৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৭:৬:৫৯ পূর্বাহ্ন


শিক্ষার্থীদের জন্য ‘বেল-টু-বেল’ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর
নিউইয়র্কের স্কুলে সেপ্টেম্বর থেকে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-০৮-২০২৫
নিউইয়র্কের স্কুলে সেপ্টেম্বর থেকে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ চ্যান্সেলর আভিলেস-রামোস ও গভর্নর হোকুল মোবাইল মোবাইল ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস নীতিমালা বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করেন


আসন্ন সেপ্টেম্বর থেকে নিউইয়র্ক সিটির সব পাবলিক স্কুলে শিক্ষার্থীদের জন্য মোবাইল ফোন ও অন্যান্য ইন্টারনেট-সক্ষম ডিভাইস ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে যাচ্ছে। দেশের সবচেয়ে বড় স্কুল ডিস্ট্রিক্টে এ নতুন নীতিমালা শিক্ষার্থীদের মনোযোগ ধরে রাখা এবং প্রযুক্তিগত বিভ্রান্তি হ্রাস করার শিক্ষার্থীদের মনোযোগ ধরে রাখা এবং প্রযুক্তিগত বিভ্রান্তি হ্রাস করার লক্ষ্য নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে এ কার্যকর নিষেধাজ্ঞা হবে।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, শিক্ষার্থীরা স্কুলে প্রবেশের পর থেকে ছুটি পর্যন্ত অর্থাৎ বেল-টু-বেল সময়ে মোবাইল ফোন, স্মার্টওয়াচ, এয়ারপড, ট্যাবলেট, ব্যক্তিগত ল্যাপটপসহ যে কোনো ইন্টারনেট সক্ষম ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবে না। এ নিষেধাজ্ঞা কেবল ক্লাসে নয়, বরং টিফিন, স্টাডি হল, বিরতি এবং স্কুল প্রাঙ্গণের যে কোনো স্থানে প্রযোজ্য হবে। তবে স্কুলে যাওয়া ও আসার পথে বিশেষ করে গণপরিবহন ব্যবহারের সময় শিক্ষার্থীরা ফোন ব্যবহার করতে পারবে। এ সিদ্ধান্ত এসেছে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের একটি নতুন আইন অনুসারে, যা মে মাসে গভর্নর ক্যাথি হোকুলের নেতৃত্বে পাস হয়। শিক্ষক ইউনিয়নের দাবি ছিল, ফোন শিক্ষার্থীদের মনোযোগ নষ্ট করছে এবং এটি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সে পরিপ্রেক্ষিতে এ নীতিমালা গৃহীত হয়েছে।

স্কুলগুলোকে নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী ফোন নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া বেছে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিছু স্কুল ইতোমধ্যে ইয়ন্দর নামের একটি ম্যাগনেটিক পাউচ ব্যবহার করছে, যেখানে শিক্ষার্থীরা ফোন বন্ধ করে রাখে এবং দিনের শেষে একটি নির্দিষ্ট ডিভাইসের সাহায্যে তা খুলে নিতে পারে। অন্যকিছু স্কুল ফোন সংগ্রহ করে সুরক্ষিত স্থানে (যেমন লকার বা ড্রপবক্সে) রাখবে। ব্যাগে বন্ধ ফোন রেখে দেওয়া বা ক্লাসে ঢোকার আগে নিয়ে আবার বের হওয়ার সময় ফেরত দেওয়ার পদ্ধতি নিষিদ্ধ।

অনেক অভিভাবক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সন্তানদের সঙ্গে জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ নিয়ে। তবে রাজ্য আইন অনুযায়ী, প্রতিটি স্কুলকে এমন একটি ব্যবস্থা রাখতে হবে যেখানে অভিভাবকরা জরুরি পরিস্থিতিতে স্কুল অফিসের মাধ্যমে সন্তানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। স্কুলগুলো শিক্ষাবর্ষের শুরুতে অভিভাবকদের লিখিতভাবে এই যোগাযোগ পদ্ধতি জানাবে।

শিক্ষার্থীরা যদি এই নিয়ম ভঙ্গ করে, তাহলে প্রথমবার কোনো ধরনের সাসপেনশন দেওয়া হবে না। নিয়মিতভাবে ভঙ্গ করলে অভিভাবক ডেকে বৈঠক, সতর্কতা প্রদান বা ক্লাস থেকে সাময়িকভাবে সরিয়ে দেওয়ার মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাজ্য সরকার মোবাইল-সম্পর্কিত শৃঙ্খলাজনিত বিষয়গুলো নিয়ে প্রতি বছর তথ্য সংগ্রহ করবে এবং তা বিশ্লেষণ করে কোনো পক্ষপাতিত্ব হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

স্বাস্থ্যগত, বিশেষ চাহিদা, শিক্ষাগত উদ্দেশ্য বা পারিবারিক দায়িত্ব পালন (যেমন ছোট ভাই বা বোনকে স্কুল থেকে আনা) ইত্যাদি কারণে শিক্ষার্থীরা বিশেষ অনুমতি নিয়ে ফোন ব্যবহার করতে পারবে। এজন্য প্রমাণস্বরূপ ডকুমেন্ট এবং কর্তৃপক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন হবে। যদি কোনো শিক্ষার্থীর ফোন হারিয়ে যায়, চুরি হয় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে স্কুল কর্তৃপক্ষকে অভিভাবককে তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে হবে এবং পুলিশে অভিযোগ জানাতে হবে। অভিভাবকরা চাইলে সিটি কন্ট্রোলার অফিসে ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে পারবেন।

এ নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য প্রতিটি স্কুলকে প্রতি শিক্ষার্থীর জন্য এককালীন ২৫ দশমিক ৯০ ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা মূলত ফোন পাউচ, লকার বা অন্যান্য স্টোরেজ ব্যবস্থা তৈরিতে ব্যয় হবে।নতুন এই নীতিমালা নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও শিক্ষা কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এটি শিক্ষার পরিবেশ আরো উন্নত করবে এবং শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক হবে।

শেয়ার করুন