৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৯:১৮:৫১ পূর্বাহ্ন


সংস্কার, তারপর কী?
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-১২-২০২৪
সংস্কার, তারপর কী? বক্তব্য রাখছেন বদিউল আলম


রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সদিচ্ছা থাকলে আইন ও সংস্কার ছাড়াও ভালো কিছু করা সম্ভব। সদিচ্ছা না থাকলে এগুলো দিয়েও কিছু হবে না। আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা করে দিলাম, কেননা অন্তরে ভালো কিছু ছিল না। ‘সংস্কার কমিশনের অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রতিবেদন পেশ: তারপর কী?’ শীর্ষক অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে আলোচকরা এসব কথা বলেছেন। 

নাগরিক সংগঠন সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক ও দি হাঙ্গার প্রজেক্টের উদ্যোগে গত সোমবার সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গোলটেবিল বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সুজন সম্পাদক ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. তোফায়েল আহমেদ, সাবেক সচিব আবদুল আউয়াল মজুমদার প্রমুখ। বৈঠকে লিখিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করে সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার। 

লিখিত প্রবন্ধে সংস্কার কমিশনের অগ্রাধিকার বিষয়ে জনমনে যে আকাক্সক্ষা রয়েছে তা তুলে ধরা হয় এবং কমিশনগুলোর প্রতিবেদন পেশের পর কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কয়েকটি ধাপ প্রস্তাব করা হয়- প্রথমত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজসহ সব অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করা; দ্বিতীয়ত. সব কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবগুলো নিয়ে সংস্কারের অগ্রাধিকার তথা ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিত করা; তৃতীয়ত. কোনো সংস্কারগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার করবে এবং কোনগুলো নির্বাচিত সরকার করবে তা নির্ধারণ; চতুর্থত. অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এখতিয়ারভুক্ত সংস্কারগুলো সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি; পঞ্চমত নির্বাচিত সরকার কর্তৃক যেসব সংস্কার করা হবে, সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি জাতীয় সনদ বা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা, যাতে যে দল সরকার গঠন করবে তারা যেন সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করতে এবং বিরোধীদলগুলোও যেন তাতে সমর্থন দিতে বাধ্য হয়।

 ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমরা স্থানীয় সরকার বিষয়ে একটা সমন্বিত আইনের খসড়া করেছি। আমাদের আইনের শাসন কায়েম করতে হবে। একটা সমস্যা হলো আমাদের জাতীয় নির্বাচন হয় সংসদীয় পদ্ধতিতে আর স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয় রাষ্ট্রপতি শাসিত পদ্ধতিতে। ফলে আমরা সর্বশক্তিমান মেয়র, চেয়ারম্যান নির্বাচন করি। সংসদীয় পদ্ধতিতে হলে কেউ সরাসরি চেয়ারম্যান, মেয়র হতে পারবেন না, আগে মেম্বার হতে হবে। নারী সংরক্ষিত আসনের ক্ষেত্রে আমরা ভারতের আদলে ঘূর্ণায়মান সংরক্ষণ পদ্ধতির প্রস্তাব করেছি। 

আবদুল আউয়াল মজুমদার বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সদিচ্ছা থাকলে আইন ও সংস্কার ছাড়াও ভালো কিছু করা সম্ভব। সদিচ্ছা না থাকলে এগুলো দিয়েও কিছু হবে না। আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা করে দিলাম, কেননা অন্তরে ভালো কিছু ছিল না। 

ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে চলে গেছে। এখন কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করে আগাছাগুলো পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, নির্বাচনি মাঠকে সমতল করা। একটা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের জন্য এ সংস্কারগুলো প্রয়োজন। আশা করছি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারে অধীনে এ সংস্কারগুলো মেনে আগামী কয়েকটা নির্বাচন হলে মানুষ অভ্যস্থ হয়ে যাবে। তাই সংস্কার প্রস্তাবগুলো পেশ করার পর এ ব্যাপারে দেশব্যাপী জনমত ও ঐকমত্য তৈরি করতে হবে।

শেয়ার করুন