প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জে ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম দিন, সোমবার অভিবাসীদের প্রবেশ বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। প্রেসিডেন্টের ট্রাম্পের মতে, যুক্তরাষ্টের সার্বভৌমত্ব বর্তমানে চরম হুমকির সম্মুখীন, যেখানে মাদক চক্র, অপরাধী গ্যাং, সন্ত্রাসী, মানব পাচারকারী এবং অপ্রত্যাশিত অভিবাসীরা সীমান্তে অনুপ্রবেশ করে দেশের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিপর্যস্ত করেছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, গত চার বছরে এ সমস্যাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা এবং সহিংসতার জন্ম দিয়েছে। অবৈধ অভিবাসীরা নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত এবং দেশে মাদকদ্রব্যের প্রবাহ অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। অবৈধ অভিবাসীদের হাতে অনেক নিরীহ আমেরিকান নাগরিক, বিশেষত নারী ও শিশুরা, নির্মমভাবে খুন হয়েছেন। অপরাধী গ্যাং ও কার্টেলরা শহরের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আমেরিকার দুর্বল জনগোষ্ঠীকে আক্রমণ করছে এবং স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। দক্ষিণ সীমান্তে কার্টেলরা বিশাল অঞ্চল দখল করে তাদের ইচ্ছামতো মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পথ নিয়ন্ত্রণ করছে।
ট্রাম্প তার জরুরি ঘোষণা মাধ্যমে বিশেষত দক্ষিণ সীমান্তে সুরক্ষা বৃদ্ধি ও অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করার লক্ষ্যে সশস্ত্র বাহিনীকে এই সংকট মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। এই ঘোষণা পূর্ববর্তী প্রশাসনের সীমান্ত-সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা বাতিল করে নতুন করে কার্যকর করা হয়েছে। ট্রাম্প জানান, অবৈধ মাদকের প্রবাহের কারণে লক্ষাধিক আমেরিকান মাদকের অতিরিক্ত ব্যবহারে প্রাণ হারিয়েছেন। এ পরিস্থিতি আমেরিকার জনগণের জন্য একটি গুরুতর হুমকি এবং দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত। ট্রাম্প আরো বলেন, এই জরুরি পদক্ষেপ আমাদের জাতির সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আমাদের সীমান্ত সুরক্ষা অনেক বেশি শক্তিশালী হবে।
ট্রাম্পের মতে, এ হুমকি মোকাবিলা করতে এবং জরুরি পরিস্থিতি সামাল দিতে সশস্ত্র বাহিনীকে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন, আমার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো আমেরিকার জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এই জরুরি অবস্থার অধীনে সশস্ত্র বাহিনী এবং ন্যাশনাল গার্ডকে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নতুন প্রতিরক্ষা প্রাচীর নির্মাণ এবং সীমান্ত সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ড্রোন এবং প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম ব্যবহারে বিদ্যমান বিধিনিষেধ সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জে ট্রাম্পের দক্ষিণ সীমান্তে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার ফলে অভিবাসীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের নিয়ম আরো কঠোর হয়ে উঠবে। নতুন নীতিমালার আওতায় সীমান্ত সুরক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা, উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। তবে এর ফলে অননুমোদিত অভিবাসীদের জন্য প্রবেশাধিকারে কঠোর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে এবং তাদের জীবনযাত্রা আরো চ্যালেঞ্জপূর্ণ হয়ে উঠবে। এই পদক্ষেপ অভিবাসীদের জন্য নতুন অনিশ্চয়তা এবং সীমাবদ্ধতার কারণ হতে পারে।