৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ৬:২২:০১ অপরাহ্ন


ফেডারেল তহবিল কাটছাঁট
নিউইয়র্কের বাজেটে ৭৫০ মিলিয়ন ডলারের ঘাটতি
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-০৭-২০২৫
নিউইয়র্কের বাজেটে ৭৫০ মিলিয়ন ডলারের ঘাটতি


ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে পাশ হওয়া ফেডারেল বাজেটে মেডিকেইড সহ সামাজিক সেবা খাতে অর্থায়নে পরিবর্তনের কারণে নিউইয়র্ক স্টেটের বাজেটে চলতি অর্থবছরে ৭৫০ মিলিয়ন ডলারের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। স্টেটের বাজেট পরিচালক ব্লেক ওয়াশিংটন গত ১০ জুলাই এই তথ্য জানান। ব্লেক ওয়াশিংটন বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বাক্ষরিত নতুন ফেডারেল ব্যয় বিলের কারণে শুধু এই বছরেই নয়, বরং আগামী অর্থবছরে ঘাটতির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারে। এছাড়া, বাজেট ঘাটতির আরেকটি বড় কারণ হলো স্টেট সরকারের পরিকল্পনায় থাকা একটি ট্যাক্স লুপহোল বন্ধ হয়ে যাওয়া। এর মাধ্যমে নিউইয়র্ক স্টেট পরবর্তী দুই বছরে প্রায় ৩.৭ বিলিয়ন ডলার আয়ের আশা করেছিল। এই লুপহোলটি মূলত ম্যানেজড কেয়ার অর্গানাইজেশনসের ওপর একটি বিশেষ কর আরোপের কৌশলের মাধ্যমে রাজস্ব বৃদ্ধির পরিকল্পনা ছিল।

এই কৌশলের আওতায়, নিউইয়র্ক স্টেট ম্যানেজড কেয়ার অর্গানাইজেশনসের ওপর কর বসাতো এবং পরে সেই অর্থ মেডিকেইড কর্মসূচির আওতায় আবার তাদের ফেরত দিতো। এর মাধ্যমে স্টেট সরকার ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে অতিরিক্ত মেডিকেইড ম্যাচিং ফান্ড সংগ্রহ করতে পারতো। এই পদ্ধতি কার্যত একধরনের আর্থিক কৌশল হিসেবে বিবেচিত হতো, যাতে রাজ্য সরকার জনসাধারণের ওপর কর না বাড়িয়ে রাজস্ব ঘাটতি পূরণে সক্ষম হতো। তবে সম্প্রতি ফেডারেল সরকার এই ধরনের ট্যাক্স ব্যবস্থাকে বিধিবহির্ভূত ঘোষণা করে নতুন নিয়ম চালু করেছে, ফলে এই লুপহোল কেবল চলতি অর্থবছরের জন্যই কার্যকর থাকবে। আগামী বছরগুলোতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা আর সম্ভব হবে না। এর ফলে নিউইয়র্ক স্টেট একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়ের উৎস হারাবে এবং বাজেট ঘাটতির বোঝা আরো বাড়বে।

ব্লেক ওয়াশিংটন বলেন, আমি গত ২০ বছর ধরে এখানে কাজ করছি। ২০১০ সালের মহামন্দার সময় ২০ বিলিয়ন ডলারের বাজেট ঘাটতি মোকাবিলা করেছিলাম। সেটা ছিল অত্যন্ত কঠিন। কোভিডের সময়ও আমরা বড় ঘাটতির মুখে পড়েছিলাম। এবারও আমরা পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনে আইন অনুযায়ী সেবা বজায় রাখার চেষ্টা করবো, তবে ফেডারেল কাটছাঁটের হুমকির মধ্যে এটি আরো কঠিন হয়ে পড়ছে।

গভর্নর ক্যাথি হোকুল কর বাড়াবেন কি না, সে প্রশ্নে ওয়াশিংটন সরাসরি উত্তর দেননি। যদিও হোকুলের মেয়াদকালে আইনপ্রণেতারা বারবার ধনীদের ওপর কর বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছেন, তবে গভর্নর হোকুল তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তার অবস্থান হচ্ছে, কর বাড়ালে ব্যবসায়ী মহলের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হতে পারে এবং এর ফলে রাজ্য থেকে জনসংখ্যা হ্রাস পেতে পারে।

ওয়াশিংটন আরো বলেন, এই ঘাটতির সমাধান শুধু কর বাড়িয়ে করা সম্ভব নয়। এজন্য সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন। আমাদের একা কর বাড়িয়ে এই ঘাটতি পূরণ সম্ভব নয়। তিনি জানান, চলতি বছরের জন্য যেসব পরিবারকে দেওয়া মূল্যস্ফীতি ফেরত চেক বিতরণ করা হবে, সে কর্মসূচি বহাল থাকবে, যদিও এতে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের ব্যয় হবে স্টেটের।

বাজেট ঘাটতি মোকাবিলায় স্টেট সরকারকে এ বছর একটি বিশেষ অধিবেশন ডাকার সম্ভাবনা রয়েছে, যাতে বাজেটে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা যায়। তবে ওয়াশিংটনের আশা, বিষয়টি বিশেষ অধিবেশন ছাড়াই কিছু প্রোগ্রাম সংস্কারের মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে। তিনি বলেন, আমার মনে হয়, এই ভবনের সবাই জানে যে বাজেটের বিভিন্ন প্রোগ্রামে কিছু পরিবর্তন আসবে। সেটা মেডিকেইড হোক বা অন্য কোনো সামাজিক সেবা, আমরা একসঙ্গে বসে এর সমাধান খুঁজে বের করবো। এই বাজেট ঘাটতির প্রভাব নিউইয়র্কের সামাজিক সেবাখাতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন