৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ৬:২৯:৫৬ অপরাহ্ন


শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইসিইর অভিযান অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-০২-২০২৫
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইসিইর অভিযান অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি নিউইয়র্ক সিটি পাবলিক অ্যাডভোকেট জুমানি উইলিয়ামস আইসিইর স্পর্শকাতর লোকেশনে যেমন স্কুলে অভিযান পরিচালনা করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তৃতা করছেন


নিউইয়র্ক সিটিসহ অন্যান্য সিটিগুলোতে অভিবাসীদের মধ্যে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) অভিযান নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্কুলগুলোতে অভিযান চালানোর সম্ভাবনা এবং সরকারি কর্মকর্তাদের বিভ্রান্তিকর বিবৃতি অভিবাসী পরিবারগুলোকে চরম উদ্বেগের মধ্যে ফেলেছে, বিশেষ করে যারা অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। নিউইয়র্ক সিটির শিক্ষা অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী, স্কুলগুলোতে আইসিই এজেন্টদের প্রবেশ করতে হলে একটি বিচারিক অনুমতি থাকতে হবে, যা একজন বিচারক দ্বারা স্বাক্ষরিত হতে হবে। স্কুলের প্রশাসন আইসিই এজেন্টদের এই অনুমতি না থাকলে তাদের প্রবেশে বাধা প্রদান করবে। তবে আইসিই একাধিকবার উল্লেখ করেছে যে তারা অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতার করতে চায়, সুতরাং স্কুলগুলোতেও অভিযান চালানো হতে পারে। স্কুলে অভিবাসী শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য এই আইন প্রচলিত থাকলেও বাস্তব পরিস্থিতি কিছুটা জটিল। আইসিই যদি কেবল প্রশাসনিক অনুমতি নিয়ে স্কুলে প্রবেশ করতে চায়, তবে এটি একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারণ কিছু শিক্ষাবিদ মনে করছেন যে, আইসিই এসব আইন উপেক্ষা করে গ্রেফতার চালাতে পারে।

আইসিই অভিযানের কারণে অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। অনেক অভিবাসী পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন যে তারা স্কুলে আসা-যাওয়ার সময় আইসিইয়ের হাতে আটক হতে পারেন। বিশেষত, স্কুল বাস বা পাবলিক ট্রান্সপোর্টে যাওয়ার সময় অভিবাসী শিক্ষার্থীরা কোনো সুরক্ষা পাবেন না, যা তাদের জন্য একটি বড় ঝুঁকি। নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের সদস্য আলেক্সা এভিলেস অভিবাসী পরিবারগুলোকে তাদের অধিকার সম্পর্কে জানাতে কাজ করছেন। তিনি বলেন, অভিবাসীদের জন্য আমাদের মেয়র ও গভর্নরের পক্ষ থেকে স্পষ্ট এবং দৃঢ় সমর্থন প্রয়োজন।

নিউইয়র্ক ফর অল আইন, যা ২০২০ সালে প্রস্তাবিত হয়েছিল, এমন একটি বিল যা আইসিইকে স্থানীয় সরকার এবং আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সহায়তায় সাহায্য করতে নিষেধ করবে এবং তাদের কাছে অভিবাসী তথ্য শেয়ার করার বিরুদ্ধে বাধা সৃষ্টি করবে। এই বিলে অভিবাসী সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সাহায্য করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আইনটি সম্পর্কে জানিয়ে, নিউইয়র্ক স্টেটের অ্যাসেম্বলি সদস্য করিনেস রেইয়েস বলেন, এটি সেই সময়ের মতো মনে হয় যখন মানুষকে হোলোকাস্টের সময় পরিচয়পত্র দেখাতে বলা হতো। আমরা যদি সবাই একসঙ্গে না দাঁড়াই, তাহলে আমাদের নিজেদের সুরক্ষা ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হবে। এই আইনটি পাস করার জন্য, অভিবাসী অধিকাররক্ষা কর্মীরা এবং রাজনীতিবিদরা আরো সমর্থন জোগানোর চেষ্টা করছেন, কিন্তু আইনটি পাস করা কঠিন হতে পারে। তবে তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে অভিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। আইসিইর জন্য অনুদানের পাশাপাশি, নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন অভিবাসী সংগঠন ও আইনজীবী অভিবাসীদের অধিকার রক্ষা করতে এবং আইসিই অভিযান সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছেন। যদিও কিছু রাজনৈতিক নেতারা অভিবাসী সম্প্রদায়ের উদ্বেগকে গুরুত্বহীন বলে মনে করছেন, তবে বাস্তবে অভিবাসী পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর সময় তীব্র উদ্বেগ ও নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করছে।

এ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য নাগরিক অধিকাররক্ষা কর্মীরা অভিবাসীদের অধিকার জানাতে এবং আইসিই অভিযান থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য সচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। অভিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল এবং আতঙ্কের। নিউইয়র্ক সিটিসহ দেশজুড়ে অভিবাসী পরিবারগুলো স্কুলে পাঠানোর সময় নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করছে। রাজনীতিবিদ, আইনজীবী এবং সিভিল সোসাইটি এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নিতে কাজ করছে।

শেয়ার করুন