৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৯:২৩:১৭ পূর্বাহ্ন


এআইয়ের মাধ্যমে অবৈধদের ডিপোর্টের পরিকল্পনা
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-১২-২০২৪
এআইয়ের মাধ্যমে অবৈধদের ডিপোর্টের পরিকল্পনা প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প


হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (ডিএইচএস) ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রযুক্তি যেমন এআই-সহায়িত নজরদারি টাওয়ার, ‘রোবোডগস’, এবং মুখম-ল চিহ্নিতকরণ প্রযুক্তি (ফেসিয়াল রিকগনিশন) ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্রযুক্তিগুলোর ব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত করা এবং বিতাড়ন কার্যক্রমকে আরো ত্বরান্বিত করা সম্ভব হবে। প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণার অন্যতম প্রধান প্রতিশ্রুতি হিসেবে ঘোষণা করেছেন যে, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের ব্যাপক বিতাড়ন শুরু করবেন। তার প্রশাসন এই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহারকে একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করছে। মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (ডিএইচএস) ২০২৫ সালের বাজেটে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার সম্পর্কিত কার্যক্রমকে প্রাধান্য দিতে ৫ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ট্রাম্প তার অবৈধ অভিবাসীদের ধরা ও বিতাড়ন সম্পর্কিত কার্যক্রমে অভিবাসন নীতি আরো কঠোর করার পরিকল্পনা করেছেন।

ট্রাম্পের ঘোষণার পর, গত ১২ সেপ্টেম্বর, টুসন, অ্যারিজোনাতে একটি ক্যাম্পেইন স্টপে তিনি বলেছেন, ‘আমরা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অভিবাসন বিতাড়ন অভিযান শুরু করবো।’ তার নির্বাচনী প্রচারণা এবং পরবর্তী প্রশাসনিক পদক্ষেপে স্পষ্ট হয়েছে যে, তিনি প্রথমে অপরাধীদের বিতাড়ন করবেন এবং পরে টেম্পোরারি প্রটেকটেড স্ট্যাটাস (টিপিএস) প্রোগ্রাম বাতিল করবেন। এছাড়া তিনি বলেছেন, আমার আর কোনো বিকল্প নেই, আমি নির্বাচনের পর অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়ন করতেই হবে। এতে কোনো মূল্য ট্যাগ থাকবে না। তার প্রশাসন এই উদ্যোগের জন্য আগে কখনো দেখা যায়নি এমন একটি বড় বিতাড়ন বাহিনী গড়ার পরিকল্পনা করছে।

ডিএইচএস ইতিমধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারের জন্য পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। ২০২৫ সালের বাজেটে, ডিএইচএস অফিস অব দ্য চিফ ইনফরমেশন অফিসারের অধীনে একটি এআই অফিস খোলার জন্য ৫ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে। এই অফিসের কাজ হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ‘দায়িত্বশীল ব্যবহার’ নিশ্চিত করা, এর ব্যবহারের জন্য মান, নীতি এবং তদারকি প্রতিষ্ঠা করা এবং ডিএইচএসের মধ্যে এর ব্যবহার বৃদ্ধি করা।

ডিএইচএস সেক্রেটারি আলেজান্দ্রো মায়োরকাস বলেছেন, এআই একটি রূপান্তরকারী প্রযুক্তি যা আমাদের জাতীয় স্বার্থে অপ্রতিরোধ্যভাবে অগ্রসর হতে পারে। একই সময় এটি এমন কিছু ঝুঁকি তৈরি করতে পারে যা আমরা সেরা অনুশীলন গ্রহণ এবং অন্যান্য সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে হ্রাস করতে পারি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারের মধ্যে থাকা সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক। তাদের মতে, অপরীক্ষিত এআই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হলে তা গোপনীয়তা লঙ্ঘন এবং আইনি প্রক্রিয়া ভঙ্গের কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এর মাধ্যমে অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করার জন্য অতিরিক্ত নজরদারি এবং আক্রমণাত্মক মনোভাব গড়ে উঠতে পারে, যা নাগরিক অধিকার এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয়। মানবাধিকার কর্মীরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন যে, এই প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহার গোপনীয়তা এবং আইনি প্রক্রিয়ার লঙ্ঘন ঘটাতে পারে।

এআইকে কেন্দ্র করে ট্রাম্পের অভিবাসন বিতাড়ন পরিকল্পনা একটি বিপরীতমুখী পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে, যেখানে প্রযুক্তির ব্যবহারে দ্রুত কার্যকরি ফলাফল পাওয়ার চেষ্টা করা হবে, তবে এর মূল্য হতে পারে গোপনীয়তা ও আইনের শাসন ভঙ্গ। এই প্রযুক্তি ব্যবহারের সময় সরকারের জন্য একটি ভারসাম্য রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে এটি কার্যকরি হয়, তবে নাগরিক অধিকার এবং আইনি নিরাপত্তা সুরক্ষিত থাকে।

শেয়ার করুন