৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৯:৫১:৫৯ অপরাহ্ন


ফ্লোরিডার মিয়ামি বিচে ফিলিস্তিনি ভেবে ইসরায়েলিকে গুলি
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০২-২০২৫
ফ্লোরিডার মিয়ামি বিচে ফিলিস্তিনি ভেবে ইসরায়েলিকে গুলি অভিযুক্ত মর্ডেকাই ব্রাফম্যান


ফ্লোরিডার মিয়ামি বিচে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ‘দুই ফিলিস্তিনি’ ভেবে এক বন্দুকধারীর নির্বিচার গুলিবর্ষণে দুই ব্যক্তি মারাত্মক আহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, কোনো উসকানি ছাড়াই অভিযুক্ত মর্ডেকাই ব্রাফম্যান (২৭) সেমি-অটোমেটিক হ্যান্ডগান দিয়ে ১৭ রাউন্ড গুলি চালান। গ্রেফতারের পর পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় ব্রাফম্যান বলেন, পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্রাফম্যান জিজ্ঞাসাবাদের সময় স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলেছেন, ‘আমি আমার ট্রাক চালানোর সময় দুই ফিলিস্তিনিকে দেখি এবং তাদের গুলি করে হত্যা করি।’ তবে তিনি কাউকে হত্যা করেননি। আহতদের মধ্যে একজনের বাঁ কাঁধে গুলি লেগেছে এবং অন্যজনের বাঁ হাতের কনুইয়ের পাশে গুলি লেগেছে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা নিশ্চিত করেনি যে, গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিরা ফিলিস্তিনি কি না। জানা গেছে, তারা ইসরায়েল থেকে আসা পর্যটক। আহতদের সাউথ ফ্লোরিডা শিমচাষ নামে একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট আছে। এটি মূলত ইহুদি সম্প্রদায়ের বিভিন্ন তথ্য প্রচার করে, এক ভিডিওতে দাবি করেছে যে আহত ব্যক্তিরা ইসরায়েলি বাবা-ছেলে এবং তারা ফিলিস্তিনি নন।

শনিবার রাত ৯টা ৩০ মিনিটের দিকে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ব্রাফম্যানের ট্রাক পাইন ট্রি ড্রাইভের দিকে দক্ষিণে এগিয়ে যাচ্ছিল। এরপর তিনি ৪৮স্ট্রিট-এ একটি ইউটার্ন নেন এবং রাস্তার ডান লেনে গাড়ি থামান। দেখতে পান বাম লেনে একটি গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে ওই দুই ব্যক্তি ছিলেন। ঠিক তখনই ব্রাফম্যান তার ট্রাক থেকে নেমে এসে তাদের গাড়ির দিকে ১৭ রাউন্ড গুলি চালান (কোনো উসকানি ছাড়াই), গুলিতে দু’জনই আহত হন। পুলিশ পরে ৪৮৮৭ পাইন ট্রি ড্রাইভের কাছ থেকে ব্রাফম্যানকে গ্রেফতার করে। তাকে দ্বিতীয় ডিগ্রির দুটি হত্যা চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ব্রাফম্যানের আইনজীবীর পরামর্শে তিনি পুলিশের কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি। তবে গ্রেফতারের পর তিনি স্বেচ্ছায় স্বীকার করেছেন, আমি দুই ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করেছি।

এ ঘটনার পর ব্রাফম্যানের বিরুদ্ধে ফেডারেল ঘৃণাত্মক অপরাধের অভিযোগ আনার দাবি উঠেছে। ফ্লোরিডার আইনে এটি গুরুতর অপরাধ, যার শাস্তি সর্বোচ্চ ৩০ বছর কারাদণ্ড হতে পারে। বর্তমানে মিয়ামি বিচ পুলিশ জাতিগত বিদ্বেষ থেকে হামলা চালানোর সম্ভাব্য দিকটি খতিয়ে দেখছে। সে বিষয়ে মিয়ামি বিচ পুলিশ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। তবে ব্রাফম্যানের ‘ফিলিস্তিনি’ শনাক্ত করে গুলি চালানোর বক্তব্যের কারণে জাতিগত বিদ্বেষ থেকে হামলা চালানোর আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

এ ঘটনার পর মিয়ামি বিচের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পুলিশ ইতোমধ্যে স্থানীয় ও ফেডারেল পর্যায়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং হামলার পেছনে কোনো চরমপন্থী উদ্দেশ্য ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছে।

ব্রাফম্যানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ডিগ্রির দুটি হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে, যা ফ্লোরিডা আইনে গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি ৩০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের সম্মুখীন হতে পারেন। এ ঘটনার ফলে মিয়ামি বিচের ইহুদি ও ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে পারে, তাই স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনা করছে।

শেয়ার করুন