৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৫:৩১:২৭ অপরাহ্ন


মুসলিম নারীর হিজাব খুলতে বাধ্য করায় শেরিফের বিরুদ্ধে মামলা
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০২-২০২৫
মুসলিম নারীর হিজাব খুলতে বাধ্য করায় শেরিফের বিরুদ্ধে মামলা ওকল্যান্ড কাউন্টি শেরিফ


ডেট্রয়েটের ফেডারেল আদালত ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট ফর দ্য ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট অব মিশিগানে মুসলিম নারী সিয়েরা গেলানির হিজাব খুলতে বাধ্য করার অভিযোগে ওকল্যান্ড কাউন্টি শেরিফ অফিসের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে। শেরিফ অফিস মামলাটি খারিজের আবেদন করলেও ২৭ জানুয়ারি বিচারক মার্ক গোল্ডস্মিথ সে আবেদন খারিজ করেন। আদালত ক্ষতিপূরণ এবং অধিকার লঙ্ঘনের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির দাবিতে মামলাটি চলমান রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

২০২৩ সালে কেয়ার-মিশিগান সংগঠন ডিয়ারবর্নের বাসিন্দা সিয়েরা গেলানির পক্ষে এ মামলাটি দায়ের করে। অভিযোগ অনুযায়ী, গ্রেফতার পরবর্তী বুকিং প্রক্রিয়ায় তাকে হিজাব খুলতে বাধ্য করা হয় এবং হিজাববিহীন অবস্থায় তার ছবি তোলা হয়। পরবর্তী সময়ে সে ছবি ওকল্যান্ড কাউন্টি জেলের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়। গেলানির আরো অভিযোগ করেন যে তাকে পুরুষ অফিসারের সামনে তল্লাশির শিকার হতে হয় এবং পুরো আটককালীন হিজাব পরার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

মামলায় ওকল্যান্ড কাউন্টি শেরিফ মাইকেল বোচার্ড এবং ডেপুটি এমিলি জোনিং ও মেগান কার্নকে অভিযুক্ত করে ছয়টি অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে রয়েছে রিলিজিয়াস ল্যান্ড উসে এন্ড ইনস্টিটিউশনালইজেড পার্সনস একট (ইলুইপা), মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘন, মিশিগান স্টেট সংবিধান লঙ্ঘন, সাধারণ অবহেলা ও গুরুতর অবহেলা। আদালত বেশ কয়েকটি অভিযোগ খারিজ করলেও ‘সাধারণ অবহেলা’ অভিযোগটি বহাল রাখেন। আদালত ওকল্যান্ড কাউন্টির নীতির অসঙ্গতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে উল্লেখ করে যে নীতিমালায় আটককৃতদের মাথা ঢাকা পোশাক রাখার অনুমতি রয়েছে এবং বিপরীত লিঙ্গের তল্লাশি নিষিদ্ধ। তবে গেলানিকে তার হিজাব খুলতে বাধ্য করা হয় এবং তা একজন পুরুষ অফিসারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে তাকে হিজাববিহীন অবস্থায় একাধিক এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে পুরুষ কর্মকর্তা, কর্মী ও বন্দিরা উপস্থিত ছিলেন। তার তোলা হিজাববিহীন ছবি মিশিগান স্টেট পুলিশের ডাটাবেসেও আপলোড করা হয় বলে অভিযোগে জানানো হয়েছে।

কেয়ার-মিশিগানের নির্বাহী পরিচালক দাউদ ওয়ালিদ আদালতের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, কোনো মুসলিম নারীকে হিজাব খুলতে বাধ্য করা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাব যাতে সব আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা মুসলিম নারীদের হিজাব পরার সাংবিধানিক অধিকারকে সম্মান করে। গেলানির পক্ষে আইনজীবী অ্যামি ডুকোরে জানান, তারা প্রথমে ওকল্যান্ড কাউন্টি শেরিফ অফিসের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শেরিফ অফিস দায় স্বীকার না করে গেলানিকে দোষারোপ করার চেষ্টা করায় তারা আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে বাধ্য হন।

কেয়ার-মিশিগান ইতিপূর্বে আরো কয়েকটি অনুরূপ মামলার সঙ্গে যুক্ত ছিল। চলতি মাসেই কেন্ট কাউন্টি শেরিফ অফিসের বিরুদ্ধে আরেক মুসলিম নারীকে হিজাব খুলতে বাধ্য করার অভিযোগে একটি ফেডারেল মামলা দায়ের করা হয়। ২০২২ ও ২০২৩ সালে ফারেনডেল, ডেট্রয়েট এবং মিশিগান কারাগারের বিরুদ্ধে সমাধানমূলক মামলা নিষ্পত্তি হয়। এসব ঘটনা মুসলিম নারীদের ধর্মীয় অধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ তুলে ধরে এবং নীতি পরিবর্তনের দাবি জোরালো করে।

শেয়ার করুন