৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ৬:১০:৫২ অপরাহ্ন


সরকার ও বিরোধী দল সবার মুখেই শঙ্কা-আশঙ্কা
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০৫-২০২৪
সরকার ও বিরোধী দল সবার মুখেই শঙ্কা-আশঙ্কা


সরকার ও বিরোধী দল সবার মুখেই এখন শঙ্কা-আশঙ্কার কথা। রাজনীতিতে সরকার ও বিরোধী দল সবাই পরস্পর পরস্পকে আগের চেয়ে বেশি সন্দেহ করছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনে করছে বিএনপি ওঁৎ পেতে পেতে আছে তাদেরকে ক্ষমতাচ্যুত করতে, খুঁজছে নানান ধরনের দেশীয় ও ভূ-রাজনৈতিক সুযোগ। চালিয়ে যাচ্ছে নানান ধরনের দেন-দরবার। বিএনপি’র সামান্যতম নড়াচড়ায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চোখ বড়ো বড়ো করে তাকাচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপি’রও আশঙ্কা আছে। তাদের আশঙ্কা সরকার দলটির রাজনীতিই নিশ্চিন্ন করতে নানান ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। বিএনপি যেনো কোনোভাবেই মাঠে দাঁড়াতেই না পারে সে চেষ্টাই করে যাচ্ছে। এমন শঙ্কা আশঙ্কার পরিবেশে ঢাকার রাজনৈতিক বাতাস ক্রমেই ভারী হয়ে যাচ্ছে। এসব তথ্য পাওয়া গেছে রাজনৈতিক মাঠের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার বিশিষ্টজনদের সাথে কথা বলে। তাছাড়া সম্প্রতি রাজনৈতিক দলগুলির বক্তৃতা বিবৃতির পাশাপাশি বিভিন্ন জনের মন্তব্য বিশ্লেষণ করে এধরনের শঙ্কা উদ্বেগের ভাষা লক্ষ্য করা গেছে। 

ক্ষমতাসীনদের মুখে আশঙ্কার কথা

৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর এখন আওয়ামী ক্ষমতায় বসেছে। প্রায় চার মাসও হয়নি আওয়ামী লীগের ক্ষমতা গ্রহণের মেয়াদ। কিন্তু এরই মধ্যে দেখা গেছে, খোদ ক্ষমতাসীন দলের সভানেত্রীর মুখে আশঙ্কার কথা। সাধারণ মেয়ার শেষ হওয়ার কয়েকমাস আগে ক্ষমতাসীনরা নানান ধরনের যড়যন্ত্রে কিসসা কাহিনী দাঁড় করায়। কিন্তু বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী ক্ষমতা গ্রহণের শুরুতেই নানান ধরনের উদ্বেগের কথা বুক উঁচিয়ে উঁচিয়ে জানান দিচ্ছে। বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘চক্রান্ত এখনো শেষ হয়নি, ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। একজন নারী হয়ে আমি পাঁচ পাঁচবার ক্ষমতায় এসেছি এটা অনেক দেশের পছন্দ না। এসব বলেছেন (১৩ জানুয়ারি) টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায়। এর পরে অতি সম্প্রতি বলেছেন তার আরও আশঙ্কার কথা। ‘আমাকে উৎখাত করলে পরবর্তীতে কে আসবে’-এই প্রশ্ন রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘কারা আসবে, কে আসবে ক্ষমতায়। কে দেশের জন্য কাজ করবে, কাকে তারা আনতে চায়। সেটা কিন্তু স্পষ্ট নয়। এমন বক্তব্য দেওয়ার পাশাপাশি তিনি অবশ্য এটাও জানান যে, ‘কে দেশের জন্য কাজ করবে, কাকে তারা আনতে চায়। সেটা কিন্তু স্পষ্ট নয়। আর সেটা স্পষ্ট নয় বলে তারা জনগণের সাড়া পাচ্ছে না।’ 

এদিকে আওয়ামী লীগের অন্য নেতাদের মুখেও শঙ্কার কথা উঠে আসছে। আন্তর্জাতিকভাবে ও দেশের অভ্যন্তরের অনেকেই সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করছেন বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দ্বাদশ নির্বাচনের আগেই নির্বাচন-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে নেতা-কর্মীদের দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা সতর্ক করেছিলেন বলেও জানান তিনি। এর পাশাপাশি মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর বাংলাদেশ সফর ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা কোনো উত্তাপ ছড়াতে চাইনি। আমরা বিএনপির হাসিখুশি ভাব দেখলাম, হঠাৎ চাঙা হয়ে গেছে। সামনে তো আর কিছু নেই। এখন ডোনাল্ড লু এসে সামনে কিছু করার অভিসন্ধি আছে কি না, সেটা বিএনপিই ভালো জানে। আবার বলেছেন, বিএনপি আবারও আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।

বিশ্লেষণে কি বলেন?

আন্তর্জাতিকভাবে ও দেশের অভ্যন্তরের অনেকেই সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করছেন বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ফলে দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের এই নেতার মুখেও শঙ্কার কথা শোনা যাচ্ছে। এর পাশাপাশি মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গ টানতে গিয়ে বলে ফেলেন যে ওবায়দুল কাদের ও তার দল বিএনপি’কে হাসিখুশি ভাব লক্ষ্য করেছেন। দেখে হঠাৎ চাঙা হয়ে গেছে বিএনপি। তবে এসব বিষয়ে মুখে গুরুত্ব না দিলে এটা-ও বলেছেন, ‘বিএনপি আবারও আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।’ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মাঠে বিএনপি লিফলেট কর্মসূচি ছাড়া বড়ো সমাবেশে একটি কর্মসূচি দিয়েছিল। তাতেই কি করে ক্ষমতাসীনদের ভাবায় যে বিএনপি আবারও আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে? কারো কারো মতে, ক্ষমতাসীনদের মধ্যে শঙ্কা থেকেই এসব বলা হচ্ছে, যদিও এসব শঙ্কার নেপথ্য কোনো ব্যাখা তাদের কেউ দিচ্ছেন না। 

শরিকরা শঙ্কা দেখছে

এদিকে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদেরের মন্তব্যে শঙ্কা লক্ষ্য করা গেছে। সম্প্রতি সরকার ‘সিন্দাবাদের দৈত্য’ হয়ে জনগণের কাঁধে চেপে বসেছে বলে মন্তব্য করেছেন জি এম কাদের। বলেছেন, বর্তমান সরকার শক্তি-সামর্থ দিয়ে এ দেশকে দখল করে ফেলেছে। এখন জনগণের কথার কোনো দাম নেই, এখন তাদের কথায় জনগণকে চলতে হচ্ছে। জাপা চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘জাতি আজ চরম সংকটময় সময় পার করছে। দিন যতই যাচ্ছে, সংকটের গভীরতা ততই বাড়ছে। আগে আমরা যেটাকে সংকট বলেছি, এখন মনে হচ্ছে, সেটা কোনো সংকটই ছিল না।

সিপিবি’র কন্ঠেও শঙ্কা

সরকারের গণবিরোধী নীতির কারণে দেশে চলমান অর্থনৈতিক সংকট আরও তীব্র হবে বলে মনে করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটির নেতারা বলছেন, দেশের সাধারণ মানুষের আয় না বাড়লেও মূল্যবৃদ্ধির কষাঘাতে জনজীবন অতিষ্ঠ। এর মধ্যে বছরে তিনবার করে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, নিত্যপণ্যের লাগাতার মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও দুঃসহ করে তুলবে।

বিএনপি’র শঙ্কা

বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা যাতে রাজনীতি করতে না পারে, সে জন্য তাঁদের সাজা দিয়ে দূরে রাখতে নতুন ট্রাইব্যুনাল তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী সব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই বিরোধী নেতাদের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপিসহ বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করতে আওয়ামী লীগ সরকার নতুন করে ভয়ংকর দমন-পীড়নের (ক্র্যাকডাউনের) পরিকল্পনা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। যদিও বিরোধী দলের নেতাদের মামলায় বিচার দ্রুত করতে নতুন ট্রাইব্যুনাল করা হচ্ছে বলে বিএনপি মহাসচিব যে অভিযোগ করেছেন, তা অস্বীকার করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে হচ্ছে বিএনপি কেনো এমন কথা বলছে যে তারা রাজনীতি যেনো করতে না পারে সে ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে ধীরে ধীরে। তাহলে কি ধরে নেয়া যায় সরকার আসলেই শঙ্কায় আছে। আবার বিরোধী দলও শঙ্কায় আছে?

আসলে কিসের শঙ্কা?

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যান-মেরি ট্রেভেলিয়ানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্য হাইকমিশনারের বাসভবনে এ বৈঠক হয়। তবে এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা বৈঠকে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কা কিন্তু বিএনপি’র দেয়া বিজ্ঞপ্তিতে তা উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়া কূটনৈতিক পাড়ায় আরো কয়েকটি বৈঠকে বিএনপি’র বেশ কয়েকজন নেতার বিচরণের খবরও আছে। এদিকে আরেকটি খবর রাজনৈতিক অঙ্গনে নানান ধরনের জল্পনা কল্পনা ডানা মেলছে। তা হলো ভারত ও শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশ সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। গত ১০ মে শুক্রবার থেকে তাঁর ছয় দিনের এই সফর শুরু হয়েছে বলে গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়। বলা হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ মে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ সফর করবেন ডোনাল্ড লু। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু মঙ্গলবার ঢাকায় এসেছেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ডোনাল্ড লুকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (উত্তর আমেরিকা অনুবিভাগ) খন্দকার মাসুদুল আলম। তাঁর এ সফরের মধ্য দিয়ে দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার হবে বলে প্রত্যাশা ওয়াশিংটনের। আরোও বলা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র যে একটি মুক্ত, অবাধ ও সমৃদ্ধ ভারত- প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল দেখতে চায়, ডোনাল্ড লুর সফরে সেটাই গুরুত্ব পাবে। কেউ কেউ ধারণা করছেন র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা ভিসানীতি নিয়ে কথা বলবে বাংলাদেশ। তবে ডোনাল্ড লু‘র এমন সফর নিয়ে একটু উত্তেজিত ভঙ্গিমায় যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সফরকে ঘিরে বিএনপিকে ‘উৎসাহী’ না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলেছেন, “আরে বেকুবের দল, লু আসছেন বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে। বিএনপির স্বপ্ন পূরণের জন্য আমেরিকাও আর আসবে না, কেউ আসবে না। লন্ডন থেকে ডাক দিয়ে কোনো লাভ হবে না।” প্রশ্ন হচ্ছে সরকারের একেবারে শীর্ষ পর্যায় থেকে বেশ জোরে-শোরেই তো বলা হতো বা দাবি করা হতো আমেরিকার সাথে তাদের অনেক ভালো সম্পর্কই আছে। কিন্তু এখন সে-ই সম্পর্ক আরো ভালো কি করতেই কি আসা না-কি ভূ-রাজনৈতিকের পাশাপাশি বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুসংহত করার ব্যাপারে নতুন সরকার কি কি পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং এর পাশাপাশি আরো কতো দ্রুত সে পদেক্ষপের ফলাফল দেখা যাবে তা জানতে বা পর্যবেক্ষণেই ডোনাল্ড লু আসছে। কারণ অনেকেই মনে করেন বাইডেন প্রশাসন মার্কিন নির্বাচনের আগেই বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার তৈরি মাঠের অন্ততপক্ষে নমুনাটি দেখতে চায়। এটা তাদের কূটনীতির চ্যালেঞ্জও বটে। কারণ ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর আমেরিকা বা যুক্তরাষ্ট্রসহ পুরো পশ্চিমারা একে ভালোভাবে নেয়নি। তবে এমন ধরনের নির্বাচনের পরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে তখন তেমন ব্যবস্থা না নিলেও ভবিষ্যতে পশ্চিমারা কতটা নিশ্চুপ থাকবে তা-এখন দেখার বিষয় নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে ক্ষমতসীনদের মধ্যে। অন্যদিকে গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসেবে এটি ডোনাল্ড লুর প্রথম সফর। তা-ই সামান্যতম কূটনৈতিক নড়ন-চড়ন বা মাঠে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি’র হাক-ডাকে ব্যতিব্যস্ত হওয়ার পাশাপাশি শঙ্কিত হয়ে উঠছে ক্ষমতাসীনরা। আর অন্যদিকে এমন সময়ে বিএনপি তেমন জোড়ালো আন্দোলন না তৈরি করতে পারলেও শঙ্কায় আছে ক্ষমতাসীনরা মরিয়া হয়ে কোন ধরনের ঝুঁকিতে ফেলে দলটিকে।

শেয়ার করুন