নিউ ইয়র্কের বৃহত্তম হোম কেয়ার প্রোগ্রাম সিডিপ্যাপ (সিডিপ্যাপ)-এর নতুন পরিচালনাকারী সংস্থা পাবলিক পার্টনারশিপস এলএলসি (পিপিএল)-এর বিরুদ্ধে বড় ধরনের আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে লিগ্যাল এইড সোসাইটি। গত ২৮ এপ্রিল নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট ফেডারেল কোর্টে দায়ের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, পিপিএলের সময় রক্ষণ অ্যাপ ‘টাইম ৪ কেয়ার’-এর কারিগরি ত্রুটির কারণে হাজার হাজার হোম কেয়ার কর্মী সময়মতো বেতন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। পিপিএল বর্তমানে সিডিপ্যাপ প্রোগ্রামের অধীনে প্রায় ২.৫ লক্ষ রোগী ও তদারকি কর্মীদের প্রশাসনিক ও বেতন সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করছে। অতীতে অনেকগুলো ’ফিসকাল ইন্টারমিডিয়ারি’ এই কাজ করলেও, খরচ ও জালিয়াতি রোধের যুক্তিতে গভর্নর ক্যাথি হোকুল শুধুমাত্র একটি কোম্পানিকে নিয়োগ দেন।
তবে এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে পুরোপুরি কার্যকর হওয়ার পর থেকেই পিপিএলের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ ও মামলা দায়ের হচ্ছে। লিগ্যাল এইড সোসাইটি মতে, হাজার হাজার কর্মী অ্যাপে প্রবেশ করতে না পারা, সময়মতো কাজ রেকর্ড করতে না পারা এবং ভুলভাবে বেতন প্রক্রিয়াকরণজনিত সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। এ অবস্থাকে “একটি সম্পূর্ণ ব্যর্থ অবকাঠামো” হিসেবে উল্লেখ করেছে মামলার নথিপত্র। একাধিক হোম কেয়ার কর্মী জানিয়েছেন যে তারা তাদের সময় রক্ষণ অ্যাপ ব্যবহার করতে পারছেন না এবং যে সময় তারা কাজ করছেন, সেই সময়ের হিসাবও সঠিকভাবে রেকর্ড হচ্ছে না। এতে তাদের বেতন নিয়মিতভাবে কম পরিমাণে বা কখনও কখনও সম্পূর্ণরূপে জমা হচ্ছে না। এর ফলে কর্মীরা তাদের মৌলিক প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে সমস্যায় পড়ছেন। কিছু কর্মী তাদের দৈনন্দিন খরচ চালাতে, যেমন মুদি কেনাকাটা বা গ্যাস এবং বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে অক্ষম হয়ে পড়েছেন।
পিপিএলের প্রেসিডেন্ট মারিয়া পেরিন ও রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর সাম্প্রতিক এক ঘোষণায় জানিয়েছেন, বর্তমানে ভুক্তভোগী রোগী ও কর্মীদের জন্য নাম নিবন্ধনের সময়সীমা এক মাস পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগের আদালতের রুলিং অনুসারে, এখন ভোক্তারা ১৫ মে এবং সহায়তাকারীরা ৬ জুন পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবেন। অন্যদিকে, নিউ ইয়র্কের ওয়েস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট ফেডারেল কোর্টেও আরেকটি মামলা দায়ের হয়েছে যেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, পিপিএল শ্রম আইন ভঙ্গ করেছে-যেমন ন্যূনতম মজুরি না দেওয়া, ওভারটাইম ও বোনাস বকেয়া রাখা এবং বেতনের সময়ে বিলম্ব ঘটানো। এই মামলায় পিপিএলের বিরুদ্ধে অব্যাহত শ্রমিক দুর্ব্যবহার এবং সময়মতো বেতন প্রদান না করার অভিযোগ উঠেছে।
লিগ্যাল এইড সোসাইটি মামলাটিকে ক্লাস অ্যাকশন হিসেবে বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে, যা হাজার হাজার কর্মীকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। প্রতিষ্ঠানটি দাবি করছে, তাদের কাছে থাকা সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী, ব্যাপকসংখ্যক কর্মী এসব সমস্যার শিকার হয়েছেন। কর্মীরা বলছেন, “আমি ৪৮ ঘণ্টা কাজ করে মাত্র ১৬৮ ডলার পেয়েছি, যা আমাকে জীবনযাপন করতে সাহায্য করছে না,” বলেন ডোমিনিকান অভিবাসী কর্মী আমারিলি সেলেদোনিও। তার মতে, পিপিএল-এর অ্যাপের ত্রুটির কারণে শ্রমিকদের বেতন ঠিকভাবে হিসাব করা হচ্ছে না, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনকে সংকটে ফেলছে।