৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৫:২১:৫৫ অপরাহ্ন


পিপল আপের নির্বাচনী সমাবেশে আবু জাফর মাহমুদ
নিজেদের অস্তিত্ব ও মর্যাদা রক্ষায় ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের ভোট দিন
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-১০-২০২৪
নিজেদের অস্তিত্ব ও মর্যাদা রক্ষায় ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের ভোট দিন প্রার্থীদের প্রতি সমর্থন ড. আবু জাফর মাহমুদের


আবারও মেতে উঠলো জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজা। গত প্রায় এক বছর ধরে ডেমোক্রেটিক রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেস পিপল আপ বাংলাদেশি আমিরকানসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনের বিভিন্ন পর্বের প্রচারণা ও উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ডেমোক্রেটিক প্রার্থীদের পক্ষের প্রচারণায় ডাইভারসিটি প্লাজা এখন এক অনন্য ক্ষেত্র। জাতীয় নির্বাচনের ১৬ দিন সামনে রেখে শনিবার সন্ধ্যায় নির্বাচনী সমাবেশ বা জিওটিভি র‍্যালির আয়োজন করলেন পিপল আপ প্রেসিডেন্ট, আসন্ন নির্বাচনে কুইন্স কাউন্টি কমিটি মেম্বার প্রার্থী স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে আমেরিকার রাজনীতি ও নির্বাচন সম্পর্কিত তথ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্যই এই উদ্যোগ। আমেরিকায় সাধারণ জনগণের পক্ষে রাজনীতি, ভোট ও প্রার্থীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার কোনো সুযোগ নেই। একজন ভোটার শুধু ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন, কিন্তু যাকে ভোট দিলেন তার সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ গড়ে উঠলো না। এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। 

তিনি ভোটারদের সামনে তুলে ধরেন, সব শ্রেণির মানুষ কেন ভোট দেবেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে। তিনি বলেন, কমলা হ্যারিস জো বাইডেন সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে এ পর্যন্ত যত উদ্যোগ নিয়েছেন, তার সবগুলো আমেরিকার সব জাতিগোষ্ঠীর জন্য দৃষ্টান্তমূলক। সর্বশেষ এক সপ্তাহ আগে ঘোষণা করেছেন, যাদের মেডিকেয়ার থাকবে, তারাই হোম কেয়ার সেবা পাবেন। আমরা মনে করি, এটি এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। ভাইস প্রেসিডেন্ট যেভাবে আমাদের বৃদ্ধদের জন্য, গরিবদের জন্য, মধ্যবিত্ত এবং স্বল্পআয়ী মানুষদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন, সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন আমরা সবাই ভোট দিয়ে তার প্রতি সমর্থন জানাবো। তিনি বলেন, যারা লুটেরা তারা পৃথিবীর জায়গায় জায়গায় লুট করে চলেছে, তারা স্পষ্টভাবে বলেছে, ক্ষমতায় এলে এদেশ থেকে মুসলমানদের তাড়িয়ে দেবে। অতীতেও অনেক রকম আস্ফালন করেছিল। সে কারণেই আমাদের সবাইকে সজাগ হতে হবে। 

তিনি ভোটাধিকার প্রয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, আমরা যত বেশি ভোট প্রদানে আগ্রহী হবো, তত বেশি আমাদের নাগরিক মর্যাদা বাড়বে।

তিনি বলেন, ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবার জিতবেন। জনগণের ভোট, ইলেকটোরাল ভোট ও উচ্চপর্যায়ের সমঝোতায় আগাম ফলাফল আমরা পেয়েছি, তাতে কমলা হ্যারিসের জয় সুনিশ্চিত। 

তিনি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ব্যালটের ডেমোক্রেটিক লাইনের প্রত্যেক প্রার্থীকে ভোট প্রদানের জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান। আবু জাফর মাহমুদ বলেন, আমরা যখন সিটিজেন হয়েছি, আমরা অঙ্গীকার করেছি আমেরিকার স্বার্থ সংরক্ষণ করবো। পৃথিবীর যেখানেই হোক আমেরিকার স্বার্থরক্ষা করে চলতে হবে আমাদের। আমেরিকার বৈদেশিক নীতি, আমেরিকার অর্থনীতি, রাজনীতি সবকিছুর সঙ্গে নিজেদের বোঝাপড়া একীভূত করতে হবে। প্রত্যেক নাগরিককে বিশ্বনেতৃত্বের শক্তি উপলব্ধি করতে হবে। আমেরিকায় থেকে যারা আমেরিকার বিরুদ্ধে ভূমিকা রাখছেন, আমেরিকার বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তারা বিশ্বাসঘাতক। এটি কখনোই বিশ্বাসী ও অঙ্গীকারাবদ্ধ নাগরিকের কাজ নয়। 

খোলা প্রাঙ্গণে ঝলমলে আলো আর এলইডি মনিটরে তথ্যবহুল প্রচারণায় সাধারণ মানুষের জন্য ছিল অনেক প্রাপ্তির উপকরণ। ছিল প্রামাণ্যচিত্র, কেন ভোট দেবেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের। 

একে একে নির্বাচিত কর্মকর্তারা এসে যোগ দেন এই আয়োজনে। নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি মেম্বার স্টিভেন রাগা বলেন, এটিই প্রথম অফিশিয়াল কোনো নির্বাচনী সমাবেশে তার যোগদানের কথা। তিনি পিপল আপ বাংলাদেশি, তথা বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর জন্য কী কী কার্যক্রম নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, সেসব বিষয় তুলে ধরে বলেন, এই সংগঠন নাগরিকদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করছে, তারা ভূপৃষ্ঠের অতি তাপ নিয়ে কাজ করছে, তারা সশস্ত্র সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কাজ করছে, এখানকার ছাত্রদের অধিকার ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানোর পক্ষে কাজ করছে, নাগরিকদের হোম কেয়ার ও সিডিপ্যাপ সেবা অব্যাহত রাখার জন্য কাজ করছে, সব নাগরিকের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য কাজ করে চলেছে। তিনি বলেন, আবু জাফর মাহমুদ এখানে অসাধারণ নেতৃত্বের এক দৃষ্টান্ত। আমরা এই সংগঠেনর সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করছি।

নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি মেম্বার জেসিকা গঞ্জালেস রোহাস তুলে ধরেন নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের গুরুত্ব। তিনি বলেন, একজন নাগরিকের ভোটাধিকার প্রয়োগের অধিকার আছে, এটি তার ক্ষমতা। একইভাবে যিনি ভোটার নন, তার ক্ষমতাও কম নয়। তিনি অবশ্যই প্রতিটি নির্বাচনী সমাবেশে যোগ দেবেন, প্রতিবেশীর দুয়ারে দুয়ারে যাবেন এবং ভোট চাইবেন। সবকিছুর সঙ্গেই তার অধিকার ও ক্ষমতা রয়েছে। প্রত্যেককেই এই ক্ষমতা প্রয়োগ করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে ছিলেন ইউএস কংগ্রেসওম্যান এওসির নির্বাচনী কর্মকর্তা পিয়া রহমান, ও অ্যাসেম্বলিম্যান স্টিভেন রাগার চিফ অব স্টাফ ভিক্টোরিয়া লেহী, ডেমোক্র্যাট রাজনীতিক, আগামীর কাউন্সিল ওম্যান প্রার্থী (ডিস্ট্রিক্ট ২১) এরিকা মনটাইয়া। 

নির্বাচনকে সামনে রেখে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের পক্ষে এমন নির্বাচনী সমাবেশের আয়োজনকে সময়োপযোগী বলে জানান, স্থানীয় সাংবাদিক ও সুধ‍ীবৃন্দ। বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিক মঈনুদ্দিন নাসের, জন্মভূমি সম্পাদক রতন তালুকদার, গ্লোবাল টাইমসের সম্পাদক রিমন ইসলাম, এনওয়াই কাগজের সম্পাদক মনওয়ারুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মহিবুল্লাহ পলাশ প্রমুখ। তারা তুলে ধরেন নির্বাচনী সমীকরণ ও ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের জয়লাভের সম্ভাবনার কথাও। 

অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল খোলা আকাশের নিচে মুক্তমঞ্চে সংগীত আয়োজন। শীতের রাতে তরুণ শিল্পী আলভানের কণ্ঠে গানের মূর্ছনা মুগ্ধ করে দর্শকদের। পরে বাংলাদেশের ভাটি অঞ্চলের মাটির সুর নিয়ে আসেন বাউলশিল্পী কালা মিয়া। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ট্রেড ইউনিয়ন নেতা মিলন রহমান ও জয় বাংলাদেশ মিডিয়ার সাংবাদিক আদিত্য শাহীন।

শেয়ার করুন