৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১১:৫১:০৯ অপরাহ্ন


আরো লক্ষাধিক রোহিঙ্গা ঢুকেছে বাংলাদেশে
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-০৪-২০২৫
আরো লক্ষাধিক রোহিঙ্গা ঢুকেছে বাংলাদেশে বাংলাদেশের একটি রোহিঙ্গা ক্যাম্প


বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য যখন বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে আসছে অন্তর্বর্তী সরকার, ঠিক সে সময়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে গত ২৬ এপ্রিল শনিবার পর্যন্ত নতুন করে এক লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে যৌথভাবে তাদের আঙুলের ছাপও নিয়েছে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর)। এদের নিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মোট রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়ালো অন্তত ১৩ লাখ ১৩ হাজারে। তবে নতুন আসা রোহিঙ্গাদের আইরিশের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তের অনুমতি এখনো দেয়নি সরকার। 

নতুন আসা রোহিঙ্গাদের আবাসস্থলের ব্যবস্থা করতে বাংলাদেশকে চিঠি দিয়েছে ইউএনএইচসিআর। গত সপ্তাহে তারা শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়কে এ চিঠি দেয়। বেশ কিছুদিন থেকে প্রায় প্রতিদিন সীমান্ত পেরিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। গত সপ্তাহেই এক হাজার ৪৪৮টি পরিবার এবং আরো পাঁচ হাজার ৯৩০ জন আলাদাভাবে বাংলাদেশে এসেছে। নতুন আসা রোহিঙ্গারা ২৯ হাজার ৬০৭টি পরিবারের সদস্য। বাংলাদেশের সীমান্তে নজরদারি থাকা সত্ত্বেও এসব মানুষ কক্সবাজারের ২০টি ক্যাম্পে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে বসবাস করছে। তাদের মধ্যে ৫৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ নারী।

ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, পৃথক ঘর না হলে অন্তত দোতলা ঘর নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া যেতে পারে। সংস্থাটি ক্যাম্পে তাদের বিদ্যমান অবকাঠামোর তালিকাও সরকারের কাছে পাঠিয়েছে। তবে সরকার এখনো লিখিতভাবে কোনো সাড়া দেয়নি। নতুন রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৬০ বছরের বেশি বয়সী নারী তিন হাজার ৮৯০ জন ও পুরুষ তিন হাজার ৯৩০ জন। ১৮ থেকে ৫৯ বছর বয়সী নারী ২৭ হাজার ১৭৩ জন ও পুরুষ ১৯ হাজার ৮২৫ জন। শিশুদের মধ্যে এক বছরের নিচে নারী এক হাজার ২৯০ জন, পুরুষ এক হাজার ৩২০ জন।

বর্তমানে কক্সবাজার ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা রয়েছে। তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের চেষ্টার পাশাপাশি বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে প্রতিশ্রুত সহায়তা কমে আসায় সংকট আরো গভীর হচ্ছে।

এদিকে বিপুল পরিমাণ রোহিঙ্গা নিয়ে দুশ্চিন্তা বাংলাদেশের। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা ডোনাল্ডের নতুন নীতিতে রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য দেওয়া ফান্ড কমিয়ে দেওয়ার ঘোষণা করে। এ থেকে সংকট তৈরি হয়। আমেরিকাই যদি না সহায়তা দেয়, এদের লালনপালন বাজে অবস্থায় গিয়ে পৌঁছবে। ইতিমধ্যে জাতিসংঘের মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে আসা এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য দেশ যাতে রোহিঙ্গা সহায়তা যাতে বন্ধ না করে এজন্য আহ্বান জানানো হয়। এতে কিছু পজিটিভ সিদ্ধান্ত আসার কথা। কিন্তু নতুন করে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা এলে এদের জন্য দেশের সরকারের নতুন চিন্তা এসে মাথায় জড়াবে।

শেয়ার করুন