দীর্ঘ চার বছর পর ব্রুকলীনের কোনি আইল্যান্ডের পাঞ্জাব রেস্টুরেন্ট এন্ড পার্টি হলে অনুষ্ঠিত হলো কোম্পানীগঞ্জ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সাধারণ সভা। মাওলানা মোস্তফা কামালের কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন সবুজের সঞ্চালনায় এবং সভাপতি মাওলানা আব্দুল আলীম জিহাদী সভাপতিত্বে সাধারণ সভায় দীর্ঘ জটিলতার অবসান হবে বলে কোম্পানীগঞ্জবাসী মনে করেন।
দীর্ঘদিন আলাপ আলোচনার পর সমঝোতায় ঐক্যমত পৌঁছেন সাবেক সভাপতি সেলিম চৌধুরী বাবুল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক লতিফুর রহমান লিটন, সাবেক ট্রাস্টি প্রধান আবুল কালাম অন্য পক্ষে সাবেক ট্রাস্টি সদস্য সেলিম জাহিদ, সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন সবুজ এবং কোষাধ্যক্ষ কামরুল ইসলামের সমন্বয়ে অ্যাসোসিয়েশনকে সামনের দিকে পরিচালনা করার জন্য নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেন।
গত পাঁচ বছরে অ্যাসোসিয়েশন এর ৬৮ জন সদস্য ইন্তেকাল করেন, সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা মোহাম্মদ ইব্রাহিম। সাধারণ সভায় গত পাঁচ বছরের অডিট রিপোর্ট পেশ করেন কোষাধ্যক্ষ কামরুল ইসলাম এবং ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেন অডিট প্রধান মাস্টার শাহ আলম, সাথে ছিলেন অডিট সহকারী স্বপন মোস্তফা এবং নূর মোহাম্মদ বিএসসি।
বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও গ্রেটার নোয়াখালী সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ড প্রধান হাজী মফিজুর রহমান, সাবেক সভাপতি হাজী মোতায়েন হোসেন, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং সাবেক ট্রাস্টি প্রধান মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক লতিফুর রহমান লিটন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবু নাছের চৌধুরী, সাবেক ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য সেলিম জাহিদ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আলাউদ্দিন জাহাঙ্গীর, কার্যকরি সদস্য মহতাসেম বিল্লাহ সিরাজী এবং অডিট নিয়ে বক্তব্য দেন নাঈম টুটুল।
এক পর্যায়ে নাঈম টুটুল বক্তব্য দিতে গেলে সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং এক পর্যায়ে তা ধাক্কাধাক্কিতে রূপ নেয়। পরক্ষণে কমিটি এবং সিনিয়রদের হস্তক্ষেপে পরিবেশ শান্ত হয়।
নির্বাচন ২০২৪ পরিচালনা করার জন্য একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয় এবং নির্বাচন কমিশন আগামী ১৩ই অক্টোবর ২০২৪ নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেন। নির্বাচন কমিশনে আছেন মোহাম্মদ মুসা প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সহকারি নির্বাচন কমিশনবৃন্দ হলেন মাওলানা আব্দুস শহীদ, এএসএম মাইনুদ্দিন পিন্টু, মাওলানা নাঈম উদ্দিন ও মোহাম্মদ এ জিলানী। বর্তমানে অ্যাসোসিয়েশনে বৈধ সদস্য সংখ্যা হল ২১৬৮ যারা ২০২৪ এ ভোট প্রদান করতে পারবেন।
সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন সবুজ বক্তব্যে বলেন, আমরা সকল প্রতিকূলতার মাঝেও অ্যাসোসিয়েশনের ধারাবাহিক কাজগুলি করে যাচ্ছি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো এসোসিয়েশনের দ্বিতীয় বাড়ি পরিপূর্ণভাবে লোন পরিশোধ করা। বর্তমানে প্রতিমাসে আয় দুই বাড়ি থেকে ১৫৫০০ ডলার। নতুন করে ১০০০ কবরস্থান ক্রয়ের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া এবং গত পাঁচ বছরে ১.৫ মিলিয়ন ডলার কালেকশন করা এবং ৪২ জন সদস্যের জানাজা ও দাপনে অংশগ্রহণ করাসহ সর্বমোট ৬৮ জন সদস্যের বেনিফিট পরিশোধ করা। এ ছাড়াও পরিবারের পাশে থাকাসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চালু আছে বলেও তিনি জানান। তিনি সবাইকে আহবান করে বলেন, আসুন আমরা একটি ঐক্যবদ্ধ অ্যাসোসিয়েশন গড়ে তুলতে চেষ্টা করি এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এসোসিয়েশনকে গতিশীল করি।
নির্বাচন ২০২৪ উপলক্ষে সাধারণ সভায় তিনটি রুল পাস করা হয়। এক. ট্রাস্টি বোর্ড নিয়ে জটিলতার কারণে ১৩ সদস্যের একটি নির্বাচনী পর্যবেক্ষক কমিটি ঘোষণা করা হয়। যারা মূলত নির্বাচন কমিশনকে সার্বিক সহযোগিতা করবেন।
দুই. বর্তমান মামলা চালু বা ভবিষ্যতে যারা প্রথমে মামলা করিবেন মামলার দিন থেকেই তাদের সদস্যপথ স্থগিত থাকবে এবং মামলার জবাব দিতে খরচ এসোসিয়েশন বহন করবে। সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার আশিষ রঞ্জন ভৌমিক নির্বাচন করতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং নির্বাচনী ব্যয় অডিট কমিশনকে দিতে অস্বীকার করায় তার সদস্যপথ স্থগিত করা হয়।
সভাপতি মাওলানা আব্দুল আলিম জিহাদী সভা সমাপ্তিকালে সবাইকে নির্বাচনে আহ্বান করে অ্যাসোসিয়েশনের অতীত সুনাম রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে এবং সহযোগিতা করতে অনুরোধ করেন।