৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৯:১৫:৪২ পূর্বাহ্ন


ফিলিস্তিনিদের গাজায় ফিরতে দেওয়া হবে না : ট্রাম্প
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০২-২০২৫
ফিলিস্তিনিদের গাজায় ফিরতে দেওয়া হবে না : ট্রাম্প ডোনাল্ড ট্রাম্প


যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তার গাজা নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনার অধীনে ফিলিস্তিনিদের উপত্যকাটিতে ফেরার কোনো অধিকার দেওয়া হবে না। গত ১০ ফেব্রুয়ারি মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। গাজা উপত্যকাটি যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পরিকল্পনার কথা কয়েকদিন ধরেই বলছেন ট্রাম্প। ওই পরিকল্পনা নাকচ করে দিয়েছে আরব দেশগুলো। সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, তিনি এই উপত্যকার মালিকানা নিয়ে নেবেন। আর গাজার বাইরে ফিলিস্তিনিদের বসবাসের জন্য আলাদা ছয়টি জায়গা থাকবে।

সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, গাজায় ফিলিস্তিনিরা ফেরার অধিকার পাবেন কি না। জবাবে তিনি বলেন, ‘না, তারা পাবেন না। কারণ, তাদের আরো ভালো থাকার জায়গা পেতে যাচ্ছেন। অন্য ভাষায় বলতে গেলে, আমি তাদের জন্য একটি স্থায়ী জায়গা গড়ে তোলার কথা বলছি। কারণ এখন যদি তাদের ফিরতে হয়, তাহলে কয়েক বছর লেগে যাবে...এটা (গাজা) বসবাসযোগ্য নয়। 

গাজা পরিকল্পনার কথা ট্রাম্প প্রথম সামনে আনেন গত ৪ ফেব্রুয়ারি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনের সময়। তিনি গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের মিসর ও জর্ডানে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলেন। তবে ট্রাম্পের ওই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে দেশ দুটি।

সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের ভাষ্যমতে, গাজার ২০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনির জন্য তিনি সুন্দর এলাকা গড়ে তুলবেন। গাজা থেকে কিছুটা দূরে এ এলাকাগুলো নিরাপদ হবে। এলাকাগুলো গড়ে তোলার সময় গাজার নিয়ন্ত্রণ নেবেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, ‘ভবিষ্যতের জন্য এটিকে (গাজা) একটি রিয়েল এস্টেটের অগ্রগতি হিসেবে ভাবুন। এটি একটি সুন্দর জায়গা হবে। বেশি অর্থও খরচ হবে না।’

গাজাকে ‘বড় আবাসন এলাকা’ মনে করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকাটিকে একটি ‘বড় রিয়েল এস্টেট সাইট’ (বড় আবাসন এলাকা) মনে করেন তিনি।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ফিলিস্তিনিদের বা অন্য মানুষকে গাজায় বসবাসের অনুমতি দেওয়া একটি বড় ভুল। আমরা চাই না, হামাস আবার সেখানে ফিরে যাক। আমি মনে করি, গাজা একটি ‘বড় আবাসন এলাকা’। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত এটি দখলে নেওয়া। আমরা ধীরে ধীরে, অত্যন্ত ধীরস্থিরভাবে, কোনো ধরনের তাড়াহুড়া ছাড়াই এটি সংস্কার করবো। আমরা শিগগিরই মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনবো।’

জাতিসংঘের তথ্যানুসারে, ইসরায়েলের হামলায় গাজার ৯০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। তাদের অনেককেই বারবার জায়গা বদল করে সরে যেতে হয়েছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক একজন বড় আবাসন ব্যবসায়ী। তিনি গাজাকে ‘বিধ্বস্ত স্থান’ হিসেবে বর্ণনা করে এটি ‘সমতল’ ও ‘ঠিক’ করা হবে বলে মন্তব্য করেন।

ট্রাম্প আবারও পরামর্শ দেন, মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ‘সুন্দর জায়গায়’ বাড়িঘর করে দেবে। যুক্তরাষ্ট্র সফররত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওইদিনই প্রথম গাজা দখলে নেওয়ার কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকা দখল করবে এবং আমরা এটি নিয়ে একটি কাজ করবো।’

তখন থেকে ট্রাম্পের এমন পরিকল্পনার প্রশংসা করে আসছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। তিনি ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে ‘বৈপ্লবিক ও সৃষ্টিশীল দূরদৃষ্টিসম্পন্ন’ বলে মন্তব্য করেন।

শেয়ার করুন