৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ৬:৩২:০৯ অপরাহ্ন


হার্ড লাইনে সরকার
আ.লীগের কর্মসূচিতে বিপদে নেতাকর্মীরা
মাসউদুর রহমান
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০২-২০২৫
আ.লীগের কর্মসূচিতে বিপদে নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরণ


তৃণমূলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ক্ষোভের অন্ত নেই। এ কথা যে শুনবে তেমনও কাউকে পাচ্ছেন পাশে এ মুহূর্তে। ঐতিহ্যবাহী এ দলটির এমন পরিস্থিতি আর কখনই সম্মুখীন হতে হয়নি। গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রামকরে যাওয়া আওয়ামী লীগ ২০২৪-এ এসে যে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়লো সেটা দলের শীর্ষস্থানীয় কতিপয় ক্ষমতালোভী, অর্থলোভী, স্বৈরাচারী মনভাবের কারনে। এমন ক্ষোভের কারনগুলো কাউকে বলতে গেলে, চরমভাবে দুর্বলতা প্রকাশ পাবে, সেটা যেমন ভবিষ্যতে দলের জন্য ভীষণ খারাপ, এরপর প্রতিপক্ষও চেপে বসবে প্রভাববিস্তারে। 

এমনিতে ৫ আগস্টের পর লুকিয়ে, আড়ালে আবডালে। এরপর এমন এক মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে থাকা দলটির ওপর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের ঘোষিত কর্মসূচি মারাত্মক দ্বিধাদ্বন্দ্ব এমনকি হুমকির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। দলের বিভিন্ন স্তরের লোকদের সঙ্গে কথা বলেই এ কথা জানা গেছে। 

কী ক্ষোভ তাদের 

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার আগে তার কাছের এমনকি দূরের আত্মীয়স্বজনরাও পালিয়ে গেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক ফ্রি প্ল্যান সেভ এক্সিটের আগেই এসব আত্মীয় স্বজনরা পালিয়ে গেছেন বা দেশ ত্যাগ করেছেন বা পরে সেভ এক্সিটের আওয়তায় পালাতে সক্ষম হয়েছেন। ৫ আগস্টের পর শেখ হাসিনা পুত্র ও আওয়ামী লীগ সরকারের উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এক বক্তব্যে বলেছিলেন, ‘আমরা আমার মাকে নিয়ে আসবো। সে আর রাজনীতিতে ফিরবেন না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কী হবে সেটা আমরা জানি না।’ এ বক্তব্যে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। তবুও নিজস্ব কারিশমায় এবং প্রশাসনের ঢিলেঢালা ভাবের কারনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী অনেকেই নিরাপদ রয়েছেন। যাদের বিভিন্ন অভিযোগে আটক করা হয়েছে তারাও জামিন পেয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন ফরমুলা ব্যবহার করে। যেহেতু ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধকরণের দাবি রয়েছে, এমনি মুহূর্তে চুপ থেকে নিরাপদে থাকাটাই শ্রেয় ভেবেছেন অনেকে, থাকছেনও। 

কিন্তু সমস্যা তৈরি হয়েছে তখনই যখন আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ অপরিকল্পিতভাবে তাদের কেন্দ্রীয় ওয়েবসাইট থেকে প্রচার করেছেন ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে এক আন্দোলন কর্মসূচি। যাতে রয়েছে লিফলেট বিতরণ, মশাল মিছিল এরপর সর্বাত্মক হরতালও। এসব কর্মসূচিতে দলের অভ্যন্তরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কেউ বলছেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পালিয়ে দেশ ত্যাগ করে নিরাপদ অবস্থানে চলে গেছেন। কর্মীদের কাছে বলে যাওয়ারও তাদের প্রয়োজন মনে হয়নি। এখন ৬ মাস না যেতে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে আবার আন্দোলনের কর্মসূচি। কিন্তু এ কর্মসূচি দিয়ে কী সফলতা পেতে চান তারা? অথচ এ কর্মসূচি পালন করতে যেয়ে যদি বিপদে পড়তে হয়, তখন কেউ খবরটুকু নেওয়ারও কি রয়েছে? তাছাড়া এমন কর্মসূচি এ দ্রুত বা এ মুহূর্তেই বা কেন। টানা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকার পর একটা ব্রেক দেয়া যুক্তিযুক্ত। যেভাবেই হোক সে সুযোগ এসেছে। কিন্তু এতো বড় এক ম্যাসাকারের পর ছাত্রজনতা যেখানে উত্তপ্ত অবস্থায়, আহতরা চিকিৎসার জন্য লড়ছেন। রক্তের দাগ যেখানে শুকায়নি। নিহতদের পরিবারে শোকের মাতম প্রতিনিয়ত, সেখানে আওয়ামী লীগ এমন লিফলেট কর্মসূচি, মশাল মিছিল বা হরতাল দিয়ে কী দাবি আদায়ে সক্ষম হবে। ইউনূস সরকারকে এ কর্মসূচি দিয়ে কী বাধ্য করা যাবে? মোটেও না। তাহলে শুধু শুধু নিরাপদস্থানে থাকা আড়ালে থাকা আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের কেন কর্মসূচি পালন করতে যেয়ে হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়া। 

প্রচণ্ড ভয়ে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা 

ফেব্রুয়ারির কর্মসূচি দেওয়ার পর থেকেই এটা পালনেরও তাগিদ রয়েছে। কারণ ১৬ বছরের শাসনামলে যে তা-ব ও অর্থ সংগ্রহ করে সমৃদ্ধ হয়েছেন এবং মুহূর্তে মুহূর্তে স্লোগান ধরতেন- ‘শেখ হাসিনা ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ এখন সে স্লোগান যথার্থ ছিল কি না, সেটা প্রমাণের পালা। কার পারফরমেন্স কেমন সেটাও হবে মনিটরিং। ভবিষ্যতে এসব ত্যাগীই বাছাই হবে। এতে করে অস্তিত্ব নিয়ে বেঁচে থাকতে দোটানায় তারা। এমনিতেই তৃণমূলে বিএনপি ও জামায়াত কর্তৃক যে আক্রমণ হওয়ার কথা ছিল, সেটা হয়নি। ফলে সেভই রয়েছেন। বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীদের এখন স্বপ্ন নিরপেক্ষ নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় যাওয়া। সে নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তীর সঙ্গে লড়াইও করছেন তারা। এমনি মুহূর্তে আওয়ামী লীগের নতুন কর্মসূচি করার সুযোগ দিয়ে আরেকটা ঝামেলা তৈরির অপপ্রায়াস। এতে প্রতিপক্ষরা চটে গেলে তাদের হাত থেকে রেহাই পাওয়া কষ্টকর হয়ে যাবে। কেননা আগের মতো পুলিশ আওয়ামী লীগের কথা শুনবে না। চাকরি বাঁচাতে হলেও পুলিশ বরং বিএনপি, জামায়াতের লোকজনের কথাই শুনবে। মানতে হবে। নতুবা ছাত্রহত্যা থেকে শুরু করে যেসব অপকর্ম পুলিশ, তথা আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ১৬ বছর করে আসছিল, তার শোধ নেওয়ার পর্ব শুরু হতে পারে। ফলে পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিজেদের রক্ষার জন্য হলেও আওয়ামী লীগের ওপর চড়াও হবে, যা বর্তমানে যে স্বস্তিতে বসবাস, সেটা আর সম্ভব হবে না। 

ধরপাকড় শুরু

আওয়ামী লীগের ফেব্রুয়ারির কর্মসূচি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে ধরপাকড়ও শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্নস্থানে লিফলেট বিতরণ করেছেন তারা বিচ্ছিন্নভাবে। আর এসময় লিফলেট বিতরণকারীদের দ্রুত কার্যসম্পাদন তথা, পুলিশ ও প্রতিপক্ষদের ধাওয়া এড়ানোসহ একধরনের অস্থিরতা বিরাজ করতে দেখা গেছে। যা সাধারণ মানুষের মধ্যে হাস্যরসেরও সৃষ্টি করেছে। সাধারণ মানুষও আটক করে পুলিশে দিচ্ছেন। পুলিশ নিজেও ধরছে কোথাও কোথাও। এছাড়াও অনেকের বিরুদ্ধে জারি হয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানা। আছে দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা। বিপুল পরিমান অর্থ ব্যায় হতে পারে এমন কর্মসূচিতে এমন ধারণা থেকে অনেক নেতাকর্মীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে। স্থগিত করা হচ্ছে লেনদেন, নজরদারি বাড়ছে। 

অন্তর্বর্তী সরকারের হুঁশিয়ারি

আওয়ামী লীগের ফেব্রুয়ারির কর্মসূচি দেওয়ার আগ পর্যন্ত বেশ নীরবই ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা ও প্রধান উপদেষ্টা। কিন্তু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অরাজকতা তৈরির চেষ্টাতে অতিষ্ঠ্য সাধারণ মানুষ। নড়েচড়ে বসেছেন প্রধান উপদেষ্টাও। 

৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য একটি কমান্ড সেন্টার গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এদিন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পর্যালোচনা সভায় তিনি এই নির্দেশ দেন। 

সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি এবং পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, ডিএমপি, কোস্টগার্ড ও বিশেষ শাখার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে সর্বোচ্চ আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তারা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে। আমাদের অবশ্যই একটি কমান্ড সেন্টার বা কমান্ড সদর দফতর স্থাপন করতে হবে, যা পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করবে। ’ তিনি বলেন, নতুন কমান্ড কাঠামো ‘দক্ষতা ও নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে’ দেশের সকল বাহিনী ও থানা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করবে। 

প্রধান উপদেষ্টা নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘিœত করার যে কোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মতো আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। এ বছরটি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাউকে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া যাবে না।’ প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করছে এবং মিথ্যা ও অপতথ্য ছড়াচ্ছে। দেশবাসীকে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সবাইকে এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানদের মানবাধিকার সুরক্ষার নির্দেশ দেন এবং ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর যে কোনো আক্রমণ প্রতিহত করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘যদি আমরা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিতে না পারি, তাহলে বিশ্ব পরিমন্ডলে আমাদের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ বিষয়ে আমাদের সম্পূর্ণ স্বচ্ছ হতে হবে।’ পুলিশকে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এমনভাবে অভিযান পরিচালনা করতে হবে যাতে পবিত্র রমজান মাসে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখা যায়। 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের প্ল্যান বর্ণনা 

পুলিশপ্রধান বাহারুল আলম এসময় জানান, শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত হত্যাকান্ড ও নৃশংসতার ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলা পর্যবেক্ষণের জন্য ১০টি বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা পুলিশকে এ মামলাগুলোর বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন এবং কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করতে বলেন। পুলিশ মহাপরিদর্শক জানান, বাংলাদেশ ইন্টারপোলের কাছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ পাঠিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা অনুরোধ করেছি। আশা করি শিগগিরই সাড়া পাবো।’

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানান, পুলিশের কড়া নিরাপত্তার কারণে রাজধানীতে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা কমেছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। ’ 

লিফলেট বিতরণ করলেই গ্রেফতার 

যারা আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরণ করবে তাদের গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচারের দোসর ও সাঙ্গপাঙ্গরা অনেক কিছু করতে চাচ্ছে। তারা লিফলেট বিতরণ করতে চাচ্ছে। যারা লিফলেট বিতরণ করবে তাদের জন্য কড়া বার্তা হলো- তাদের গ্রেফতার করা হবে। ‘সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। প্রেস সচিব বলেন, ‘লিফলেটে যেসব কথা আছে, তা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে হুমকিতে ফেলার মতো। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা অনলাইনে মিথ্যা ও গুজব ছড়াচ্ছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচারকে এখনো প্রধানমন্ত্রী বলছেন। পুরোটা আমরা মনিটরিং করছি। আমাদের কড়া বার্তা হচ্ছে, যারা লিফলেট বিতরণ করবে, এ ধরনের কর্মসূচিতে যাবে তাদের গ্রেফতার করা হবে। আইনের আওতায় আনা হবে।’ 

সবশেষ

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের প্রায় সবাই বিদেশে সেভ এক্সিট নিয়ে চলে গেছেন। যারা রয়েছেন, তাদের অনেকে গ্রেফতার হয়েছেন, কেউ কেউ পালিয়ে রয়েছেন বিভিন্ন স্থানে। অনেকের বিরুদ্ধে দেশত্যাগের রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। যদিও এদের সবার প্রতিই প্রশাসনের একটা ঢিলেঢালা মনোভাব ছিল। কারণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেই ৫ আগস্টের পর থেকে অদ্যাবধি বিশেষ করে আওয়ামী লীগ বা অন্যান্য সরকারের সময় যতটা কার্যকরি ভূমিকায় থাকেন তার ৪০ শতাংশেও নেই। ফলে মানুষের মধ্যে একটা আস্থাহীনতাও বিরাজ করছে। কারণ সাধারণ মানুষ বিপদ-আপদে পুলিশের কাছেই সহায়তার আশ্রয় খোঁজেন। আর এ নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্বও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে রেখেছে রাষ্ট্র। 

এমনি মুহূর্তে অনেক পুলিশ কর্মকর্তার দলীয় ট্যাগও চিহ্নিতকরণের একটা বিষয় রয়েছে। যারা বিগত সরকারের আমলে অতি উৎসাহী ছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এদের অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন, পালিয়ে গেছেন। এরপরও অবশিষ্ট রয়ে গেছেন। তাদের চাকরি বাঁচানো ও কাজের প্রতি শতভাগ নিরপেক্ষ ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসনের প্রতি আনুগত্য প্রকাশেও কাজ করতে হবে। আর সেটা হবে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের জন্য কঠিন থেকে কঠিনতম পরিস্থিতি। যা তারা এমন কর্মসূচির মাধ্যমে সজাগ করলো অন্তর্বর্তী সরকারকে এটাই মনে করেন দলটির অনেক শুভাকাঙ্ক্ষীও। 

শেয়ার করুন