১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার, ০৪:১২:৩০ পূর্বাহ্ন


মাদার মসজিদ অব আমেরিকা : আমেরিকায় ইসলামের প্রথম পদচিহ্ন
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৩-২০২৫
মাদার মসজিদ অব আমেরিকা : আমেরিকায় ইসলামের প্রথম পদচিহ্ন ১৯৯০ সালে মসজিদ ভবন পুনর্নির্মাণের পর মাদার মসজিদ অব আমেরিকা হিসেবে পরিচিত মদিনা মসজিদ। ছবি হিস্ট্রি চ্যানেলের সৌজন্যে


যুক্তরাষ্ট্রে ইসলামের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় রচনা করে আইওয়া অঙ্গরাজ্যের সিডার র‍্যাপিডসে অবস্থিত মাদিনা মসজিদ, যা ‘মাদার মসজিদ অব আমেরিকা’ নামে পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানদের উপস্থিতি শতাব্দী প্রাচীন হলেও, প্রথম স্থায়ীভাবে নির্মিত মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৩৪ সালে আইওয়া অঙ্গরাজ্যের সিডার র‍্যাপিডস শহরে। এই মসজিদটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম স্থায়ী মসজিদ হিসেবে গণ্য হয়। এটি শুধু নামাজের স্থান নয় বরং তখনকার অভিবাসী মুসলমানদের ধর্মীয়, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ঐক্যের প্রতীক হয়ে ওঠে। আজও এই মসজিদ ইসলামের প্রচার ও মুসলিম ঐতিহ্যের ধারক-বাহক হিসেবে সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু একটি উপাসনালয়ই নয়, বরং দেশটিতে ইসলামের বিকাশ ও মুসলমানদের সংগ্রামের এক জীবন্ত ইতিহাস বহন করে।

যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানদের আগমন ঘটে অনেক আগে, মূলত ১৭০০ ও ১৮০০ শতকে আফ্রিকা থেকে আনা দাসদের মাধ্যমে। ধারণা করা হয়, তখনকার দাসদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমান ছিলেন, যদিও তাদের ধর্মচর্চার স্বাধীনতা সীমিত ছিল। পরবর্তীতে, ১৯০০ শতকের শেষ ও ২০০০ শতকের শুরুতে লেবানন, সিরিয়া, তুরস্ক এবং দক্ষিণ এশিয়া থেকে মুসলিম অভিবাসীরা ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রে আসতে শুরু করেন। এই অভিবাসীরা মূলত মধ্য-পশ্চিমের শহরগুলোতে বসতি স্থাপন করেন, যার মধ্যে আইওয়ার সিডার র‍্যাপিডস অন্যতম ছিল। ১৯২০ ও ১৯৩০-এর দশকে এই মুসলিম অভিবাসীদের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। তবে তাদের নামাজ আদায়ের জন্য কোনো স্থায়ী মসজিদ ছিল না। তারা অস্থায়ীভাবে বিভিন্ন বাড়ি বা ভাড়া নেওয়া স্থানে নামাজ আদায় করতেন। এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে আইওয়ার স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায় একটি স্থায়ী মসজিদ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৩৪ সালে, সিডার র‍্যাপিডসে বসবাসরত সিরিয়া ও লেবানন থেকে আগত মুসলমানরা মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। তারা নিজেদের সঞ্চিত অর্থ এবং সম্প্রদায়ের অনুদান একত্রিত করে একটি জমি কেনেন এবং মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। মসজিদটি সম্পূর্ণরূপে মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের শ্রম ও ভালোবাসার ফসল ছিল। প্রধান প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে ছিলেন হাসান ইসমাইল গাবর, মোহাম্মদ ওমর, আলী কুদর, সেলিম রাশিদ, এবং ইব্রাহিম সাদ। তারা শুধু অর্থায়নই করেননি বরং নিজেরাই নির্মাণ কাজে অংশ নেন। ১৯৩৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মসজিদটির দরজা আনুষ্ঠানিকভাবে মুসল্লিদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম স্থায়ীভাবে নির্মিত মসজিদ, যা তখন ‘দ্য মোসলেম টেম্পল’ নামে পরিচিত ছিল। পরবর্তী সময়ে এটি ‘মাদার মসজিদ অব আমেরিকা’ নামে পরিচিতি পায়।

মসজিদের স্থাপত্য ও কাঠামো

মাদার মসজিদের স্থাপত্যশৈলী ছিল সরল এবং ব্যবহারিক। এটি ছিল একটি একতলা কাঠের ভবন, যার নকশায় স্থানীয় স্থাপত্যের সঙ্গে ইসলামী ঐতিহ্যের মেলবন্ধন ঘটানো হয়েছিল। ছোট একটি মিনার থাকলেও মসজিদটির আকার ছিল ছোট এবং স্থানীয়ভাবে সহজলভ্য উপকরণ দিয়ে নির্মিত। মসজিদের মূল নামাজ ঘরটি ছিল ছোট, যেখানে প্রায় ৫০-৭০ জন মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারতেন। নামাজ ঘর ছাড়াও মসজিদের পাশে একটি ছোট সামাজিক মিলনকেন্দ্র ছিল, যেখানে মুসলমানরা ধর্মীয় শিক্ষা, সামাজিক অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন। মসজিদটি শুধু ইবাদতের স্থান ছিল না; এটি মুসলিম সম্প্রদায়ের মিলনস্থল এবং তাদের ঐক্যের প্রতীক হয়ে ওঠে।

১৯৩০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানরা অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। ইসলামের প্রতি জনসাধারণের অজ্ঞতা, ধর্মীয় অবকাঠামোর অভাব এবং সামাজিক বৈষম্য ছিল তাদের নিত্যসঙ্গী। মুসলমানরা অনেক সময় কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হতেন এবং ইসলামি শিক্ষালাভের সুযোগ ছিল অত্যন্ত সীমিত। এই কঠিন বাস্তবতায় মাদার মসজিদ ছিল মুসলমানদের জন্য এক আশার আলো। এটি শুধু নামাজের স্থানই ছিল না, বরং ইসলামিক শিক্ষা, ধর্মীয় আলোচনা এবং সামাজিক সংহতির কেন্দ্র হিসেবে কাজ করত। মসজিদে শিশুদের কোরআন শিক্ষা দেওয়া হতো, ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা হতো এবং মুসলমানদের পারস্পরিক সহায়তার জন্য সভা আয়োজন করা হতো।

মসজিদের বর্তমান অবস্থা ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মসজিদটি মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রয়োজন মেটাতে ছোট হয়ে পড়ে। ১৯৭০ সালে, স্থানীয় মুসলমানরা একটি বড় মসজিদ নির্মাণ করেন। তবে পুরোনো মসজিদটি ঐতিহাসিক গুরুত্বের কারণে সংরক্ষিত হয়। ১৯৯০-এর দশকে মসজিদটি সংস্কার করা হয় এবং বর্তমানে এটি একটি ইসলামিক তথ্যকেন্দ্র ও জাদুঘর হিসেবে কাজ করছে। ১৯৯৬ সালে, মাদার মসজিদ অব আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল রেজিস্টার অব হিস্টোরিক প্লেসেস’-এ অন্তর্ভুক্ত হয়। এটি এখন শুধু একটি উপাসনালয় নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রে ইসলামের ইতিহাস ও মুসলিম সম্প্রদায়ের সংগ্রামের জীবন্ত সাক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এখানে ইসলামিক শিক্ষা, গবেষণা এবং নতুন প্রজন্মের জন্য সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

মাদার মসজিদ অব আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম অভিবাসীদের অধ্যবসায়, ঐক্য, এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার এক মাইলফলক। এটি সেই অভিবাসীদের পরিশ্রম ও আত্মত্যাগের প্রতীক, যারা ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে নিজেদের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। আজ যুক্তরাষ্ট্রে হাজার হাজার মসজিদ থাকলেও মাদার মসজিদ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সম্প্রদায়ের ঐক্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এই মসজিদ শুধু ইট-পাথরের একটি স্থাপনা নয়; এটি যুক্তরাষ্ট্রের ইসলামি ঐতিহ্যের প্রাণস্পন্দন, যা মুসলিম সম্প্রদায়ের অতীতের সংগ্রাম এবং ভবিষ্যতের অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।

মাদার মসজিদ অব আমেরিকা-আমেরিকায় প্রথম মুসলিম আগমনকারী মসলেম টেম্পল, যা বর্তমানে ‘মাদার মসজিদ অব আমেরিকা’ নামে পরিচিত, ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৪ সালে নির্মাণ শেষ হয়। এটি একটি সাধারণ, একতলা কাঠের ফ্রেমের প্রেইরি স্কুল হাউস স্টাইলের ভবন। এটি আমেরিকায় মুসলিমদের জন্য নির্মিত প্রথম উপাসনালয় হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি এখনো জীবিত মুসলিম উপাসনালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো। এ ভবনটি দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক প্রবণতা প্রদর্শন করে। প্রথমটি হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের ইতিহাস এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠিত ধর্ম হিসেবে বিকাশের সূচনা।

যদিও প্রায়ই বলা হয়, আমেরিকায় প্রথম মুসলিম আগমনকারী অভিবাসী মুসলিমরা ছিলেন না। প্রথম দলিলভূত মুসলিম ছিলেন এস্টেভানসিও একজন উত্তর আফ্রিকান মুসলিম বন্দি। তিনি ১৫২৭ সালে পানফিলো ডি নারভেজ অভিযানে অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। পরে তিনি আমেরিকার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল সম্পর্কিত আমাদের জ্ঞান পরিবর্তন করেন। পণ্ডিতরা বিশ্বাস করেন যে, মুসলিম অভিবাসন তিনটি পর্যায়ে ঘটেছিল : ১৮৭৮-১৯২৪, ১৯৫২, ১৯৬৫। এই তিনটি পর্যায়ে কেবল আরব মুসলিম অভিবাসীদের কথা বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের প্রথম প্রকৃত ঢেউ ছিল দাস হিসেবে আনা মানুষ। অনুমান করা হয় যে, আফ্রিকান দাসদের মধ্যে ১০ থেকে ৪০ শতাংশ মুসলিম ছিলেন, যা ৬ লাখ থেকে ১.২ মিলিয়ন ব্যক্তির সমান। যদিও আফ্রিকান মুসলিমরা নিজেদের স্থায়ী কমিউনিটি গড়ে তুলতে পারেননি, তাদের ইতিহাস এবং ঐতিহ্য ১৯০০ এবং ২০০০ শতাব্দীর শেষের দিকে ব্ল্যাক ন্যাশনালিস্ট আন্দোলনে জীবিত ছিল।

যুক্তরাষ্টের গৃহযুদ্ধের আগে মুসলিম অভিবাসন সীমিত ছিল, কারণ তখনকার আইনগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব সম্পর্কিত ছিল। ১৭৯০ সালের প্রাকৃতিকীকরণ আইন অনুযায়ী, শুধু মুক্ত সাদা ও ভালো চরিত্রসম্পন্ন ব্যক্তিরাই নাগরিক হতে পারতেন। এই আইনটি অন্ধকার ত্বকের আরব, ভারতীয় এবং আফ্রিকান মুসলিমদের অভিবাসন করতে বিরত রাখে। এটি ছিল কংগ্রেসের প্রথম অভিবাসন নীতি নির্ধারণের প্রচেষ্টা। ১৮৩০-এর দশকে, দেশব্যাপী ন্যাটিভিজম বা দেশীয় জাতীয়তাবাদ বাড়তে থাকে, যা অভ্যন্তরঢু সংখ্যালঘুদের ওপর তাদের অ-আমেরিকান বিশ্বাসের কারণে তীব্র বিরোধিতা ছিল। এই সময়কালে অনেক আইন ছিল যা বিশেষত ইসলাম ধর্মকে লক্ষ করেনি, বরং বিদেশি ও অ-সাদা জনগণের প্রতি ছিল।

১৮৭০-এর শেষের দিকে, মধ্যপ্রাচ্য থেকে অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রে আসতে শুরু করেন। তারা বর্তমানে যে অঞ্চলগুলোকে সিরিয়া, জর্ডান, প্যালেস্টাইন এবং লেবানন বলে চিহ্নিত করা হয়, সেখান থেকে আসা অভিবাসীরা তখন ‘তুর্ক’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তখন তুর্কদের এশিয়াটিক হিসেবে গণ্য করা হতো এবং তারা নাগরিকত্ব লাভের অযোগ্য ছিল। তাদের মধ্যে অনেকেই দরিদ্র শ্রমিক হিসেবে উন্নত অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। তবে তাদের মধ্যে বেশির ভাগই হতাশ হয়ে ফিরে গিয়ে নিজের দেশে চলে যান। যারা থেকে গিয়েছিলেন তারা খনি শ্রমিক, কারখানা কর্মী, দোকানদার, মুদি ব্যবসায়ী অথবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। যদিও তারা আরব অভিবাসীদের ১০ শতাংশেরও কম ছিলেন, তবুও বেশ কিছু আরব মুসলিম মিশিগান এবং অন্যান্য মধ্য-পশ্চিম অঞ্চলে বসবাস শুরু করেন। ১৯২৪ সাল পর্যন্ত আরব অভিবাসীদের প্রবাহ তুর্কি সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছিল।

ভাষা, রীতি, জাতি এবং ধর্মের বাধার কারণে, আরব মুসলিম অভিবাসীরা উপাসনালয়ের জন্য স্থান খুঁজছিলেন। ১৯১৪ সালে সিডার র‌্যাপিডসে মুসলিম জনগণের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৫। কিছুদিন পর, সেখানে একটি পূর্ণাঙ্গ মুসলিম কমিউনিটি গড়ে উঠেছিল। ১৯২০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে, সিডার র্যাপিডসে ৫০টিরও বেশি দোকান এবং মুদি দোকান ছিল। ১৯২৫ সালে, ‘দ্য রোজ অব ফ্রেটারনিটি লজ’ নামে একটি গ্রুপ একটি বিল্ডিং ভাড়া নিয়ে তা একটি অস্থায়ী মসজিদ হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেছিল। প্রতি শুক্রবার ২০ জন যুবক সেখানে সমবেত হতেন এবং নিজেদের একটি মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা শুরু করতেন। যুক্তরাষ্ট্র মহান মন্দার সময়ে প্রবেশ করতে চলেছিল, ঠিক তখনই তারা মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে শুরু করল। কমিউনিটি সদস্যরা নিজেদের অধিকাংশ নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেছিলেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৪ তারিখে এই মসজিদ প্রথমবারের জন্য উন্মুক্ত হয় এবং এটি একটি মসজিদ এবং সামাজিক কেন্দ্র হিসেবে কাজ শুরু করে।

এখানে সেবায় অংশগ্রহণ করা সম্প্রদায়টি যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের মর্যাদা পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আউসির পরিবার হল সিডার র‌্যাপিডস, আইওয়ার একটি মুসলিম পরিবার, যারা আমেরিকায় মুসলিমদের জন্য বিভিন্ন দাতব্য কাজ ও কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আউসির পরিবারের সদস্যরা মুসলিম সম্প্রদায়ের উন্নয়ন ও কল্যাণে অবদান রেখেছেন, বিশেষ করে সিডার র‌্যাপিডসে প্রথম মুসলিম জাতীয় কবরস্থান প্রতিষ্ঠায় তাদের দান গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

এই পরিবারটি মুসলিম কমিউনিটির জন্য বেশ কয়েকটি সামাজিক ও ধর্মীয় উদ্যোগে অংশগ্রহণ করেছে এবং তারা মুসলিমদের অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৪৮ সালে তাদের দানের ফলে সিডার র‌্যাপিডসে প্রথম মুসলিম জাতীয় কবরস্থান প্রতিষ্ঠিত হয়, যা গোটা মধ্য-পশ্চিম অঞ্চলের মুসলিমদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হয়ে ওঠে। এটি ছিল গোটা মধ্য-পশ্চিম অঞ্চলের জন্য শেষ সমাধিস্থল। পরবর্তী সময়ে আবদাল্লাহ ইনগ্রাম যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে ইসলাম ধর্মকে বৈধ ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি পেতে সাহায্য করেন। এর মাধ্যমে মুসলিমরা আর অবিশ্বাসী হিসেবে কবরিত হতেন না। সদস্যরা ছিলেন ফেডারেশন অব ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশনস অব দ্য ইউনাইটেড স্টেটস অ্যান্ড কানাডার প্রতিষ্ঠাতা সংগঠকদের মধ্যে।

১৯৭০ সালের মধ্যে কমিউনিটি ছোট্ট ভবনটি ছাড়িয়ে বড় স্থান প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। সিডার র‌্যাপিডসে প্রথম অ্যাভিনিউতে একটি নতুন মসজিদ নির্মিত হয়। ১৯৮০-এর দশকে, এই ভবনটি বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। ইসলামী কাউন্সিল অব আইওয়া ভবনটি কিনে নেয় এবং ১৯৯০ সালের শুরুতে এটি পুনর্নির্মাণ করা হয়। নামাজ আদায়ের পাশাপাশি বর্তমানে, এটি ইসলাম এবং আমেরিকায় মুসলিমদের ইতিহাস সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের একটি রিসোর্স সেন্টার হিসেবে কাজ করছে।

শেয়ার করুন