কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনপন্থী প্রাক্তন ছাত্র মাহমুদ খলিলকে ২০ জুন সন্ধ্যায় লুইজিয়ানার জেনা শহরের একটি ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) আটক কেন্দ্র থেকে ফেডারেল জজের নির্দেশে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। প্রায় তিন মাস পর মুক্তি পেয়ে তিনি ২১ জুন নিউজার্সির নিউয়ার্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান, যেখানে স্ত্রী ও সদ্যজাত সন্তান তাকে স্বাগত জানান। মাহমুদ খলিল একজন আলজেরীয় নাগরিক ও যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা (গ্রিনকার্ডধারী)। গত মার্চ মাসে নিউইয়র্ক সিটি থেকে তাকে গ্রেফতার করে আইসিই। তার মুক্তির আদেশ দেন যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারক মাইকেল ফারবিয়ার্জ। যদিও একই দিনে এক ইমিগ্রেশন বিচারক তার জামিন প্রত্যাখ্যান করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের আদেশ দেন, তবে বিচারক ফারবিয়ার্জের আদেশ সেই সিদ্ধান্তকে অগ্রাহ্য করে কার্যকর হয়।
মুক্তির পর মাহমুদ খলিল বলেন, ‘আমি প্রথমেই আমার স্ত্রী এবং সদ্যজাত ছেলেকে জড়িয়ে ধরবো। তবে আমি তাদের কথা ভুলবো না, যারা এখনো সেই আটক কেন্দ্রে বন্দি। তারা কোনো অপরাধ করেনি-তাদের সেখানে থাকার কথা নয়। তিনি আরো বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন মানুষকে অমানবিক করে তোলার চেষ্টা করছে। আপনি নাগরিক হন, অভিবাসী হন, কিংবা কেবল এই ভূমিতে বসবাসকারী একজন মানুষ-আপনি তবুও একজন পূর্ণ মানব।’ মাহমুদ জানান, তিনি শিগগির নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে আরো বিস্তারিতভাবে কথা বলবেন।
ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, একজন ইমিগ্রেশন বিচারক যখন খলিলের জামিন নামঞ্জুর করে বহিষ্কারের আদেশ দেন, সেই একই দিনে এক জেলা বিচারক তার মুক্তির আদেশ দেন-যা বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণের বাইরে একটি পদক্ষেপ। তবে বিচারক ফারবিয়ার্জ বলেন, ‘খলিলের বিরুদ্ধে সহিংসতা, ভাঙচুর কিংবা উসকানির কোনো প্রমাণ নেই, এবং তাকে আটকে রাখার মাধ্যমে সরকারের কোনো অপরিবর্তনীয় ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।’ তিনি আরো বলেন, এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত ব্যতিক্রমী, কিন্তু প্রয়োজনীয়।
আদেশ অনুযায়ী, খলিলকে তার পাসপোর্ট জমা দিতে হবে, ভ্রমণ সীমিত থাকবে নির্দিষ্ট কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে এবং তার গ্রিনকার্ড ফেরত দেওয়া হবে যাতে তিনি আপিল করতে পারেন। তার বিরুদ্ধে কোনো ইলেকট্রনিক মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নিউইয়র্কের কংগ্রেস সদস্য আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ বলেন, ‘খলিলের এই আটক প্রথম সংশোধনী অধিকার লঙ্ঘন করে। তাকে কেবল রাজনৈতিক মতপ্রকাশের কারণে আটক রাখা হয়েছে, যা পুরোপুরি বেআইনি। মাহমুদ খলিল বলেন, আমার কণ্ঠ বন্ধ করা যাবে না। আমি ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলবো-যতক্ষণ না ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়। হোক না তা কারাগারে, হোক না মৃত্যুর মুখে।