৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৭:৪০:২৭ অপরাহ্ন


নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত
১ ফেব্রুয়ারি ওয়ার্ল্ড হিজাব ডে ও মে ২০২৫-কে আন্তর্জাতিক মুসলিম ঐতিহ্য মাস স্বীকৃত
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০২-২০২৫
১ ফেব্রুয়ারি ওয়ার্ল্ড হিজাব ডে ও মে ২০২৫-কে আন্তর্জাতিক মুসলিম ঐতিহ্য মাস স্বীকৃত আন্তর্জাতিক মুসলিম ঐতিহ্য মাস


নিউইয়র্ক স্টেট সিনেট ১ ফেব্রুয়ারিকে ওয়ার্ল্ড হিজাব ডে এবং মে ২০২৫ মাসকে আন্তর্জাতিক মুসলিম ঐতিহ্য মাস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ উদ্যোগ ধর্মীয় স্বাধীনতা, সাংস্কৃতিক মূল্যায়ন ও ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে নিউইয়র্কের প্রতিশ্রুতি আরো জোরালো করলো। গত ১৪ জানুয়ারি সিনেট রেজুলেশন নম্বর ৮৮ পাস করে নিউইয়র্ক স্টেটে ১ ফেব্রুয়ারিকে ওয়ার্ল্ড হিজাব ডে হিসেবে ঘোষণা করে। এ অর্জন সম্ভব হয়েছে সিনেটর রক্সান জে পার্সুডের দৃঢ় নেতৃত্ব ও ধর্মীয় অভিব্যক্তি এবং নারীর ক্ষমতায়নের প্রতি তার অবিচল সমর্থনের মাধ্যমে। নিউইয়র্ক ২০১৭ সাল থেকে ওয়ার্ল্ড হিজাব ডে পালন করে আসছে, যা অন্তর্ভুক্তি ও ধর্মীয় পরিচিতি উদযাপনের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে। মুসলিম প্রতিনিধিত্ব আরো সুসংহত করতে ২৮ জানুয়ারি সিনেট রেজুলেশন নম্বর ২৫৭ পাস করে মে ২০২৫-কে আন্তর্জাতিক মুসলিম ইতিহাস মাস হিসেবে ঘোষণা করে। এ ঐতিহাসিক স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে সিনেটর রবার্ট জ্যাকসনের অবদান উল্লেখযোগ্য, যিনি মুসলিম প্রতিনিধিত্বের পক্ষে সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

নিউইয়র্কে ২০২১ সাল থেকে বিশ্বহিজাব ডে অর্গানাইজেশনের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক মুসলিম ইতিহাস মাস পালন করছে। এই মাস মুসলিম সম্প্রদায়ের ঐতিহাসিক অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া, ভুল ধারণা দূর করা এবং ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সহায়তা করে।

বিশ্বহিজাব ডে অর্গানাইজেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও নাজমা খান এক বিবৃতিতে বলেন, এ স্বীকৃতি মুসলিম সম্প্রদায়ের দৃঢ়তা ও অবদানের সাক্ষ্য বহন করে। হিজাব নিয়ে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে, আর ওয়ার্ল্ড হিজাব ডে সে বিষয়ে সংলাপ ও বোঝাপড়ার সুযোগ তৈরি করে। একইভাবে আন্তর্জাতিক মুসলিম ইতিহাস মাস মুসলিমদের মূল্যবান অবদান তুলে ধরে, স্টেরিওটাইপ ভাঙে এবং ঐক্যের বার্তা ছড়ায়। আমরা সিনেটর রক্সান জে পার্সুড এবং সিনেটর রবার্ট জ্যাকসনের প্রতি কৃতজ্ঞ যারা এই স্বীকৃতিকে বাস্তবায়িত করেছেন। আমরা বিশ্বব্যাপী সবাইকে এই অর্জন উদযাপনের আহ্বান জানাই এবং গ্রহণযোগ্যতা ও সম্মানের ভিত্তিতে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিতে উৎসাহিত করি। তিনি বিশ্বহিজাব ডে অর্গানাইজেশন সব ব্যক্তি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সংগঠনকে আহ্বান জানিয়েছে মে মাসকে আন্তর্জাতিক মুসলিম ইতিহাস মাস হিসেবে উদযাপন করতে। আলোচনা, শিক্ষা কর্মসূচি বা সচেতনতা কার্যক্রমের মাধ্যমে মুসলিম সম্প্রদায়ের কণ্ঠ ও অর্জনকে আরো উজ্জ্বল করে তুলতে প্রত্যেক প্রচেষ্টাই গুরুত্বপূর্ণ।

কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনসের নিউইয়র্ক শাখা স্টেট সিনেটের রেজুলেশন নম্বর ২৫৭ পাসের স্বাগত জানিয়েছে, যা মে ২০২৫ মাসকে আন্তর্জাতিক মুসলিম ঐতিহ্য মাস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ রেজুলেশন মুসলিমদের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করেছে, যাতে তারা ইসলাম ধর্মের সমৃদ্ধ ও প্রামাণিক ইতিহাস নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে পারে এবং গবেষণা করতে পারে। এই মাসের আয়োজন মুসলিম সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব এবং সমাজ গঠনে তাদের পরিবর্তনশীল অবদানগুলোকে সামনে আনার লক্ষ্য নিয়ে পালিত হবে।

কেয়ার-নিউইয়র্কের নির্বাহী পরিচালক আফাফ নাসহার বলেন, এ রেজুলেশন নিউইয়র্কের ধর্মীয় বৈচিত্র‍্য উদযাপনের প্রতিফলন এবং এটি আমেরিকান মুসলিমদের কণ্ঠ আরো শক্তিশালী করার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ, যা তাদের বিরুদ্ধে যে পক্ষপাতিত্ব ও বৈষম্য রয়েছে তা প্রতিরোধে সাহায্য করবে। আমরা এই রেজুলেশনের পক্ষে আন্দোলন ও সমর্থনের জন্য গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক মুসলিম ঐতিহ্য মাসের জন্য সব সম্প্রদায়কে অংশগ্রহণ করতে আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ মাসটি মুসলিম ধর্ম সম্পর্কে বোঝাপড়া তৈরি করতে এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে একতা ও সংহতির সৃষ্টি করতে সহায়তা করবে।

কেয়ার-নিউইয়র্কের মিশন হলো নাগরিক অধিকার রক্ষা করা, ইসলাম সম্পর্কে বোঝাপড়া বাড়ানো, ন্যায়বিচার প্রচার করা এবং আমেরিকান মুসলিমদের ক্ষমতায়ন করা। সংগঠনটি মুসলিম সম্প্রদায়ের অবদানকে আরো জোরালোভাবে তুলে ধরতে এবং ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বহিজাব ডে অর্গানাইজেশন একটি অলাভজনক সংগঠন। হিজাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, স্টেরিওটাইপ দূরীকরণ এবং মুসলিম নারীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে। এ সংগঠন আন্তর্জাতিক মুসলিম ইতিহাস বা ঐতিহ্য মাস উদ্যাপনের নেতৃত্বেও রয়েছে, যা মুসলিম ঐতিহ্য ও অবদান উদ্যাপনের একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ।

শেয়ার করুন