৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৯:২৩:৩৬ পূর্বাহ্ন


সালাহউদ্দিনের রহস্যঘেরা ভারতে অবস্থান আজও অজানা
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০৮-২০২৪
সালাহউদ্দিনের রহস্যঘেরা ভারতে অবস্থান আজও অজানা সালাহউদ্দিন আহমেদ


দীর্ঘকাল ধরে ভারতে আটক থাকা বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে বাংলাদেশে ফিরলেন। দীর্ঘ বলতে ভারতে তিনি ৯ বছর যাবৎ আটক ছিলেন। সালাহউদ্দিন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। গত ১১ আগস্ট দিল্লি থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে বেলা ২টা ১৬ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেন।

কিন্তু বিএনপির এ নেতার কোন দোষে জীবন থেকে ৯টি বছর হারিয়ে গেল। কে তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল, কীভাবে তিনি সীমান্তের ওপার গেলেন। কে নিয়ে গেল, সে রহস্য আজও অজানা। অথচ তার দোষ ও অপরাধ থাকলে তার বিরুদ্ধে মামলা হতে পারতো। আরো বেশি সময় বাংলাদেশের কারাগারে তিনি থাকতেন। স্বজনরা দেখতেন। কিন্তু পাসপোর্ট ছাড়া দেশের বাইরে যাওয়া একজন মুর্খও করবে না। সেখানে শিক্ষিত ও বিএনপির মতো একটি দলের সিনিয়র নেতা। সে থেকে আজ অবধি সালাহউদ্দিনের দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া বা সেখানে চলে যাওয়ার হেতু অজানা। কে তাকে নিয়ে যায়, এটা অজানাই থাকছে। সম্ভবত কোনোদিন বেরও হবে না। কারণ তাকে আবিষ্কার করা হয়েছে অসুস্থভাবে। তার জ্ঞান ছিল না। বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ সরকার তাকে ফিরিয়ে আনতে যথার্থ উদ্যোগও নেয়নি। দুই দেশের মধ্যে এতো ভালো সম্পর্ক, সেখানে একটা ছোট্ট বিষয় কীভাবে ঝুলে থাকলো সে প্রশ্নটাও উঠছে। 

এদিন বিমানবন্দরে কয়েক হাজার নেতাকর্মী বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়ে তাদের প্রিয় নেতাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান দলের ভাইস চেয়ারম্যান রবকত উল্লাহ বুলু, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ সময় কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সরকারবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিচয়ে সালাহউদ্দিনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। দীর্ঘ ৬২ দিন নিখোঁজ থাকার ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মেঘালয়ের পুলিশের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল, সালাহউদ্দিন শিলংয়ে উদ্ভ্রান্তের মতো ঘোরাঘুরি করার সময় লোকজনের ফোন পেয়ে তাকে আটক করা হয়। সালাহউদ্দিনকে আটক করার পর বৈধ নথিপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশের অভিযোগে দেশটির ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী, মামলা করে মেঘালয় পুলিশ। একই বছরের ২২ জুলাই ভারতের নিম্ন আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের দায়ে অভিযোগ গঠন করা হয়। সে মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে ২০১৮ সালে সালাহউদ্দিন খালাস পান। ভারত সরকার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তাকে সেখানেই থাকতে হয়।

পাসপোর্ট না থাকায় সালাহউদ্দিন আহমেদ ট্রাভেল পাস (ট্রাভেল পারমিট) নিয়ে দেশে ফিরেছেন। তিনি এ ট্রাভেল পারমিটের জন্য গৌহাটিতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে আবেদন করেন।

তবে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সালাহউদ্দিন আহমেদের দেশে ফেরার পথ সুগম হয়। আইনি জটিলতা কাটিয়ে এবার তিনি নিজ দেশে ফিরলেন।

শেয়ার করুন