৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ৬:৩২:১০ অপরাহ্ন


অভিবাসন ধরপাকড়ে ২০ হাজার ন্যাশনাল গার্ড চাইলো হোমল্যান্ড সিকিউরিটি
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৫-২০২৫
অভিবাসন ধরপাকড়ে ২০ হাজার ন্যাশনাল গার্ড চাইলো হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস)


যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ অভিবাসন ধরপাকড় ও নির্বাসন কার্যক্রমে সহায়তার জন্য ২০ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েনের অনুরোধ করেছে ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস)। এই অস্বাভাবিক অনুরোধ পেন্টাগনের বিবেচনায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা। হোমল্যান্ড সিকিউরিটির মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন এক বিবৃতিতে বলেন, এ পদক্ষেপ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘অপরাধী অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতার ও নির্বাসনের জন্য জনগণের দেওয়া ম্যান্ডেট’ বাস্তবায়নের অংশ। তিনি আরো বলেন, আমরা আমেরিকান নাগরিকদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি এবং সেই লক্ষ্যে প্রতিটি সংস্থান ও উপায় ব্যবহার করবো।

ন্যাশনাল গার্ড বাহিনীকে অভ্যন্তরীণ অভিবাসন ধরপাকড়ে ব্যবহারের অনুরোধ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক স্বাধীনতা, সাংবিধানিক ভারসাম্য এবং পসেস কোমিটাটুস অ্যাক্টের সীমারেখা নিয়ে গভীর বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সমালোচকদের মতে, এটি সেনাবাহিনীকে দেশীয় আইন প্রয়োগে ব্যবহারের এক বিপজ্জনক নজির স্থাপন করতে পারে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এ ২০ হাজার সেনা সদস্যকে সীমান্তে নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে মোতায়েন করা হবে। বিষয়টি নির্ভর করছে তারা রাজ্য গভর্নরের অধীনে থাকবেন কি না, নাকি ফেডারেল আদেশে পরিচালিত হবেন তার ওপর। কারণ, পসেস কোমিটাটুস অ্যাক্ট অনুযায়ী, ফেডারেল নিয়ন্ত্রিত সেনাবাহিনীকে দেশীয় আইন প্রয়োগে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ, তবে রাজ্যের অধীন বাহিনী সে কাজ করতে পারে।

বর্তমানে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস)-এর মোট জনবল প্রায় ২০ হাজার। এর মধ্যে এনফোর্সমেন্ট অ্যান্ড রিমোভালস অপারেশনস (ইআরও) বিভাগে মাত্র ৬ হাজারের বেশি আইনপ্রয়োগকারী কর্মকর্তা আছেন। সেনা মোতায়েনের অনুরোধ মঞ্জুর হলে আইসের সক্ষমতা প্রায় দ্বিগুণ হবে। তবে প্রশ্ন উঠছে, এ অনুরোধ কেন সরাসরি রাজ্য গভর্নরদের কাছে না করে প্রতিরক্ষা দফতরের কাছে করা হয়েছে? এ বিষয়ে বিস্তারিত না জানিয়ে, অনুরোধকারী এক মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে তথ্য দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এরই মধ্যে অভিবাসন ইস্যুতে একের পর এক নির্বাহী আদেশ জারি করছেন এবং বিষয়টিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ হিসেবে উল্লেখ করছেন।

এর আগে দক্ষিণ সীমান্তে প্রায় ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়, যাদের একটি অংশ এখন অভিবাসীদের আটক করতেও সক্ষম। তারা মূলত দেওয়াল নির্মাণ, নজরদারি, প্রশাসনিক সহায়তা ও আকাশপথে পরিবহনের কাজ করছে, যাতে সীমান্ত টহল বাহিনীকে সরাসরি গ্রেফতার ও আটককাজে মনোনিবেশ করানো যায়।

নিউ মেক্সিকোতে সম্প্রতি একটি নতুন সামরিক সুরক্ষা অঞ্চল গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে সেনারা সতর্কতামূলক চিহ্ন বসিয়েছে এবং সীমান্তরক্ষীদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। যদিও সরাসরি অভিবাসীদের আটক এখনো অন্য সংস্থার দায়িত্বেই রয়েছে। এমনকি এ সামরিক এলাকায় অনুপ্রবেশের দায়ে যেসব অভিবাসীদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছিল, সেগুলোর অনেকটাই বাতিল করে দিয়েছেন ফেডারেল বিচারকরা। কারণ অভিযুক্তরা জানতেন না যে, তারা কোন সামরিক সুরক্ষা অঞ্চল পার করছেন।

ডিএইচএসের সেনা মোতায়েন অনুরোধ বর্তমানে পেন্টাগনের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন পেলে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অভ্যন্তরীণ অভিবাসন ধরপাকড়ের মাত্রা বহুগুণে বেড়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যেই এটি রাজনৈতিক ও মানবাধিকার মহলে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

শেয়ার করুন