১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার, ৬:০৩:০৪ পূর্বাহ্ন


আপনি কি কি করলে ভালো নির্বাচন হয় এটা ঠিক করুন- মান্না
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০১-২০২৫
আপনি কি কি করলে ভালো নির্বাচন হয় এটা ঠিক করুন- মান্না


সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকারকে অগ্রাধিকার ঠিক করতে বললেন মাহমুদুর রহমান মান্না। শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘‘ দেশের এখন যে অবস্থা…. আমাদেরকে খোলনলচা বদলাতে হবে, দেশ বদলাতে হবে, সরকার পদ্ধতি বদলাতে হবে মানে পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসি বলছি না। সরকার যদি ভালো হয়, একটা ভালো নির্বাচন হয়, সবাই যাতে ভোট দিতে পারে সবাই যাতে গ্রহন করে এবং সেই ভোটের ফলাফলের  উপরে আমরা গণতন্ত্র নির্মাণ করতে পারি।”

‘‘ সেজন্য বলা হয়েছে এই সরকারকে অন্তর্বতী সরকার। কতদিন লাগবে সংস্কার করতে? যতদিন লাগে লাগুক… কারণ এটা বলছি না যে, ওরা ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকুক। আপনি কি কি করলে ভালো নির্বাচন হয় এটা ঠিক করুন… ইত্যাদি ইত্যাদি।”

দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে মান্না বলেন, ‘‘ এই সরকার তুলনামূলকভাবে পলিটিক্যাল মুক্ত আছে। এ সরকার… একটা কথা আছে না নিজের নিজের ক্ষেত্রে আমরা সবাই খুব সাকসেসফুল… কিন্তু  আপনি ভালো ক্রিকেট প্লেয়ার ছিলেন নেমেছেন তো ফুটবল খেলতে…এই খেলা জানে না।”

‘‘ না হলে আজকে আপনারা(তরিকত পরিষদ) যে বক্তৃতা করছেন এই কথাগুলো তো সবার আগে এই সরকারের কাছে যাওয়ার কথা ছিলো। যখনই মাজার ভেঙেছে, যখনই খানকাতে হামলা হয়েছে তখনই তাদেরই স্বউদ্যোগে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা ছিলো।তারা করলেন না কেনো? জিনিসের দাম বেড়ে যায় তারা কিছুই তো করে না। এখন একটু শাখ-সবজির দাম কমেছে কৃতিত্ব নেয়ার চেষ্টা করছে… এটা শীতকাল, এটা ভেজিটেবলের সিজন তো… অন্য জিনিসের দাম কমেনি।”

জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে দেশব্যাপী বিভিন্ন মাজার-খানকায় সন্ত্রাসী হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন মাহফিলে বাধা প্রদানের প্রতিবাদে ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবিতে এই আলোচনা সভা হয়।

মাজার-খানকায় হামলাকারীরা গুন্ডা হিসেবে অভিহিত করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘‘ মাজারে হামলা করা তো মানে গুন্ডামি করা… এটা কোনো ভালো মানুষের কাজই না। আর গুন্ডারা ভালো মানুষ হবে কোত্থেকে।”

মাজার-খানকায় হামলার ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

ভারতের আজমীর জিয়ারতের প্রসঙ্গ টেনে মান্না বলেন, ‘‘ আমি খাজা মইনুদ্দিন চিশতির মাজারে গেছি... ফাতেহা পাঠ পড়েছি, দোয়া করেছি, মোনাজাত করেছি… মজা ব্যাপার কি জানেন? আমার সাথে কমরেড মোহাম্মদ তোহা ছিলেন। তিনি খুবই ব্রিলিয়েট একজন মানুষ কিন্তু কমিউনিস্ট।”

‘‘ওখানে গেলে পরে চাঁদরের নিচে মাথা ঢুকিয়ে দিতে হয়… উনি মাথা ঢুকাবেন না। ওখানে খাদেম যারা আছেন তারা বলছেন, আপনি মাথা দেবেন না কেনো? উনি(তোহা) জবাব দিচ্ছেন না বয়স্ক মানুষ। তারা ক্ষেপে গিয়ে একসময় বললেন, আপ ক্যায় হায়, ক্যায় কুই মিনিস্টার হ্যায়, কুই এমপি হ্যায়… ক্যায়া হ্যায়, কেতনা পাওয়ার ফুল হ্যায়। তখন কমিউনিস্ট মোহাম্মদ তোহা বললেন, হাম মসুলমান হ্যায়… মুসলনাম কিসিকো সামনে ছার নেহি জুগাতা।”

এই সময়ে উপস্থিতি তরিকত পরিষদের কর্মীরা তালি দিলে মান্না বলেন, ‘‘ তালি দিলেন যে  এতো খুলি হয়ে? মানে উনার কথায় মনে করলেন কমরেড তোহা মুসলমান হয়ে গেছে, কমিউনিজম ছেড়ে দিয়েছেন… না। উনি যা বলেছেন, কমিউনিজমের ওপর বিশ্বাস নিয়ে ওখানে প্রয়োজন মনে করেছেন তাই ওটা বলেছেন।”

এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘‘ অধিকারের প্রশ্নে আমরা এক সাথে থাকব, আমাদের লড়াই চলবে ফ্যাসিবাদ বিলুপ্ত না হওয়া পর্যন্ত্ এবং একটা নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত।”

‘‘ অনেকে আমাদেরকে বলেন যে, ৫ আগস্টে আপনারা বিজয় হয়েছেন কিনা? আমরা বলি না আমরা বিজয় হয়নি… ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পরাজিত হয়েছে কিন্তু আমাদের বিজয় অনেক দূর। অনেক বড় সংগ্রাম আমাদের করতে হবে… সবার অধিকার নিয়ে আমরা যখন অধিকারের প্রশ্লে এক হতে পারবো তখন বলতে পারব বাংলাদেশ সেদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।”  

বাংলাদেশ তরিকত পরিষদের সভাপতি পীর বাশার খান্দানীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় গণঅধিকার পরিষদ একাংশের অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল মিয়া মসিউজ্জামান, জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির দেলোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক শাহ কাওসার মোস্তফা আবুল উলায়ী, নেদায়ে ইসলামীর শায়েখ সাইয়্যেদ মুসতাক আহাম্মাদ আল আহাম্মাদীসহ তরিকত পরিষদের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।



শেয়ার করুন