টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবটের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে টেক্সাসের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের এখন থেকে জিজ্ঞাসা করা হবে তারা যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে অবস্থান করছেন কিনা। এ নির্দেশনা অনুযায়ী, যারা বৈধ নয়, তাদের চিকিৎসার খরচ হাসপাতালগুলোকে হিসাব রাখতে হবে। অ্যাবটের মতে, এ পদক্ষেপটি টেক্সাসের নাগরিকদের ওপর চিকিৎসা ব্যয়ের বোঝা কমানোর উদ্দেশ্যে ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে পুনরুদ্ধার করার জন্য করা হয়েছে। তবে এই ধরনের প্রশ্ন অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করতে পারে, যা তাদের জরুরি চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। যদিও রোগীদের অধিকার রয়েছে এ প্রশ্নের উত্তর না দেওয়ার এবং হাসপাতালের কর্মীদের বলা বাধ্যতামূলক যে, উত্তর না দিলে তাদের চিকিৎসায় কোনো প্রভাব পড়বে না। অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে, এ প্রশ্ন অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতির পরিবেশ তৈরি করতে পারে এবং তাদের জরুরি চিকিৎসা নিতে নিরুৎসাহিত করতে পারে।
অ্যাবটের নির্বাহী আদেশ অনুসারে, হাসপাতালগুলোকে রোগীদের জিজ্ঞাসা করতে হবে তারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক কি না এবং বৈধভাবে অবস্থান করছেন কি না। রোগীরা এ তথ্য দিতে বাধ্য নন এবং হাসপাতালের কর্মীদের জানাতে হবে যে, তাদের উত্তর দেওয়া বা না দেওয়া তাদের চিকিৎসায় কোনো প্রভাব ফেলবে না, যা ফেডারেল আইনে নিশ্চিত করা হয়েছে। হাসপাতালগুলো মার্চ ২০২৫-এর আগে রোগীদের কাছ থাকে প্রাপ্ত তথ্যের কোনো প্রতিবেদন জমা দিতে বাধ্য নয়। টেক্সাস স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের তৈরি করা তথ্য সারণীর খসড়ায় রোগীদের নাম বা ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণের জন্য কোনো ক্ষেত্র নেই। চিকিৎসা প্রদানকারীরা ইনপেশেন্ট এবং জরুরি চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের ভিজিটের হিসাব রাখবে এবং তারা যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে অবস্থান করছেন কি না, তা রিপোর্ট করবে। প্রতিবেদনগুলোতে মেডিকেইড বা শিশুদের স্বাস্থ্য বীমা কর্মসূচি (সিএইচআইপি) এর আওতায় থাকা রোগীদের খরচ এবং এসব বীমার আওতার বাইরে থাকা রোগীদের খরচও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
ইমিগ্রেশন আইন বিশ্লেষক কারমেন রো বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপে অনেকে জরুরি চিকিৎসাসেবা নিতে সাহস করবে না। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে নির্দেশনায় স্পষ্টভাবে বলা নেই যে হাসপাতালের কর্মীরা কীভাবে রোগীদের কাছে এই প্রশ্নগুলো করবে, তবে রোগীদের অধিকার রয়েছে কোনো প্রশ্নের উত্তর না দেওয়ার। তিনি আরো বলেন, রোগীদের অধিকার রয়েছে এবং আইনের আওতায় যে কোনো ব্যক্তির, বৈধতা নির্বিশেষে, জরুরি চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। নীরব থাকার অধিকার, যা পঞ্চম সংশোধনীতে নিশ্চিত করা হয়েছে, রোগীদের অধিকার সুরক্ষিত করে। টেক্সাস হাসপাতাল অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র কেরি উইলিয়ামস জানান, এই পরিবর্তন রোগীদের চিকিৎসা স্তরে প্রভাব ফেলবে না। টেক্সাসের হাসপাতালগুলো এখনো প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য একটি নিরাপদ স্থান।
টেক্সাসের এই নতুন নির্দেশনা অভিবাসনসংক্রান্ত প্রশ্ন তুলতে বাধ্য করছে, যা রোগীদের চিকিৎসাসেবায় প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন। যদিও রোগীদের এই প্রশ্নের উত্তর না দেওয়ার অধিকার রয়েছে এবং হাসপাতালগুলোর চিকিৎসার স্তরে কোনো পরিবর্তন আসবে না, তবু অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে এটি ভীতির পরিবেশ তৈরি করতে পারে, যা তাদের জরুরি চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে। স্বাস্থ্যসেবা সবার অধিকার হওয়া উচিত, তাই এই নির্দেশনার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কী হবে এবং কীভাবে তা পরিচালনা করা হবে, সেটি সময়ই বলে দেবে।