মসজিদে হামলা ও ভাঙচুর মিনেসোটার মুসলিম কমিউনিটিকে ভীত ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত করে তুলেছে। গত ২৭ আগস্ট রাত ২টায় মিনিয়াপোলিসের দারুল হিকমাহ ইসলামিক সেন্টারে এক ব্যক্তি একটি ধাতব রড ব্যবহার করে মসজিদে প্রবেশ করে এবং মসজিদের একাধিক কক্ষ তছনছ করে। সেই সঙ্গে মসজিদ ভবনের ক্ষতি করে। গত তিন বছরে মিনেসোটার বিভিন্ন মসজিদে ৩৫ বার হামলা হয়েছে, যা মিনেসোটা স্টেটকে মসজিদে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক হামলার রেকর্ডধারী স্টেটে পরিণত করেছে।
মিনেসোটায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মসজিদ হামলার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে কুখ্যাত ছিল ২০১৭ সালে ব্লুমিংটনের দার আল-ফারুক ইসলামিক সেন্টারে মিলিশিয়ার সদস্যদের বোমা হামলা। গত তিন বছরে মিনেসোটায় মসজিদ হামলার সংখ্যা বেড়েছে, যার মধ্যে কিছু এই প্রবণতাকে কংগ্রেসম্যান ইলহান ওমরের বিরুদ্ধে হুমকির সঙ্গে যুক্ত করেছে। কংগ্রেসম্যান ইলহান ওমর নিজেই সোমালি কমিউনিটির একজন মুসলিম। মিনিয়াপোলিস এলাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সোমালির বসবাস রয়েছে।
মিনেসোটা রাজ্যে মুসলিম কমিউনিটির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, বিশেষ করে সোমালি শরণার্থীদের আগমনের ফলে। এ সম্প্রদায়টি তাদের সংস্কৃতি, ধর্ম এবং ঐতিহ্য বজায় রেখে একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে চায়। তবে ঘন ঘন মসজিদে হামলার ফলে তারা নিরাপত্তাহীনতা এবং অস্থিরতার মধ্যে বসবাস করছে।
কেয়ার-মিনেসোটা চ্যাপ্টারের নির্বাহী পরিচালক জেলানি হুসেন বলেন, কয়েক সপ্তাহ পর পরই কিছু না কিছু ঘটছে। আমরা কিছুতেই রেহাই পাচ্ছি না। আমাদের জন্য এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তিনি আরো বলেন, মিনেসোটার মসজিদগুলো তাদের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য কাজ করছে। ভালো নজরদারি ক্যামেরার স্থাপনের জন্য ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে অতিরিক্ত তহবিলের আবেদন করছে। যা দিয়ে উন্নত মানের সুরক্ষা ক্যামেরা এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সরঞ্জাম স্থাপন করা হবে। নজরদারি ক্যামেরা একটি প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করতে পারে। এদিকে কমিউনিটির সদস্যরা তাদের মসজিদে ঘন ঘন হামলার কারণে অস্বস্তি বোধ করছেন। তিনি বলেন, মিনেসোটায় মসজিদে হামলা কোনো নতুন ঘটনা নয়। স্থানীয় মুসলিম কমিউনিটি দীর্ঘদিন ধরে এসব হামলার শিকার হয়ে আসছে। এ ঘটনাগুলো শুধু ভৌত ক্ষতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং মুসলিম কমিউনিটির সদস্যদের মানসিক ও সামাজিক অবস্থার ওপরেও গভীর প্রভাব ফেলে।
কমিউনিটির নেতারা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করছেন যাতে এ ধরনের ঘটনা রোধ করা যায় এবং অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করা যায়। তবে এ ধরনের ঘটনা কমিউনিটির মধ্যে ভয় এবং অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। স্থানীয় মুসলিম কমিউনিটি আশা করছে যে, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে এবং মুসলিম কমিউনিটির সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। তাদের আশা, ভবিষ্যতে এ ধরনের হামলার সংখ্যা কমে যাবে এবং তারা শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদে জীবনযাপন করতে পারবে।