৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১১:৫০:২৫ পূর্বাহ্ন


অঙ্গসংগঠনের মাধ্যমে মাঠে নামছে বিএনপি
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-০৪-২০২৫
অঙ্গসংগঠনের মাধ্যমে মাঠে নামছে বিএনপি


মুখে বিএনপি বলছে ভোটের দাবিতে তরুণদের ঐক্যবদ্ধ করতে এমন কর্মসূচি। কিন্তু বাস্তবে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নির্বাচনের রোডম্যাপ না পেয়ে যথেষ্ট হতাশায় পর্যবসিত বিএনপি। তাই অঙ্গসংগঠন যেমনটা ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলকে মাঠে নামানোর মাধ্যমে নির্বাচনের দাবি জোরালো করতে মাঠে নেমে যাচ্ছে বিএনপি। 

গত ২৮ এপ্রিল রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দেশব্যাপী তারুণ্যের সমাবেশে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অভূতপূর্ব ও জনসম্পৃক্ত নির্দেশনায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল যৌথভাবে দেশের ১০টি সাংগঠনিক বিভাগকে চারটি বৃহত্তর বিভাগে ভাগ করে অংশগ্রহণ করেছে এ কর্মসূচিতে। তিনি বলেন, তরুণদের ক্ষমতায়ন, রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণে অংশগ্রহণ, সৃজনশীলতার বিকাশ এবং তৃণমূল পর্যায়ে সর্বজনীন উন্নয়নের বাস্তবসম্মত মডেল গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।

যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, প্রতিটি বিভাগে দুদিনব্যাপী কর্মসূচি আয়োজন করতে হচ্ছে। প্রথমদিন একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে, যার শিরোনাম ‘তারুণ্যের ভবিষ্যৎ ভাবনা, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ।’

এ সেমিনারে রাজনৈতিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে ওঠে, গণতন্ত্রকামী সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার তরুণ প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী, উদীয়মান চিন্তাবিদ, তরুণ বক্তা ও উদ্যোক্তারা অংশ নেবেন। আলোচনায় উঠে আসবে কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, পরিবেশ, নগরায়ণ, প্রযুক্তি ও রাজনৈতিক অধিকার এবং তারুণ্যের ক্ষমতায়নে একটি আধুনিক, মানবিক ও নিরাপদ বাংলাদেশ নির্মাণ।

কর্মসূচি নিয়ে আব্দুল মোনায়েম মুন্না বলন, এ প্ল্যাটফর্ম হবে একটি উন্মুক্ত ও যুক্তিনির্ভর সংলাপের ক্ষেত্র, যেখানে মতবিনিময় হবে গঠনমূলক, পর্যালোচনামূলক এবং ভবিষ্যৎমুখী। সংলাপের ভিত্তি হবে বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দলসমূহ ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রদত্ত দিকনির্দেশনা ও রাজনৈতিক দর্শন।

তিনি আরো বলেন, এরপর কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হবে, যার উদ্দেশ্য একটি প্রাণবন্ত, উদ্দীপনাময় পরিবেশে তরুণদের সরব উপস্থিতি, তথা ঐক্য, প্রত্যয় ও আকাক্সক্ষার বহিঃপ্রকাশ নিশ্চিত করা। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে যেন আর কখনো কোনো ফ্যাসিবাদের উত্থান না ঘটে, ফ্যাসিবাদের ১৬ বছরের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও জুলাই-আগস্টের গণহত্যার যেন দ্রুত বিচার নিশ্চিত হয়, সার্বভৌম বাংলাদেশে যেন গণমানুষের স্বাধীনচেতা আকাক্সক্ষার বাস্তবায়ন ঘটে, সাম্য ও ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজে প্রতিটি মানুষের ভাগ্যের যেন পরিবর্তন ঘটে, সেটিই আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্য।

সেই সঙ্গে চারটি কর্মসূচির সময়সূচি ও বিষয়বস্তু প্রকাশ করা হয়। সেগুলো হলো-

প্রথম কর্মসূচি : চট্টগ্রাম

আগামী ৯ মে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় কর্মসংস্থান ও বহুমাত্রিক শিল্পায়ন নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা নিয়ে সেমিনার করা হবে। একই সঙ্গে ১০ মে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সমাবেশ করা হবে।

দ্বিতীয় কর্মসূচি : খুলনা

১৬ মে খুলনা ও বরিশালে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার নিয়ে তারুণ্যের ভাবনাবিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। পর ১৭ মে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সমাবেশ করা হবে।

তৃতীয় কর্মসূচি : বগুড়া

২৩ মে রাজশাহী ও রংপুরে কৃষি উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা ও নাগরিক সমস্যা নিয়ে তারুণ্যের ভাবনাবিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। পরদিন ২৪ মে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ হবে।

চতুর্থ কর্মসূচি : ঢাকা

২৭ মে ঢাকা, ফরিদপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহে তারুণ্যের রাজনৈতিক ভাবনা ও অর্থনৈতিক মুক্তিবিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। পরদিন ২৮ মে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ হবে।

কর্মসূচি নিয়ে তিনি বলেন, এই কর্মসূচিগুলোর মাধ্যমে জনগণের মতামত ও চিন্তাভাবনা সংগ্রহ করা হবে, যার ভিত্তিতে আমরা আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক নীতিগুলোকে আরো জনকল্যাণমুখী ও মানুষের চাহিদা অনুযায়ী পরিমার্জিত করতে পারব। তরুণদের একাগ্রতা, সম্পৃক্ততা ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা আমাদের নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়াকে আরো জনমুখী ও জনগণের কাছে দায়বদ্ধ রাখার চেষ্টা করবো।

শেয়ার করুন