৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৪:০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন


প্রো-প্যালেস্টাইন বিক্ষোভে কুড়াল হাতে হত্যার হুমকিতে একজন গ্রেফতার
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৯-২০২৫
প্রো-প্যালেস্টাইন বিক্ষোভে কুড়াল হাতে হত্যার হুমকিতে একজন গ্রেফতার প্রো-প্যালেস্টাইন বিক্ষোভে কুড়াল হাতে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন ম্যাথিউ ফ্রিম্যান


ম্যাসাচুসেটসের ক্যামব্রিজে প্রো-প্যালেস্টাইন ও গণহত্যাবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর কুড়াল দেখিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ম্যাথিউ ফ্রিম্যানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফ্রিম্যান ঘৃণাজনিত অপরাধসহ একাধিক ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটে ১০ আগস্ট হার্ভার্ড স্কয়ারে আয়োজিত ‘রাইজ আপ ফর গাজা’ শিরোনামের মিছিলে। বিক্ষোভকারীদের ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, ফ্রিম্যান তার গাড়ি থেকে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করছেন এবং হুমকি দিচ্ছেন, আমি তোদের খুন করব। একই সঙ্গে তিনি বিক্ষোভকারীদের ‘নাজি’ বলে গালি দেন এবং সমকামী বিদ্বেষী শব্দ ব্যবহার করেন। পরবর্তী মুহূর্তে তাকে গাড়ির দরজা খুলে কুড়াল হাতে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

গ্রেফতারের পরে ফ্রিম্যানকে আদালতে হাজির করা হলে তার বিরুদ্ধে তিনটি গুরুতর অভিযোগ আনা হয়। এগুলো হলো-বিপজ্জনক অস্ত্র (কুড়াল) দিয়ে হামলার চেষ্টা, ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে এক ব্যক্তির ওপর গাড়ির দরজা দিয়ে আক্রমণ এবং নাগরিক অধিকার লঙ্ঘন করে সংবিধানসম্মত প্রতিবাদে বাধা সৃষ্টি। মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারী ফাওয়াজ আবুশারখ গাড়ির দরজার আঘাতে আহত হন।

ঘটনার পর কেয়ার-ম্যাসাচুসেটসসহ কয়েকটি সংগঠন আহত বিক্ষোভকারীর পক্ষ নিয়ে দাঁড়ায় এবং ঘৃণাজনিত অপরাধ হিসেবে অভিযোগ আনার বিষয়টিকে স্বাগত জানায়। তবে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা উঠেছে। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেছেন, হামলার সময় একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তারা কার্যত কোনো হস্তক্ষেপ করেননি। ভিডিওতে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা চিৎকার করে জানাচ্ছেন যে, ওই ব্যক্তির কাছে কুড়াল রয়েছে, অথচ পুলিশ কেবল ধীরে ধীরে ঘটনাস্থলের দিকে হাঁটছিল। বিক্ষোভ সংগঠকরা সামাজিক মাধ্যমে পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে লিখেছেন, পুলিশ নিজেদের নিরপেক্ষ দাবি করলেও বাস্তবে তারা সিওনিবাদকে রক্ষা করছে, ধনিক শ্রেণির স্বার্থে কাজ করছে এবং গণহত্যার প্রতিবাদকারীদের দমন করছে। রাইজ আপ ফর গাজা শীর্ষক এই মিছিলটি ১০ আগস্ট দুপুরে ক্যামব্রিজ কমন থেকে শুরু হয় এবং হার্ভার্ড স্কয়ার এলাকায় পৌঁছায়। সংগঠক লিয়া কায়ালি, প্যালেস্টিনিয়ান ইয়ুথ মুভমেন্টের নেতা বলেন, গাজা একা নয়। আমরা ক্যামব্রিজসহ সারা বিশ্বের শহরে ফিলিস্তিনের জন্য দাঁড়াচ্ছি। আমরা সিওনিবাদ, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ এবং নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ।

উল্লেখ্য, এর আগে একই প্রেক্ষাপটে ক্যামব্রিজ পুলিশ তিনজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছিল এবং পিপার স্প্রে ব্যবহার করেছিল বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন । এমনকি এক অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে পুলিশ পিপার বল ব্যবহার করলে গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে ৫০টির বেশি পরিবার প্রভাবিত হয়েছিল। অধিকারকর্মীরা বলছেন, সাম্প্রতিক এই হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বরং যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থী আন্দোলনের বিরুদ্ধে বাড়তে থাকা বিদ্বেষ ও সহিংসতার নতুন দৃষ্টান্ত। তাদের মতে, গাজার মানবিক সংকট ও গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ঠেকাতে ভয়, হুমকি এবং দমননীতিই ব্যবহার করা হচ্ছে, যা গণতন্ত্র ও সংবিধানসিদ্ধ অধিকারের জন্য গুরুতর হুমকি।

শেয়ার করুন