৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১১:৪৭:৫৪ পূর্বাহ্ন


সরকার গণগ্রেপ্তারের মাধ্যমে ক্ষমতা রক্ষা করতে চাইছে
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-০৭-২০২৪
সরকার গণগ্রেপ্তারের মাধ্যমে ক্ষমতা রক্ষা করতে চাইছে গণগ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ


সারাদেশে অব্যাহতভাবে গ্রেপ্তার-গণগ্রেপ্তার ও দমন-পীড়ন নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, গণগ্রেপ্তার মানবাধিকারের চরম লংঘন। গণবিচ্ছিন্ন আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের পায়ের নীচে থেকে মাটি সরে যাওয়ায় গ্রেপ্তার-নির্যাতনের মাধ্যমে ক্ষমতার মসনদ রক্ষা করতে চাইছে, যেমনি করে একজন ডুবন্ত মানুষ খড়-কুঁটাকেও আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চায়। বাম গণতান্ত্রিক জোট, ফ্যাসিবাদ বিরোধী বাম মোর্চা ও বাংলাদেশ জাসদের সভায় একথা বলেন নেতারা।

বাম গণতান্ত্রিক জোট, ফ্যাসিবাদ বিরোধী বাম মোর্চা ও বাংলাদেশ জাসদ এর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের এক সভা গত ৩০ জুলাই মঙ্গলবার সিপিবি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিবি’র সভাপতি শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের সমন্বয়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, বাংলাদেশ জাসদ এর সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক কমরেড ইকবাল কবির জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, নয়াগণতান্ত্রিক গণমোর্চার সভাপতি কমরেড জাফর হোসেন, গণমুক্তি ইউনিয়নের আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন আহমেদ নাসু, সাম্যবাদী আন্দোলনের বেলাল চৌধুরী, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের সভাপতি মাসুদ খান, বাসদ (মাহাবুব) নেতা মহিন উদ্দিন চৌধুরী লিটন, সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের নজরুল ইসলাম, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা জয়দ্বীপ ভট্টাচার্য।

সভার প্রস্তাবে বলা হয়, দমন-নির্যাতন করে অতীতে কোন সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারেনি বর্তমান সরকারেরও শেষ রক্ষা হবে না। গণগ্রেপ্তারে সরকারের প্রতি গণঅসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে এবং সরকার সম্পূর্ণ গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রস্তাবে অবিলম্বে দমন-পীড়ন-নির্যাতন ও গণগ্রেপ্তার-পুলিশের গ্রেপ্তার বাণিজ্য বন্ধের জোর দাবি জানানো হয়।

সভার অপর এক প্রস্তাবে বলা হয়, সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন জেলা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়কদেরকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন, পরিবারের সদস্যদেরকে হুমকি দিয়ে এমনকি ঢাকার ডিবি কার্যালয়ে তুলে নিয়ে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামসহ ৬ সমন্বয়ককে তারা না চাইতেও কথিত নিরাপত্তা হেফাজতের নামে আটক রেখে, নির্যাতন ও ভীতি প্রদর্শন করে জোর পূর্বক আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা পাঠ করতে বাধ্য করছে যা সংবিধানে বর্ণিত অনুচ্ছেদ ৩৩ ও অনুচ্ছেদ ৩৫ (৪) এর সম্পূর্ণ লংঘন।

প্রস্তাবে বলা হয়, ইতিমধ্যে উচ্চ আদালতের বিচারকগণ ডিবি প্রধান হারুনের ভাতের হোটেলে আটককৃতদের খাওয়ানোকে জাতির সামনে ‘মশকরা’ করার সামিল বলে মন্তব্য করেছেন। যা গোটা দেশের জনগণেরই কথা। সভার প্রস্তাবে অবিলম্বে নাহিদসহ ৬ সমন্বয়ককে মুক্তি ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জোর দাবি জানানো হয়।

সভায় অবিলম্বে কারফিউ প্রত্যাহার, সেনাবাহিনী-বিজিবিকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-আবাসিক হল খুলে দেয়া, নিহতদের ক্ষতিপূরণ, হত্যাযজ্ঞের দায় নিয়ে সরকারের পদত্যাগ ও হত্যায় জড়িতদের বিচার ও শাস্তি দাবি করা হয়।

সভার প্রস্তাবে সরকার, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে দাবি আদায় না হওয়া এবং সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত রাজপথে থেকে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য ছাত্রসহ সর্বস্তরের সকল শ্রেণি পেশার মানুষ ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

শেয়ার করুন