৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ৬:২২:০৪ অপরাহ্ন


এই গণঅভ্যুত্থানের প্রধান নায়করা হচ্ছে বিপ্লবী ছাত্র, জনতা এবং সৈনিক
ফরহাদ মজহার
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৮-২০২৪
এই গণঅভ্যুত্থানের প্রধান নায়করা হচ্ছে বিপ্লবী ছাত্র, জনতা এবং সৈনিক


যারা আমার লেখা অনুসরণ করছেন, তারা বুঝতে চেষ্টা করুন। 

১. এই সরকারের মূলে রয়েছে গণঅভ্যুত্থান। এই গণঅভ্যুত্থানের প্রধান নায়করা হচ্ছে বিপ্লবী ছাত্র, জনতা এবং সৈনিক। অর্থাৎ সাধারণ সৈনিকদের সমর্থন ছাড়া কিছুতেই যতোটুকু পাওয়া গিয়েছে, ততোটুকু আমরা পেতাম না। ভুলে যাবেন না। সৈনিক ভাইয়েরা গুলি চালাতে অস্বীকার করেছে বলেই ফ্যাসিস্ট শাসক শেখ হাসিনা পদত্যাগ ও দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছে। নইলে বাংলাদেশ লাশের গোরস্থানে পরিণত হোত। অতএব সাধারণ সৈনিকদের গৌরবজনক অবদান স্বীকার করুন। 

২. আমরা বলেছি, কোন ভাবেই ফ্যাসিস্ট শক্তির বানিয়ে দিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ব্যবস্থার কাছে -- বিশেষত বর্তমান প্রেসিডেন্টের কাছে এই বিপ্লবকে বলি দেওয়া যাবে না। কিন্তু জনগণের দুষমন এবং ছাত্র-জনতা-সৈনিকদের মৈত্রীতে ভীত একটি প্রবল শক্তি বিজয়ী গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতার প্রতিনিধি হিশাবে একটি 'অন্তর্বর্তীকালীন বিপ্লবী জাতীয় সরকার' গঠন করতে দেয় নি। তারা আইন ও সংবিধানের দোহাই দিয়ে একটি 'অন্তর্বর্তী কালীন সরকার' গঠন করেছে।

৩.  অথচ বিদ্যমান সংবিধান ও আইনের অধীনে 'অন্তর্বর্তী সরকার' গঠনের কোন সুস্পষ্ট বিধান নাই। আইনের দোহাই দিয়ে ছাত্র-জনতা-সৈনিকদের মৈত্রীর ভিত্তিতে গণবিপ্লবকে কিভাবে পরাজিত করা হয় সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। প্রতিবিপ্লব কিভাবে সংঘটিত  হয় বুঝুন। 

৪. কেন এটা ঘটল? এর প্রধান কারণ একটি শক্তি দ্রুত নির্বাচন চেয়ে পুরানা কায়দায় দেশ চালাতে চায়, পুরানা মাফিয়া ও লুটেরাদের স্বর্গরাজ্য আবার প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তারা সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে শক্তিশালী গণপ্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে দেবে না, যেন বাইরের শত্রুর আগ্রাসন আমরা সকলে মিলে মোকাবিলা করতে পারি। বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশকে নতুন ভাবে তারা গঠন করতে দিতে চায় না। অর্থাৎ জনগণকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না এবং ছাত্র-জনতা-সৈনিকের মৈত্রীর ভিত্তিতে যে গণশক্তির উদ্ভব ঘটেছে তাকে তারা অংকুরেই বিনষ্ট করতে চায় -- তারা ছাত্র-জনতা-সৈনিকের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে। 

৫. এই শক্তি কোনভাবেই বাংলাদেশকে নতুন ভাবে গঠন করতে দেবে না। এরা গণবিপ্লবকে নস্যাৎ করে দ্রুত একটি নির্বাচন চায়, যেন তারা দ্রুত ক্ষমতায় যেতে পারে। তাই তারা একটি 'অন্তর্বর্তী সরকার' বানাতে চাইছে যার কাজ যতো দ্রুত সম্ভব একটি নির্বাচন দেওয়া। 

আমাদের কাজ কি?

যা অর্জন করেছি তা প্রাণপণ সংরক্ষণের চেষ্টা করা এবং কারা সরকারে আছেন তাকে গুরুত্ব না দিয়ে চলমান লড়াইয়ের প্রতি মনোযোগী থাকা। 'অন্তর্বর্তীকালীন সরকার'-কে অন্তর্বর্তীকালীন বিপ্লবী' সরকারে রূপান্তরিত করবার লড়াই চালিয়ে যাওয়া।

ফরহাদ মজহারের টাইম লাইন থেকে নেয়া-

শেয়ার করুন