১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার, ০১:৫৩:৩২ পূর্বাহ্ন


রিয়েল আইডি মিথ্যা দাবি করে একজনকে আটক করলো আইস
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০৫-২০২৫
রিয়েল আইডি মিথ্যা দাবি করে একজনকে আটক করলো আইস লিওনার্দো গার্সিয়া ভেনেগাস


যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামার ফোলি শহরে এক আমেরিকান নাগরিককে তার বৈধ ‘রিয়েল আইডি’ পরিচয়পত্রকে মিথ্যা দাবি করে আটক করেছে অভিবাসন কর্মকর্তারা। ২৫ বছর বয়সী লিওনার্দো গার্সিয়া ভেনেগাস, যিনি ফ্লোরিডায় জন্মেছেন এবং মেক্সিকান অভিভাবকের সন্তান, নির্মাণকাজে কর্মরত অবস্থায় এই ঘটনা ঘটেছে। ভাইরাল করা ভিডিওতে দেখা গেছে, কর্মকর্তারা তাকে জোরপূর্বক মাটিতে ফেলে দিচ্ছে এবং ‘আমি নাগরিক’ বলে চিৎকার করার পরও হাতকড়া পরিয়ে তাকে আটক করে। গার্সিয়া ভেনেগাস মোবাইল ফোন দিয়ে ভিডিও ধারণ করতে থাকলেও কর্মকর্তারা ফোন ছিনিয়ে নেন এবং তাকে আটক করার চেষ্টা করেন।

এক সাক্ষাৎকারে গার্সিয়া ভেনেগাস জানিয়েছেন, কর্মকর্তারা তার ওয়ালেট থেকে রিয়েল আইডি বার করে তাকে জানান এটি মিথ্যা। এরপর তিনি বলছেন, তারা আমাকে শক্ত করে হাতকড়া পরিয়েছে। গার্সিয়া ভেনেগাস ও তার ভাইসহ চারজন ওই নির্মাণ সাইট থেকে আটক হন, যাদের মধ্যে তার ভাই অভিবাসনহীন।

ঘণ্টাখানেক পর তার সামাজিক সিকিউরিটি নম্বর দেখানোর পর তাকে মুক্তি দেওয়া হয়, যা তার নাগরিকত্ব প্রমাণ করে। তিনি বলেন, আমি সত্যিই দুঃখিত বোধ করছি এবং সবকিছু দেখে কিছুটা নার্ভাস। তার আত্মীয়, যিনি নিজেও আমেরিকান নাগরিক, জানান যে তারা সবাই রিয়েল আইডি পেতে প্রশাসনের সব নিয়ম অনুসরণ করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে হলেও এখন আর সেটা কোনো মানে রাখে না। আমাদের ত্বকের রঙ যেন এখন একটা অপরাধ।

যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, গার্সিয়া ভেনেগাস এই অভিযান চলাকালে আইন প্রয়োগে বাধা দিয়েছেন, তাই তাকে আটক করা হয়েছে। যদিও পরিষ্কার নয় যে তাকে আটক করা কর্মকর্তারা স্থানীয় পুলিশ, ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) বা অন্য ফেডারেল আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য।

ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন ফেডারেল সংস্থা অভিবাসন আইন প্রয়োগের দায়িত্ব পেয়েছে। স্থানীয় পুলিশ ও শেরিফ বিভাগের কিছু সদস্যকেও ফেডারেল অভিবাসন অভিযান পরিচালনার জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের ‘ব্যাপক নির্বাসন’ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে অনেক আমেরিকান নাগরিকও ভুলবশত এই অভিযানকালে আটক বা নির্বাসিত হয়েছে। যদিও বেশির ভাগকে পরে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তবুও কিছু শিশু ও পরিবারের সদস্যকে নির্বাসিত করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী প্রশাসনেও যদিও বিরল, তবে আমেরিকান নাগরিকদের নির্বাসনের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিকত্ব এবং অভিবাসন নীতির জটিলতা তুলে ধরে।এই ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয় যে, বর্তমান অভিবাসন নীতির কঠোরতার ফলে ন্যায্য নাগরিকত্ব প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও অনেক নাগরিক ভুলক্রমে সন্দেহভাজন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন এবং অবিচারের শিকার হচ্ছেন। এ ধরনের ঘটনা নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করছে এবং অভিবাসন নীতি প্রণয়নে মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের দিকগুলো পুনর্বিবেচনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ অভিবাসন নীতির ক্ষেত্রে এসব সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান জরুরি বলে মনে করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন