর ফারাক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন বা পিআর পদ্ধতির ব্যাপারে জোরালো ভূমিকার রাখার আভাস মিলছে। এরই মধ্যে মিটফোর্ড এলাকায় প্রকাশ্যে লাল চাঁদ সোহাগকে হত্যা নিয়ে এক রহস্যজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। আর এতে করে দিন দিন পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে দিকে টার্ন নিচ্ছে বলো কারো কারো অভিমত। 

আর এমন পরিস্থিতিতে গত ১৪ জুলাই সোমবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে। তবে এই সমাবেশো আয়োজনের লক্ষ্য ছিল ভিন্ন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, অপপ্রচার এবং মিটফোর্ড এলাকায় প্রকাশ্যে লাল চাঁদ সোহাগকে হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এই কর্মসূচি নেয়া হয়। কিন্তু এতে একট বার্তা সবাইকে বুঝিয়ে দেয় আসলে ভদ্রভাবে কি বলতে চাচ্ছে বিএনপি? কেননা মিটফোর্ড এলাকায় প্রকাশ্যে লাল চাঁদ সোহাগকে হত্যার ঘটনা যেমন ছিল নির্মম বর্বরতার সাক্ষী তেমনি এটি নিয়ে হঠাৎ বিএনপি’র বিরুদ্ধে একটি পক্ষের প্রতিবাদ প্রতিরোধের ডাক ছিল বেশ রহস্যজনক। কারো কারো মতে এটি রহস্যজনকই নয় আরও অনেক কারণ থাকতে পারে। আর একারণে সোমবারের সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটি বার্তা দিযেছেন। তিনি বলেছেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র চাই। আমাদের লক্ষ্য একটাই, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে হবে। এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে, এ কোনো ব্যতিক্রম হবে না বলে।

কি বোঝালেন বিএনপি মহাসচিব

সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ওই বক্তব্যতে বোঝা যাচ্ছে বিএনপি ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে স্থির হয়ে আছে। এব্যপারে দলটির অবস্থানও কঠোর। এবং সেভাবেই দলকে নিয়ে এগুচ্ছে। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হলে হয়তবা বিএনপি ভিন্ন পথে হাঁটবে। সেটা হতে পারে আন্দোলন সংগ্রাম বা অন্য কিছু। আবার এ-ও হতে পারে রাজনীতিতে তৈরি করা হবে অন্যরকম মেরুকরণ। বিশ্লেষকরদের মতে দলটির সমাবেশে তিনি এমনই বার্তা দিলেন বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। ফখরুল ইসলাম বোঝাতে চাইলেন অন্তর্বর্তী সরকার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নিয়ে যেন-তেন আচরণ করলে তার দল কি করবে সেব্যাপারে অত্যন্ত মার্জিত বক্তব্য দিলেন। বোঝা যাচ্ছে বিএনপি চাচ্ছে ড. ইউনুসের কাজে জেন্টেলমেন্ট এগ্রিমেন্ট।

শেয়ার করুন