ফ্লোরিডার কিসিম্মী সিটির মিশিগান অ্যাভিনিউতে অবস্থিত ‘রাইট ফুয়েল’ গ্যাস স্টেশনে জুয়াখেলা ও মাদক পাচারের অভিযোগে বাংলাদেশি মো. জাহাঙ্গীর আলম (৬১) ও ইয়েসেনিয়া নুনেজ নামের এক নারীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি কিসিম্মী পুলিশ বিভাগ এক সাক্ষীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে ভিত্তি করে এই অভিযান চালায়। অভিযানে পুলিশ পাঁচটি জুয়ার মেশিন, ২.৬ পাউন্ড ফেন্টানাইল এবং ১৪ হাজার ৪৫ ডলার নগদ উদ্ধার করে। গ্যাস স্টেশনের ম্যানেজার মো. জাহাঙ্গীর আলমকে অবৈধ জুয়াখেলা পরিচালনা এবং সঠিক লাইসেন্স ছাড়া মদ্যপানীয় বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া স্টেশনের একটি গাড়িতে থাকা ইয়েসেনিয়া নুনেজ নামের এক নারীকে তার কাছ থেকে ফেন্টানাইল পাওয়ার পর মাদক পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।
কিসিম্মী পুলিশ জানিয়েছে, প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে তারা অভিযান চালায়। অভিযানের সময় ম্যানেজার মো. জাহাঙ্গীর আলম পুলিশকে স্বীকার করেন যে তিনি জানতেন, লাইসেন্স ছাড়া জুয়াখেলা বেআইনি, তবে তিনি এই ব্যবসায় এক বছর ধরে কাজ করছেন। তিনি জানান, যখন গ্রাহকরা মেশিন থেকে নগদ অর্থ উত্তোলন করেন, তখন রেজিস্টারের পেছনে একটি রসিদ ছাপানো হতো এবং তিনি ক্যাশ রেজিস্টার বা কাউন্টার পেছনে রাখা অর্থ থেকে গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করতেন। আলমের কাছে একটি ছোট চাবি পাওয়া যায়, যা পাঁচটি স্লট মেশিনের প্রতিটি খুলতে সক্ষম ছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেশিনগুলো ভাড়া নিয়ে পাঁচ থেকে ছয় মাস ধরে স্টেশনে রাখা হয়েছে। পুলিশ আরো জানায়, স্টেশনটি ফ্লোরিডা মদ বিক্রির আইনও লঙ্ঘন করছে। রাইট ফুয়েল একটি ‘২এপিএস’ লাইসেন্সের অধীনে পরিচালিত, যা শুধু অব সাইট কনজাম্পশনের জন্য বিয়ার এবং মদ বিক্রির অনুমতি দেয়। আলম স্বীকার করেন যে তিনি গ্রাহকদের দোকানের ভিতরেও মদ পান করার অনুমতি দিয়েছিলেন।
আরো তদন্তে জানা যায়, স্টেশনের মালিক, যিনি জ্যাকসনভিলে বাস করেন, প্রতি সপ্তাহে গ্যাস স্টেশনটি পরিদর্শন করে জুয়া মেশিন থেকে টাকা সংগ্রহ করতেন। পুলিশকে তিনি জানান, তিনি মনে করতেন স্লট মেশিনগুলো বৈধ, তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে, তার জুয়াখেলার লাইসেন্স ছিল না। আলমকে গ্রেফতার করে ওসিওলা কাউন্টি জেলে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাকে অবৈধ জুয়াখেলা পরিচালনা, জুয়া মেশিনের মালিকানা এবং সঠিক লাইসেন্স ছাড়া পানীয় বিক্রির অভিযোগ করা হয়। পরে তিনি ৭৫০ ডলারের বন্ডে জামিনে মুক্তি পান।
অপারেশন চলাকালে পুলিশ দুটি গাড়ির পাশে কয়েকজন লোককে দেখতে পায়, তবে তারা দ্রুত সরে যায় এবং গাড়িগুলো ফেলে রেখে চলে যায়। পুলিশ একটি হোন্ডা সিভিক গাড়ির মধ্যে একটি ছোট প্লাস্টিকের ব্যাগে গাঁজা দেখতে পায়, যা ইয়েসেনিয়া নুনেজের নামে নিবন্ধিত। পরবর্তী সময়ে, নুনেজ গাড়িতে ফিরে এসে বলেন, তিনি কিছুক্ষণ আগে গাড়িতে ছিলেন, তবে মদ পান করার কারণে তিনি গাড়ি চালাননি। পুলিশ তাকে জানায় যে, গাড়িতে গাঁজা রয়েছে, যা অনুসন্ধানের জন্য যথেষ্ট কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়। তদন্তের সময়, নুনেজ স্বীকার করেন যে গাঁজাটি তার ছিল, তবে তার কাছে কোনো মেডিকেল মারিজুয়ানা কার্ড ছিল না। গাড়ির আরো তল্লাশিতে একটি বড় প্লাস্টিকের ব্যাগে নীল পাউডারি পদার্থ পাওয়া যায়, যা নুনেজ দাবি করেন যে তার এক বন্ধু তাকে এটি পরিষ্কার করার জন্য দিয়েছে। ফিল্ড টেস্টে এটি ফেন্টানাইল হিসেবে শনাক্ত হয়, যার ওজন প্রায় ২.৬ পাউন্ড। নুনেজকে ফেন্টানাইল পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় এবং ২৮ গ্রাম বা তার বেশি ফেন্টানাইল পাচারের জন্য তাকে অভিযুক্ত করা হয়।