৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০২:২৮:২২ অপরাহ্ন


দেশকে কুসুম সিকদার
মিউজিক ভিডিও নিয়ে পর্নোগ্রাফি মামলা হওয়ার কোনো যুক্তি নেই
আলমগীর কবির
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-১০-২০২৪
মিউজিক ভিডিও নিয়ে পর্নোগ্রাফি মামলা হওয়ার কোনো যুক্তি নেই কুসুম সিকদার


কুসুম সিকদার। দর্শকপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী। লেখক এবং গায়িকা হিসেবেও তিনি পরিচিত। হঠাৎ করেই পর্দার আড়ালে চলে গিয়েছিলেন তিনি। অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এই লাক্স তারকা দীর্ঘসময় বিরতির পর ফিরছেন। তবে ৮ বছর পর তার এ ফেরা ভিন্ন পরিচয়ে। এ নিয়ে তিনি কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির

প্রশ্ন: নতুন বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য প্রথম সিনেমা হিসেবে ১১ অক্টোবর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে যাচ্ছে ‘শরতের জবা’। এটি পরিচালনাও করেছেন আপনি। হঠাৎ সিনেমা পরিচালনার সিদ্ধান্ত কেন নিলেন?

কুসুম সিকদার: প্রথমত গল্পটি আমার লেখা। চিত্রনাট্যও আমারই লেখা। ফলে এই গল্পটার প্রতি আমার একটা আত্মবিশ্বাস জন্মেছে। আমি প্রতিটি দৃশ্য দেখতে পারছিলাম। তবুও পরিচালনার মতো কঠিন কাজটি করতে চাইনি শুরুতে। দু’জন নির্মাতার সঙ্গে বসেছি গল্পটি নিয়ে। কিন্তু ওনাদের সঙ্গে আলাপ আগাতেই টের পাচ্ছিলাম, আমার যে গল্পটা সেটা ওনারা ধরতে পারছেন না। এটা হতেই পারে। ফলে আমি আর গল্পটাকে নিয়ে অন্য নির্মাতার সঙ্গে কম্প্রোমাইজে যেতে চাইনি। সিদ্ধান্ত নিলাম নিজেই সিনেমাটি বানাবো। সঙ্গে সমৃদ্ধ একটি টিম থাকবে। সেভাবেই কাজ করেছি। এটা একটা টিমওয়ার্ক ছিলো। আমার একার কিছু নয়।

প্রশ্ন: সর্বশেষ ২০১৬ সালে মুক্তি পেয়েছিল সিনেমা ‘শঙ্খচিল’। সে হিসাবে ৮ বছর পর নতুন সিনেমা। এতো বিরতি কেন?

কুসুম সিকদার: এই বিরতির মধ্যে অনেক সিনেমার প্রস্তাব এলেও নানাবিধ কারণে কাজ করা হয়নি। আমি আসলে এডজাস্ট করতে পারিনি। লক্ষ্য করবেন, আমি আমার ব্যাচ (২০০২) থেকেই কাজ কম করে আসছি। তখন যারা মাসের ২৮ দিনই শুটিং করতো, আমি তখন বড়জোর ১২ দিন করতাম। আমি সবসময় শিখতে চাই। কোনও ইউনিটে কাজ করে যদি কিছু শিখতে না পারি, তাহলে কাজটা করার আগ্রহ পাই না। আরেকটা বিষয় হলো, আমি সবার সঙ্গে এডজাস্ট করতে পারি না। হতে পারে এটা আমার ব্যর্থতা। এসব মিলিয়ে আমার কাজের পরিমাণ খুব কম।

প্রশ্ন: একসঙ্গে অভিনয়-পরিচালনা সমন্বয় করতে কোনো সমস্যায় পড়েননি?

কুসুম সিকদার: আমি বলব, না। সমস্যা হয়নি। তবে সিনেমার প্রস্তুতিটা সময় একটু চিন্তা করে করতে হয়েছিল। সিনেমাটিতে জবা ও বেলী দুটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। আমি জবা চরিত্রে অভিনয় করেছি। যেহেতু গল্পটা আমারই লেখা, আমি জবা চরিত্রটিকে ভালোভাবে জানি। তাই সেই চরিত্রে অভিনয় করেছি।

প্রশ্ন: এ সিনেমায় দর্শক আকর্ষণের জন্য কী রয়েছে?

কুসুম সিকদার: ‘শরতের জবা’ রহস্যময় গল্প। রয়েছে ভৌতিক আবহাওয়া। প্রেম ও গান তো আছেই। সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার গল্প। তাই বলতে পারি সিনেমার পুরো যাত্রাই আমার জন্য চ্যালেঞ্জিং।

প্রশ্ন: চারপাশে এখনও অস্থিরতা। এই অসময়ে সিনেমাটি মুক্তি দিতে যাচ্ছেন কেন?

কুসুম সিকদার: এই যে আপনারা আমার ইন্টারভিউ নিচ্ছেন। আমিও দিচ্ছি। লাইট, ক্যামেরা, মেকআপ, ড্রাইভার; কোনোকিছু বন্ধ আছে? চিকিৎসক, শিক্ষক, পাইলট, বাজার, খাওয়া, গাওয়া- সবই তো চলছে। সবই চলছে সিনেমা কেন বন্ধ থাকবে? সব দোষ কেন আমাদের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির। ফেসবুক খুললে দেখবেন সবাই বিনোদনে আছে। ওটিটি দেখছে। গান শুনছে। হল রিলিজটা শুধু বন্ধ। বলতে পারেন এই অভাববোধ থেকে ছবিটি মুক্তি দিচ্ছি। আমি চাই আবার প্রেক্ষাগৃহে দর্শক ফিরুক।

প্রশ্ন: এর আগে আপনার একটি মিউজিক ভিডিওর বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফির মামলা হয়েছিল। 

কুসুম শিকদার: অনেকে বলছে, আমি স্টান্টবাজি করছি। কেন বলেছে? এটা অবিশ্বাসযোগ্য, সেকারণে। এটা যদি পর্নো হত তাহলে তো কেউ বলত না কুসুম স্টান্টবাজি করছে। তাহলে সবাই বলত, এটা তো আসলে পর্নোই। সেটা হতেই পারে। যেহেতু এটা পর্নো না সেহেতু মামলা করাটা হাস্যকর ব্যাপার। সেকারণেই সবার সন্দেহ হচ্ছে, কুসুম এটা করাচ্ছে। এটা সাধারণ ও বাণিজ্যিক একটা মিউজিক ভিডিও। সেটা নিয়ে পর্নোগ্রাফি মামলা হওয়ার কোনো যুক্তি নেই। সেকারণেই অনেকে অবাক হয়ে বলছে, এটা কুসুম করাচ্ছে। আমাদের সিনেমাতে যে কন্সটিটিউশন আছে সেখানে ক্লিভেজ দেখানো যায় না, পেট দেখানো যায় না। কিন্তু এগুলো দেখিয়ে দেখিয়ে সিনেমা, মিউজিক ভিডিও, নাটক-সবই হচ্ছে। এমনকি এগুলোও আমার মিউজিক ভিডিওতে নেই, পর্নো তো বহু দূরের কথা। অশ্লীল আর শ্লীলের মধ্যে খুব সূক্ষ্ম সুতা আছে, সুতাটা অনেকে ধরতে পারে না।

প্রশ্ন: সামনে কি আবার নাটক-ওয়েবে আপনাকে দেখা যাবে?

কুসুম শিকদার: অফার আসে প্রায়ই। শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘না’ বলে দিই। যদিও খুব কষ্ট হয় না বলতে।

শেয়ার করুন