৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৯:৬:৩৯ পূর্বাহ্ন


হাসিনার ভিসা বাতিল করলো যুক্তরাষ্ট্র, গন্তব্য কোথায়?
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০৮-২০২৪
হাসিনার ভিসা বাতিল করলো যুক্তরাষ্ট্র, গন্তব্য কোথায়? শেখ হাসিনা


বাংলাদেশের পট পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা ব্যাক্তির শেষ আশ্রয়স্থল কোথায় এ নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। কোথায় হবে তার ঠিকনা। কে দেবে আশ্রয় ৫ আগস্ট পতনের পর এখন এ আলোচনা তার বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের। এক সময়ে বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর মহিলা প্রধানমন্ত্রীর তিনি। দম্ভ নিয়ে বলতে শুনা গেছে ‘ক্ষমতা চাই ক্ষমতা।’ পেয়েছেনও। দীর্ঘ ১৬ বছর ক্ষমতার মসনদে থেকে খুবই করুণ পরিণতি। স্বল্প সময়ের (নোটিশে সেনাবাহিনীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে কোনোরকম দেশ ছেড়েছেন। তাকে বহনকারী সেনাবাহিনীর কার্গো বিমান প্রথম কলকাতা এরপর দিল্লিতে অবতরণ করেন। কিন্তু প্রথম তিনি ভারতের অবস্থান করবেন ধরে নেয়া হলেও তিনি অন্য কোনো ঠিকানা খুঁজতে থাকেন। এরমধ্যে অন্যতম ছিল যুক্তরাজ্য। কিন্তু তাৎক্ষণিক নাকচ করে দেয় যুক্তরাজ্য। বলা হয় রাজনৈতিক আশ্রয় তারা দিতে অসমর্থ। এরপর খুঁজতে শুরু করেন তিনি ভাল কোনো গন্তব্য। বিশেষ করে নিরাপদ স্থান। কিন্তু মঙ্গলবার খবর দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার ভিসা বাতিল করে দিয়েছেন। যার অর্থ আবার ভিসা নিতে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে আসতে হবে এবং সেটা এ মুহূর্তে কেন কবে সম্ভব হবে সেটা কে বলতে পারবে? ফলে যুক্তরাষ্ট্রের দরজাও তার বন্ধ। স্বাভাবিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া জাপান, দক্ষিন কোরিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের নীতি মেনেই চলে অভ্যস্ত।

সেক্ষেত্রে এসব দেশে তার আশ্রয় পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে যেমনটা সৌদী আরব, কাতার প্রমুখ দেশে চেষ্টা করলে করতেও পারেন। তবে বাংলাদেশী শ্রমিক আধ্যুষিত এসব দেশে শেখ হাসিনার বসবাসের জন্য কতটা নিরাপদ সেটা চিন্তার বিষয়। তাছাড়া তাকে আশ্রয় দিতে গিয়ে অতিরিক্ত নিরাপত্তা দিয়ে তার পেছনে ইনভেস্ট করার যৌক্তিকতাও এ মুহূর্তে নেই। কারণ ৭৬ বয়সী ক্ষমতাচ্যুত এক প্রধানমন্ত্রী জনরোষের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ব্যাক্তির কাছে কোনো স্বার্থ না থাকলে কে আশ্রয় দিতে চাইবেন এমন প্রশ্নটা উঠে আসছে। তবে বিস্ময়কর বিষয় হলো কোনো ব্যক্তি দেশ ছেড়ে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইলে তার প্রথম যে দেশে পা রাখবেন সে দেশেই হওয়ার কথা। কিন্তু শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় পাচ্ছেন না। এ ব্যাপারে দুটি বক্তব্য এসেছে। প্রথমটি ভারত তাকে আশ্রয় দিতে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বা শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয়ের কোনো ইচ্ছে নেই। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার গন্তব্য এখনও চুড়ান্ত হয়নি। তবে ভারত তার আশ্রয়স্থল ঠিক করতে ক’দিন সময় দেবে। 

সর্বশেষ, যে তথ্য শোনা গেছে সেটা হলো ইউরোপের দেশ বেলজিয়াম, আজারবাইজান, বেলারুশ বা ওই অঞ্চলের কোনো এক দেশে তার আপাতত থাকার ঠাঁই হতে পারে। এক্ষেত্রে ভারতের ক্ষমতাসীন ব্যক্তি বিশেষ মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে বলে অনেকে মনে করেন। কিন্তু সেটাও কতটা নিরাপদ হবে সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। কারন ওইসব দেশে ব্যাক্তি বিষেশের নিরাপত্তার জন্য পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশের মত অত সিকিউরিটির ব্যবস্থা নেই। ফ্রী ও ফেয়ার দেশ। যে যার মত খেয়াল খুশিমত চলাফেরা করে অভ্যস্ত। এমনকি বৃটেনের মত দেশেও প্রধানমন্ত্রীকে দোকান থেকে বেড ক্রয় করে নিয়ে যাওয়া বা জনসাধারনের সঙ্গে মেট্রোতে চলতে দেখা যায়। ফলে পার্সোনাল সিকিউরিটির ব্যবস্থা নেই ওইসব দেশে। 

একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বয়স্ক রাজনীতিবিদের জন্য এক্সট্রা এমন খাতির কে করবেন সে প্রশ্নটা উঠে আসছে। তবে শেখ হাসিনার জন্য সুখবর হবে যদি উনি কোনোভাবে ম্যানেজ করতে পারেন বৃটিশ সরকারকে। যেহেতু বোন রেহানা ওই দেশের নাগরিক। ভাগ্নি টিউলিপ সে দেশের মন্ত্রী। যদিও বৃটিশরা নিয়মের বাইরে যায় না। তাদের ক্রাইটেরিয়ায় পরলে তারা বিবেচনা করতেও পারেন। 

হাসিনার ভিসা বাতিল করলো যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে বিক্ষোভের বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের পর দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ অবস্থায় দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার কথা আগেই জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন প্রক্রিয়াকে গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছে দেশটি। এর মধ্যেই স্টেট ডিপার্টমেন্টের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র নিশ্চিত করেছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিসা বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। 

শেয়ার করুন