১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার, ০৩:৫৮:৩১ পূর্বাহ্ন


নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটে স্বাধীনতা উপলক্ষে অভ্যর্থনা
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০৪-২০২৫
নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটে স্বাধীনতা উপলক্ষে অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী নেতৃবৃন্দ


মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটে গত ১১ এপ্রিল সন্ধ্যায় অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক কনসাল জেনারেল, কূটনীতিক, নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অফিসের প্রতিনিধিসহ বিদেশি অতিথিদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বসহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। এর পরই বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়।

অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে কনসাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদা ৭১-এর স্বাধীনতাযুদ্ধে সব শহিদ, শহিদ বুদ্ধিজীবী এবং শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ২০২৪-এর জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে সব শহিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন, তাদের আশু সুস্থতা কামনা করেন। তিনি বলেন এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ও আন্তরিকভাবে সচেষ্ট থাকতে হবে। তিনি সবাইকে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের উষ্ণ শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। কনসাল জেনারেল বলেন, ২০২৪ সাল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় সংযোজন করেছে এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা মেরামত তথা সংস্কারের এক অনন্য সুযোগ সৃষ্টি করেছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করে ‘আমরা দেশের সব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি’, মর্মে তিনি উল্লেখ করেন। বাংলাদেশ আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিশ্বের নজর কেড়েছে উল্লেখ করে দারিদ্র্যবিমোচন, গণসাক্ষরতা, নারীর ক্ষমতায়ন, ক্ষুদ্রঋত কার্যক্রম, কৃষিবিপ্লব, গ্রামীণ স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন, নবজাতক ও মাতৃস্বাস্থ্য, আয়ষ্কাল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, শিল্পায়ন ও ডিজিটালাইজেশনের ধারাবাহিক বৃদ্ধি, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অভিযানে তার অসাধারণ সাফল্যের কথা তুলে ধরেন কনসাল জেনারেল।

কনসাল জেনারেল তার বক্তব্যে স্বাধীনতার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য, তথা একটি গণতান্ত্রিক ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, ন্যায্যতাভিত্তিক, মানবিক ও আধুনিক দেশ গড়ার জন্য সবাইকে সচেষ্ট থাকার অনুরোধ জানান। বাংলাদেশের অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি গতিশীল, আত্মপ্রত্যয়ী এবং উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্যে আমাদের নতুন প্রজন্ম যে স্বপ্ন দেখছে, তা বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রসহ-সারা পৃথিবীতে অবস্থানকারী আমাদের বিপুলসংখ্যক প্রবাসী ভাই-বোনদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি তাদের এ সমর্থন এবং সহযোগিতা আরো শক্তিশালী করার অনুরোধ জ্ঞাপন করেন। কনসাল জেনারেল দু’দেশের জনগণের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। 

তিনি কনস্যুলেট জেনারেলের কার্যক্রম সুষ্ঠভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে সর্বদা সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য অফিস অব ফরেন মিশনস, মেয়র অফিস, সোসাইটি অব ফরেন কনসালস এবং কূটনৈতিক সম্প্রদায়, ফেডারেল ও রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোকে ধন্যবাদ জানান। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অফিসের আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিশনার এডওয়ার্ড মারমেলস্টেইন। আরো বক্তব্য দেন নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন ল্যু ও নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অফিসের আন্তর্জাতিক বিষয়ক ডেপুটি কমিশনার দিলিপ চৌহান, জজ সোমা সাঈদ। তারা সবাই নিউইয়র্কে ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশ কমিউনিটির ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং তাদের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন। 

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য গিয়াস আহমেদ, গোল্ডেন এজ হোম কেয়ার ও সাপ্তাহিক আজকালের সম্পাদক শাহ নেওয়াজ, বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, সাবেক সভাপতি আব্দুর রব মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুকিত চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক, চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সভাপতি কাজী আজম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী খরিল বিরিয়ানি হাউজের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ খলিলুর রহমান, মোহাম্মদ রিয়াজ, মনির হোসেন, জাহাঙ্গীর সরওয়ার্দী, জাফর আহমেদ প্রমুখ।

শেয়ার করুন