৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ৬:৪৯:৩২ অপরাহ্ন


ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের দ্বারা মানবাধিকার লংঘন
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৬-২০২৪
ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের দ্বারা মানবাধিকার লংঘন মহিলা পরিষদের মানববন্ধন


রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের দ্বারা আজ মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটছে যা অত্যন্ত নিন্দাজনক। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা। ‘নারীর উপর পুলিশী নির্যাতন এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনায়’ প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সংগঠনের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নাগরিক উদ্যোগ, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ, দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট, ঢাকা ওয়াইডব্লিউসিএ, জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি এবং বাষ্ট্র এর প্রতিনিধি। হরিজনদের উচ্ছেদের ঘটনায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা ঘটনার বিবরণ দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আইনজীবী সিনোমে মারমা।

ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন বংশালে হরিজন সম্প্রদায়কে উচ্ছেদের ঘটনা নতুন নয়। বিভিন্ন সময়ে তাদের উচ্ছেদের ঘটনা, পুলিশী হেফাজতে নারীর মৃত্যু এবং ধর্মীয় অবমাননার নামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলা ঘটনায় আজ বারবার স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে দেশে আইন কেউ মানছে না বরং নিজেদের মত আইনকে ব্যবহার করছে। তিনি এসময় সকল অপরাধ কার্যক্রম বন্ধ করতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রতি ও সংসদকে সন্ত্রাস, অপরাধপ্রবণ ব্যক্তিদের থেকে মুক্ত রাখার জোর দাবি জানান। পাশাপাশি হরিজনদের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে সরকার ও সুশীল সমাজের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

মালেকা বানু বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের দ্বারা আজ মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটছে যা অত্যন্ত নিন্দাজনক। আমরা দেখছি প্রতিটি ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে সাম্প্রদায়িক চিন্তা, চেতনা ও মনোভাব। অন্যদিকে হরিজন সম্প্রদায়ের পুনর্বাসনের চিন্তা না করেই ব্যবসায়িক বিনিয়োগের বিস্তারের লক্ষ্যে তাদের উচ্ছেদ করা হলো, এমনটি প্রতিনিয়তই হচ্ছে যা কোনভাবেই কাম্য নয়। তিনি এসময় অপরাধ দমনে প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত এবং মানবাধিকারের দর্শন প্রতিষ্ঠিত করে দেশ পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রের প্রতি জোরালো আহ্বান জানান। 

অন্যান্য বক্তারা বলেন, নারীরা কর্মক্ষেত্রসহ দেশের বিভিন্ন সেক্টরে এগিয়ে গেলেও তাদেরকে সামাজিকভাবে অবদমিত হতে হচ্ছে। সংবিধানের আলোকে ধর্ম, গোত্র, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের সমান অধিকারের কথা বলা হলেও হরিজন সম্প্রদায়কে উচ্ছেদ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনা প্রায়শই ঘটছে। এসকল ঘটনা কে প্রতিহত করতে বাংলাদেশের প্রায় সকল ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে বর্তমান সরকারের একাধিক কমিটি থাকলেও কমিটিগুলোর তৎপরতা খুব বেশি লক্ষ্য করা যায় না। তারা আরো বলেন, পুলিশী হেফাজতে নারীর মৃত্যু ঘটনাও কোনভাবেই দেশে আইনের শাসনকে কায়েম কওে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক এবং সমতাপূর্ণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা বলা হলেও তা আদৌ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কিনা তারা মন্তব্য করেন। তারা এসময় সকল ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে প্রশাসন দায়িত্ব পালনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পাশাপাশি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের প্রতি জোর দাবি জানান।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ, সম্পাদকমণ্ডলী, কর্মকর্তাবৃন্দ, টিইউসি ও একশন এইডের প্রতিনিধি এবং সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনা করেন অ্যাভোকেসি ও লবি পরিচালক জনা গোস্বামী।

শেয়ার করুন