৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৭:০৬:৪১ পূর্বাহ্ন


নিউইয়র্কে বডিসের আলোচনায় বক্তারা
যারা হুন্ডির সঙ্গে জড়িত তারা দেশের শক্র
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-১০-২০২৪
যারা হুন্ডির সঙ্গে জড়িত তারা দেশের শক্র বক্তব্য রাখছেন মোহাম্মদ আবদুল মান্নান


ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীদের পাঠানো প্রত্যেকটি ডলার বাংলাদেশের সব ব্যাংকে নিরাপদ। অন্যদিকে যারা হুন্ডির সঙ্গে জড়িত তারা দেশের শত্রু। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার এ লক্ষ্যে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছে। গত ১৯ অক্টোবর শনিবার নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলেন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান। সেমিনারে অংশ নেওয়া বক্তারা জানান, ব্যাংক আস্থার পরিবেশ তৈরি করতে পারলে প্রবাসীরা বিদেশে টাকা না রেখে বাংলাদেশে রাখবে। এ সময় তারা অবিলম্বে অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (বডিস) ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের যৌথ উদ্যেগে আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করনে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংকের চেয়ারম্যান, ইসলামী ব্যাংক কনসালটেন্সি ফোরামের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আবদুল মান্নান। প্যানালিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন লং আইল্যান্ড ইউনির্ভাসিটির অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. শওকত আলী, যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব, অ্যাটর্নি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা ও বিডসের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ ইমরান হোসাইন আনসারী। 

এ সময় স্বাগত বক্তব্যে বিডসের নির্বাহী পরিচালক ইমরান আনসারী বলনে, ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার ঋণ করেছে সাড়ে ১৫ লাখ কোটি টাকা। আর ১৫ বছরে পাচার করেছে ১৮ লাখ কোটি টাকা। আর এগুলো করা হয়েছে ব্যাংকগুলো দখল ও ডাকাতির মাধ্যমে এবং রাষ্ট্রীয় মদদে। তিনি আরো বলনে, শুধু ব্যাংকগুলোকে লুটপাট করেই বিগত স্বৈরাচারী সরকার থামেনি, বিগত সরকার ইসলামী ব্যাংকগুলোর মৌলিক ফিলোসফিকে ধ্বংস করেছে। দেশে বড় বড় মেগা প্রজেক্টে লুটপাটের নামে দুর্নীতিবাজ সোসাইটি গড়ে তুলেছে।

এ সময় তিনি বিডসের পক্ষ থেকে দাবি জানান, বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ১৫ বছরে যেসব টাকা পাচার হয়েছে, তা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে। ঋণখেলাপিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ব্যাংকের জিম্মাদারিতে আনতে হবে। প্রবাসীদের সব ইনভেস্টমেন্ট নিরাপদ করতে এবং উৎসাহিত করতে সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

মূল প্রবন্ধে মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলনে, প্রবাসীরা শুধু নিজেদের সমৃদ্ধ করছেন না, তারা বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখছেন বাংলাদেশ নির্ভরশীল রেডিমেড গার্মেন্টস, রেমিট্যান্স, রুরাল ডেভেলপমেন্টে। তিনি প্রবাসীদের আশ্বস্ত করে বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে যেসব রেমিট্যান্স পাঠানো হবে তার নিরাপত্তা বিধানে বর্তমান সরকার বদ্ধপরকির। প্রবাসী বিনিয়োগবান্ধব ব্যাংকিং কার্যক্রম গড়ে তুলতে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো শিগগিরই কার্যকর উদ্যোগ নেবে। তিনি আরো বলেন, পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনতে ব্যাংকগুলো কাজ করছে। ভঙ্গুর ব্যাংকিং সেক্টরকে শিগগিরই তার স্বকীয়তায় ফিরিয়ে আনতে হবে। এজন্য সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান।

অধ্যাপক ড. শওকত আলী বলেন, রেমিট্যান্স পাঠানো নয়, বলুন প্রবাসীরা বিনিয়োগ পাঠাবে। এজন্য ব্যাংকগুলোকে উদ্যোগ নিতে হবে।

ড. মির্জা গালিব বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টর রাজনীতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সুতরাং আগে প্রয়োজন রাজনৈতিক সংস্কার। এজন্য সরকারকে সহযোগিতা ও সময় দিতে বাংলাদেশি সবার প্রতি আহ্বান জানান।

অ্যাটর্নি গোলাম মোস্তফা বলনে, প্রবাসীরা বিনিয়োগে আগ্রহী। কিন্তু প্রবাসীদের বিনিয়োগ নানা কারণে ঝুঁকির মুখে পড়ে। এজন্য সরকার ও ব্যাংকগুলোকে উদ্যোগ নিতে হবে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন সাংবাদিক সৌরভ ইমাম।

শেয়ার করুন