৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৯:২১:০৬ পূর্বাহ্ন


বিএনপি সহ ৫ দলের আপত্তি, তবু পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের সিদ্ধান্ত
দেশ অনলাইন
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৮-২০২৫
বিএনপি সহ ৫ দলের আপত্তি, তবু পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের সিদ্ধান্ত


বিএনপিসহ পাঁচটি দল  আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) দিলেও বেশির ভাগ দলের মত অনুযায়ী সংসদে ১০০ আসনের উচ্চকক্ষ গঠনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে (পিআর পদ্ধতি) রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন হবে। পাশাপাশি সংবিধান সংশোধনে সংসদের উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন লাগবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এতেও আপত্তি জানিয়ে বিএনপি বলেছে, সংবিধান সংশোধনের এখতিয়ার উচ্চকক্ষকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত তারা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। বৃহস্পতিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের শেষ দিনের সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপ শেষে রাতে কমিশন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, নোট অব ডিসেন্টসহ ১৯টি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। 

সংলাপে অংশ নেওয়া ৩০ দলের ২২টি পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠনে একমত হয়। এ ছাড়া ২১টি দল একমত হওয়ায় কমিশন সিদ্ধান্ত জানায়, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, বিরোধীদলীয় ডেপুটি স্পিকার এবং তৃতীয় বৃহত্তম দলের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত পাঁচ সদস্যের বাছাই কমিটি নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মনোনয়নে ব্যর্থ হলে র‌্যাংক চয়েজে ভোট হবে। ভোটে কমিটির সদস্য হবেন দুই বিচারপতি। এসব সিদ্ধান্তেও নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে বিএনপিসহ পাঁচটি দল। তারা বলেছে, কমিটি প্রধান উপদেষ্টা বাছাই করতে না পারলে কী হবে– এ সিদ্ধান্ত হবে আগামী সংসদে।
২২টি দল একমত হওয়ায় সরকারি কর্ম কমিশন-পিএসসি, দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।  তবে বিএনপি আপত্তি দিয়ে রেখেছে। কমিশন প্রস্তাব করেছে, নাগরিকের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন করা হলে মামলা করা যাবে সরকারের বিরুদ্ধে। বিএনপিসহ অধিকাংশ দল এটি সমর্থন করেছে। 

পিআর, সংবিধান সংশোধনে বিএনপির আপত্তি
পিআর ও সংবিধান সংশোধন বিধানে আপত্তির বিষয়ে সংলাপের বিরতিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, উচ্চকক্ষ আইন পর্যালোচনা ও সুপারিশের কাজ করবে; কিন্তু কোনোভাবেই সংবিধান সংশোধনের এখতিয়ার পাবে না। সংবিধান সংশোধনের এখতিয়ার কেবল সার্বভৌম জনগণের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের হাতে থাকা উচিত।
সংবিধান সংশোধনে সংসদের উভয় কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থনের বিধান দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করার কথা জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, উচ্চকক্ষের সদস্যরা সরাসরি নির্বাচিত না হওয়ায় তাদের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধনের চিন্তা গণতান্ত্রিক চেতনাবিরোধী।

তাহলে আইন পাসের জন্য কেন উচ্চকক্ষে পাঠানো হবে– এ প্রশ্নে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিএনপি প্রস্তাব করেছে, উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষে যৌথভাবে পাস হওয়া আইনের মধ্য দিয়ে একটি অংশীদারিত্বের প্রক্রিয়া গড়ে উঠুক। 

বিএনপির এ নেতা বলেন, আমরা দেখছি, কিছু পক্ষ সংবিধান সংশোধনকে কঠিনতর করতে পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে অনির্বাচিত বা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে উচ্চকক্ষে ক্ষমতা 
কেন্দ্রীভূত করতে চাইছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়।

সালাহউদ্দিন আহমেদের এ বক্তব্য নাকচ করে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, সংবিধান বদলে ফেলার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ তৈরি ঠেকাতে সংসদের উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন লাগবে। উচ্চকক্ষের সদস্যরা দলগুলোর মনোনয়নে আসবেন। তারা সমান নির্বাচিত। 

একই অভিমত দেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, গণঅধিকার সভাপতি নুরুল হক নুর, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আলী আশরাফ আকন। তারা বলেন, সংবিধান সংশোধনে ভূমিকা না থাকলে উচ্চকক্ষ অর্থহীন। সংবিধান সুরক্ষার জন্যই পিআর পদ্ধতির উচ্চকক্ষ।

এর জবাবে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ৮, ৪৮, ৫৬, ৫৮সহ সংবিধানের বিশেষ কিছু অনুচ্ছেদ সংশোধনে গণভোট লাগবে। সুতরাং সংবিধানের সুরক্ষা নিয়ে আর অনিশ্চয়তা নেই। 

পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠনের পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনায় উত্তেজনা ছড়ায়। এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিনের উদ্দেশে বিএনপির সমমনা জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, ‘২০২৩ সালের আগে কোথায় ছিলেন?’ এ সময় সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা পৃথিবীর কোথাও উচ্চকক্ষের হাতে থাকে না। 

এর জবাবে জাভেদ রাসিন বলেন, ভোটের সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষ গঠিত হলে তা জনগণের প্রতিনিধিত্বের প্রতিফলন হয়। 

এ সময় এহসানুল হুদা মাইক ছাড়াই জাভেদ রাসিনকে কিছু বলেন। তখন এনসিপি সদস্য সচিব  আখতার বলতে থাকেন, ‘উনার ক্ষমা চাওয়া উচিত।’ পরে সালাহউদ্দিনের কথায় এহসানুল হুদা দুঃখ প্রকাশ করেন। 

রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বাড়ছে
এমপিদের গোপন ভোটে  রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন ছাড়া সব দলের ঐকমত্য হয়েছে। রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সব দল একমত হলেও, কতটা ক্ষমতা বাড়বে– এ নিয়ে বিভিন্ন দল নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে। 

বিএনপি রাজি হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ছাড়াই রাষ্ট্রপতি মানবাধিকার কমিশন, তথ্য কমিশন, প্রেস কাউন্সিল এবং আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিয়োগ দিতে পারবেন। তবে রাষ্ট্রপতিকে  অ্যাটর্নি জেনারেল, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য, বিটিআরসির চেয়ারম্যান ও সদস্য, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রধান, ডিজিএফআই এবং এনএসআইর মহাপরিচালক পদে নিয়াগ দেওয়ার ক্ষমতা দিতে রাজি হয়নি বিএনপিসহ কয়েকটি দল। 

জামায়াতে ইসলামীও রাষ্ট্রপতির কাছে অ্যাটর্নি জেনারেল, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রধান, ডিজিএফআই এবং এনএসআইর মহাপরিচালক পদে নিয়োগের ক্ষমতা ছেড়ে দিতে রাজি হয়নি। 

সনদ ও মূলনীতি বিতর্ক
সংবিধানের মূলনীতিতে সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার যুক্ত করতে একমত হয়েছে বিএনপি, জামায়াতসহ অধিকাংশ দল। বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলনসহ বেশির ভাগ দল মূলনীতিতে ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনর্বহালের জন্য নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে। 

বাহাত্তরের চার মূলনীতি বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে সংলাপ বর্জন করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি, বাংলাদেশ জাসদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এবং বাসদ মার্কসবাদী। রাতে এই দলগুলো জানিয়েছ, তারা জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করবে কি না তা পরে জানাবে। গণফোরাম, মার্কসবাদী বাসদ, জেএসডিও নোট অব ডিসেন্ট দেয়। 

ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপি, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ ২১টি দল বলেছে, ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’ এর আইনি ভিত্তি থাকতে হবে। জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপিসহ কয়েকটি দল বলেছে, আইনি ভিত্তি ছাড়া সনদে সই করবে না। জামায়াত জানিয়েছে, জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি না দিলে সরকার ও কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করবে তারা।  

আইনি ভিত্তি দেওয়ার বিরোধিতা করে বিএনপি জানিয়েছে, সব রাজনৈতিক দলের স্বাক্ষর এবং দুই বছরের মধ্যে সংস্কারের সুপারিশ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার থাকায় সনদের মর্যাদা আইনের ঊর্ধ্বে। জুলাই সনদ জনগণের সার্বভৌম অভিপ্রায়ের দলিল। 

আপত্তিসহ ঐকমত্য 
বিএনপি আপত্তি করলেও গতকালের সংলাপে কমিশন সিদ্ধান্ত দেয়, পিএসসি, দুদক, সিএজি ও ন্যায়পালের নিয়োগ পদ্ধতি সংবিধানে থাকবে। এতে নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ নিয়োগ আইন শক্ত করার পক্ষে মত দেন। নিয়োগ কমিটির বিধান সংবিধানে যুক্ত করার বিরোধিতা করেন তিনি। জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট, এনডিএম ও আমজনতার দলও এ বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে। 

বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র গণঅধিকার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, জেএসডি, নাগরিক ঐক্য অবশ্য নিয়োগ কমিটি সংবিধানে যুক্ত করার বিষয়ে একমত হয়েছে। 
ছয় দিনের সংলাপেও উচ্চকক্ষ গঠন পদ্ধতি নিয়ে ঐকমত্য না হওয়ায় কমিশনকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়। গতকাল কমিশন জানায়, নির্বাচনের আগেই উচ্চকক্ষের মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা দেবে দলগুলো। পিআর পদ্ধতিতে গঠিত উচ্চকক্ষের আইন প্রণয়নের ক্ষমতা থাকবে না। তবে অর্থবিল বাদে বাকি সব আইন সংসদের উভয় কক্ষে পেশ করা হবে। উচ্চকক্ষ কোনো বিল এক মাসের বেশি আটকে রাখতে পারবে না। সেই বিল নিম্নকক্ষে পাস হলে আইন হিসেবে গণ্য হবে। 

বিএনপি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট, এনডিএম ও এলডিপি নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে উচ্চকক্ষের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে মতামত দেয়, নিম্নকক্ষের প্রাপ্ত আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন হবে। সিপিবি, বাসদ এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাবেও রাজি নয়।

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না দিলে মামলা
জামায়াত নেতা ডা. আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জানান, জুলাই সনদের আইনি ‌ভি‌ত্তি না দিলে অন্তর্বর্তী সরকার ও ঐকমত্য কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করবে জামায়াত। তারা মনে করে, সনদের বাস্তবায়ন প্রতিশ্রুতির ওপর নির্ভর করলে হবে না। আইনি ভিত্তি না থাকলে এই সনদ মূল্যহীন। সে জন্য তারা মামলা করবে। 

ডা. তাহের বলেন, এই সরকারের মেয়াদেই এটি কার্যকর করতে হবে। কাল থেকেই তা করা সম্ভব। বিএনপির নোট অব ডিসেন্ট প্রসঙ্গে জামায়াত নেতা ডা. তাহের বলেন, ভিন্নমত গণতন্ত্রের অংশ। একজন ‘না’ বলতেই পারেন। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠতাই গ্রহণযোগ্যতা পায়।

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির দাবি নাকচ করে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জনগণের সার্বভৌম এখতিয়ারে সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছে বিএনপি। এর চেয়ে বড় জাতীয় সম্মতি আর নেই, যা আইনের ঊর্ধ্বে। সনদের প্রস্তাব আছে– সরকার গঠনের দুই বছরের মধ্যে সনদের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে হবে। বিএনপি এতে সম্পূর্ণ একমত। 

সনদকে আইনি ভিত্তি না দেওয়ার পক্ষে যুক্তি দিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, শুধু কমিশন নয়, সব দল এতে সই করবে, যা জনগণের সার্বভৌম অভিপ্রায়, যা আইনের চেয়েও বড়, যা ‘লেজিটিমেট এক্সপেকটেশন অব দ্য পিপল’ (জনগণের অভিপ্রায়)। জুলাই ঘোষণাপত্রেরও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেবে বিএনপি। সংবিধানের চতুর্থ তপশিলে যুক্ত হবে জুলাই ঘোষণাপত্র। 

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আলোচনা
প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন ঐকমত্য কমিশন আগেই জানিয়েছিল, ৩১ জুলাই চূড়ান্ত হবে সনদের খসড়া। এতে বলা হবে, কী কী সংস্কার হবে; সংস্কারের সুপারিশগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন হবে। খসড়ায় বলা হয়েছে, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেগুলো আগামী নির্বাচনে গঠিত সরকার দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে। 

বিএনপি এতে একমত হলেও জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদসহ অন্তত ২০টি দল অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে ভোটের আগে সংস্কারের বাস্তবায়ন চায়। এ অবস্থায় বুধবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে ঐকমত্য কমিশন। 

সংলাপের শুরুতে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, সনদ বাস্তবায়নে প্রয়োজনে দলগুলোর সঙ্গে আবার আলোচনা হবে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে আলী রীয়াজ বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার সমাপ্তি ঘটেছে। ছয়টি কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশের ওপর দুই দফায় আলোচনা হয়েছে। প্রথম দফায় ছয়টিতে একমত হয় দলগুলো। দ্বিতীয় দফার জন্য ১৯টি সংস্কার প্রস্তাবকে মৌলিক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কিছু নোট অব ডিসেন্টসহ অধিকাংশ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। 

আলী রিয়াজ বলেন, আজ (গতকাল) বেশ কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, আগামীকালের (আজ) মধ্যে দলগুলোকে বিস্তারিত জানানো হবে। কয়েকদিনের মধ্যে জাতীয় সনদের পূর্ণাঙ্গ রূপ প্রস্তুত করে রাজনৈতিক দলগুলোকে দেওয়া হবে। কমিশন মনে করে, সনদ বাস্তবায়নের জন্য সুস্পষ্ট পথনির্দেশ প্রয়োজন।

শেয়ার করুন