গোপালগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবীতে বিক্ষোভ করেছে কতিপয় মানুষ। এসকল মানুষ বিভিন্ন শ্লোগানে মুখরিত হয়ে এক সময় খুলনা ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে। এতে রাস্তায় চলমান যানবাহন দুই প্রান্তে দীর্ঘ জ্যাম হয়ে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেনাবাহিনী উত্তেজিত জনতাকে রাস্তা পরিত্যাগ করে যানবাহন স্বাভাবিক করতে বারবার অনুরোধ নিবেদন করেও ব্যর্থ হয়।
এ সময় উত্তেজিত জনতা সেনাবাহিনীর গাড়িভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ ঘটনায় নয়জন সেনাসদস্য এবং সংবাদকর্মীসহ স্থানীয় ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে খবর মিলেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে শনিবার বিকাল ৪টার দিকে সদর উপজেলার গোপীনাথপুর বাসস্ট্যান্ডে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ হাজার হাজার সাধারণ মানুষ জড়ো হয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
সেনাবাহিনী এসে মহাসড়ক থেকে বিক্ষোভকারীদের সরে যেতে বলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে বিক্ষুব্ধ জনতা। তারা সেনাবাহিনীর ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন।
গোপালগঞ্জ ক্যাম্পের লেফটেনেন্ট কর্নেল মাকসুদুর রহমান বলেন, “৩-৪ হাজার জনতা সদর উপজেলার গোপীনাথপুর এলাকায় জড়ো হয়ে রাস্তা অবরোধ করে। রাস্তা থেকে সরে যেতে বললে তারা উত্তেজিত হয়ে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীর গাড়ি ভাঙচুর করে তারা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।”
এ ব্যাপারে শনিবার রাতে আইএসপিআর জানায়, “আজ (১০ আগস্ট ২০২৪) গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার গোপীনাথপুরে বিক্ষোভকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে সেনা টহল দলের উপর হামলা করে। বিক্ষোভকারীরা গোপালগঞ্জ – ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখলে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য দায়িত্ব পালনরত সেনাবাহিনীর ২টি টহল দল ঘটনাস্থলে গমন করে। এসময় উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা সেনা টহল দলের উপর ইট- পাটকেল ছুঁড়ে মারে এবং দেশীয় তৈরি অস্ত্র দিয়ে টহল দলের সদস্যদের আঘাত করলে ০৩ জন অফিসার, ০১ জন জুনিয়র কমিশন অফিসার ও ৫ জন সেনাসদস্য আহত হয়।
উল্লেখ্য, উক্ত ঘটনায় আহত সেনা সদস্যগণ আশঙ্কামুক্ত ও চিকিৎসাধীন রয়েছে। এছাড়াও তারা সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয় এবং দুটি গাড়ি ভাংচুর করে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সেনা টহল দল ০৪ রাউন্ড এ্যামোনিশন ফায়ার করে। পরিস্থিতির তীব্রতা পরিলক্ষিত হওয়ায় ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।”
জানা গেছে সেনাবাহিনী এ সময় অত্যান্ত ধৈর্যর সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।