৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৯:২৯:৩৯ পূর্বাহ্ন


শিল্পী সমাজে বিভাজন সৃষ্টির জন্য দায়ী পতিত ফ্যাসিস্ট সরকার : সেলিমা রহমান
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৮-২০২৫
শিল্পী সমাজে বিভাজন সৃষ্টির জন্য দায়ী পতিত ফ্যাসিস্ট সরকার : সেলিমা রহমান বক্তব্য রাখছেন সেলিমা রহমান


শিল্পী সমাজে বিভাজন সৃষ্টির জন্য ‘পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারকে’ই দায়ী করেছেন সেলিমা রহমান। গত ২৬ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, শিল্পী সমাজ যারা সমাজের প্রতিনিধি, যারা সমাজকে সত্য ও সুন্দর স্বীকার যারা মানুষের এই মানুষের মাটি ও মায়ের গান নিয়ে জনগণের জীবনযাত্রা নিয়ে মানুষের জীবনকে আলোকিত করে সেই শিল্পী সমাজ থাকবে সবসময় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে।

কিন্তু আজকে অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে হলেও সত্যি আমাদের শিল্পী সমাজের মধ্যে বিভাজন হয়ে গেছে। কেন এই বিভাজন? আমি শুধু বলতে চাই, যারা আজকে মায়াকান্না করছেন, কান্নাকাটি করছেন তাদেরকে বলছি যে, আপনারা কি সেদিন জনসাধারণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তৎকালীন স্বৈর সরকারের বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে নিজেরা আত্ম সুখ উপলব্ধি করেছেন এবং নিজেদের সম্পদ গড়ে তুলেছেন।

সেলিমা রহমান বলেন, ওই বিভাজিত শিল্পীরা সেদিন দেখেননি কিভাবে আয়না ঘরে বাবাকে বন্দী করে একটি সন্তানকে বাবার কোল থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে, আপনারা সেদিন দেখেননি, কিভাবে মানুষের বুকের উপর নির্যাতন চলছে, আপনারা সেদিন দেখেননি কিভাবে আমাদের সাধারণ নাগরিক থেকে বিরোধী মতামত যারা পোষণ করত সবাইকে কারাগারে নির্যাতনে শিকার হতে হয়েছে, জেল খাটতে হয়েছে। কারণ আপনারা তো মানুষকে বিশ্বাস করেন না। আপনারা কিসের শিল্পী? আপনারা নিজের সম্পদ গড়ার জন্য কাজ করেছেন কিন্তু সমাজের যে সত্য কথা, সমাজের যে সুন্দর প্রতিচ্ছবি সমাজের যে গণতন্ত্রের অভিযাত্রা কোনটাই আপনারা রাখেননি।

জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাসের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক ফ্যাসিস্টদের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ ও হীন প্রচেষ্টা প্রতিরোধে এই মানববন্ধন হয়।

‘কর্মসূচি ঘোষণা’

মানববন্ধনের সভাপতি ইথুন বাবু বলেন, ভালো হতে পয়সা লাগে না। আমরা দেখেছি এখনো কিছু বেসরকারি টেলিভিশন, বিটিভি, শিল্পকলা একাডেমি এখনো ওই ফ্যাসিস্টদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা করতেছে, এটা টেলিভিশন চ্যালেন ও ক্যামেরাম্যানরা ভালো করেই জানেন। আমরা একটা কথা বলছি আমরা ২১ দিন সময় দিলাম এই প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন থেকে- এই ২১ দিনের মধ্যে যার যার স্থান থেকে ফ্যাসিস্টদেরকে তাড়িয়ে দিয়ে আপনাদের নিজের জায়গা পূরণ করুন। আপনাদের জায়গা পরিষ্কার করুন। এই ২১ দিনের মধ্যে সচিবালয় থেকে শুরু করে টেলিভিশন পর্যন্ত, টেলিভিশন থেকে শুরু করে শিল্পকলা একাডেমী পর্যন্ত যা আছে পরিস্কার করুন। বেসরকারি চ্যানেলগুলোকে বলতে চাই, আপনারা এখনো পৃষ্ঠপোষকতা করছেন আপনারা সাবধান হয়ে যান। ২১ দিনের মধ্যে ঝাড়ুঝাটা দিয়ে আপনাদের স্থান পরিষ্কার করুন। যদি ২১ দিনের মধ্যে পরিষ্কার না করেন আমরা সবাই মিলে আপনাদের জায়গাগুলো পুরস্কার করে দিব।”

‘ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে সজাগ থাকুন’

সেলিমা রহমান বলেন, পতিতরা পালিয়ে গেছে। একটা কথা বলতে চাই, আপনারা সজাগ হোকন, আপনারা শিল্পী মানুষ, শিল্প-চর্চা করেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে-আপনাদের চর্চার মধ্য দিয়ে এদেশের মানুষের সাধারণ জীবন, এদেশের মানুষের চিত্র, এদেশের মানুষের ছবি এবং এদেশের মানুষের কথা বলার অধিকার সেই অধিকার যেন ফিরে আসেন। আপনারা সাবধানতার হয়ে যান। কারণ ছাত্র জনতা শিল্পী এবং নারী পুরুষ শিশু সবাই আজ সচেতন। আমরা বলতে চাই এই প্রতিবাদী শিল্পী সমাজ যারা আজকে এখানে দাঁড়িয়েছে তাদেরকে বলতে চাই, আপনারা সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবেন, সেই সোচ্চার হবেন জনগণের জন্য, জনগণের অধিকারের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য।

কুদ্দুস বয়াতী বলেন, গত ২৬ বছরের ভেতরে আমি কিন্তু কোনো বক্তব্য দিইনি, কথা বলিনি। কারণ আমি গান গাইছিলাম ’৯২ তে। এর কারণে আমি দোষী হয়েছি। সেই থেকে আমাকে দেখেননি। কত বছর দেখেননি বলেন? টেলিভিশনের বলেন, শিল্পকলা একাডেমী বলেন আমার নাম গন্ধও নেই।আমার একটা ভাতা পাইতাম সেটাও দুই হাজার সাল থেকে বন্ধ করে দিয়েছে। আমার কথা হইলো এই দেশ এই দিন নয়, আরও দিন আছে, এই দিনের রে তোমরা নেবে সেদিনেরও কাছে। সেই গানের মধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক হইছিলো। এইটা হইছিলো বিএনপির আমলে হইছিলো, ৯২ সালে। আমার ওস্তাদ হুমায়ুন আহমেদ এই গানটা লেইখা দিছিলো। আমি আজকে অনেক বছর ধইরা খুব কষ্ট পাইতাছি। ২৩ বছর আমি আমি পালাইয়া আছি। এই দিনকে সেদিনের কাছে তোমরা নিছো তোমারদের পাশে আমি আছি, আমি থাকতে চাই।

শিবা সানুর সঞ্চালনায় এই মানববন্ধনে শিল্পী, প্রযোজক, পরিচালক, আবৃত্তিকারক বক্তব্য রাখেন।

শেয়ার করুন