১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার, ০৪:১৯:২৫ পূর্বাহ্ন


২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের সুযোগ হাতছাড়া করলো এনবিআর
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০৬-২০২৫
২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের সুযোগ হাতছাড়া করলো এনবিআর


২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সব ধরনের সিগারেটের দাম ও করহার অপরিবর্তিত রাখায় ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে সরকার এবং তরুণ জনগোষ্ঠী সিগারেট ব্যবহারে বিশেষভাবে উৎসাহিত হবে। তামাকবিরোধীদের প্রস্তাব অনুযায়ী, সিগারেট বাজারের প্রায় ৮০ শতাংশ দখলে থাকা নিম্ন এবং মধ্যমস্তরের সিগারেটকে একত্রিত করে সর্বনিম্ন খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণ করার পাশাপাশি অন্যান্য স্তরের সিগারেটের দাম বাড়ানো হলে রাজস্ব আয়ের এই সুযোগ হাতছাড়া হবে না এবং জনস্বাস্থ্যের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে।

প্রস্তাবিত বাজেটে ৬ষ্ঠ বারের মতো বিড়ির মূল্য এবং ১০ম বারের মতো এর সম্পূরক শুল্ক অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে, যা অত্যন্ত হতাশাজনক। জর্দা ও গুলের দাম এবং করহার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। তামাক ব্যবহারকারীদের ৫০ শতাংশেরও বেশি মানুষ ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করেন, যাদের অধিকাংশই দরিদ্র এবং নারী। মূল্যস্ফীতি এবং মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি বিবেচনায় নিলে এসব পণ্য আরো সস্তা ও সহজলভ্য হয়ে যাবে। দরিদ্র জনগোষ্ঠী বিশেষত নারীরা ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য ব্যবহারে উৎসাহিত হবে এবং তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বেড়ে যাবে।

প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেট প্রস্তুতকারকের নিট বিক্রয়মূল্যের ওপর অগ্রিম কর ৩ শতাংশের স্থলে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। বাণিজ্যিক আমদানিকারকের সিগারেট পেপার আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ১৫০ শতাংশের পরিবর্তে ৩০০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো ইতিবাচক পদক্ষেপ তবে তামাকপণ্যের দাম বৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট নয়।

প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় প্রজ্ঞার (প্রগতির জন্য জ্ঞান) নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, তামাকের কারণে দেশে প্রতিদিন ৪৪২জন মানুষ মারা যায়। তামাকবিরোধীদের কর সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে তামাকের ব্যবহার ও তামাকজনিত মৃত্যু কমবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ৩৫.৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। চূড়ান্ত বাজেটে তামাকবিরোধীদের প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে অতিরিক্ত রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে প্রায় ৯ লাখ তরুণসহ মোট ১৭ লাখের অধিক মানুষের অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে।

শেয়ার করুন