৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৯:১৬:৪২ অপরাহ্ন


কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার নিন্দা
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০৭-২০২৪
কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার নিন্দা কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলায় আহত হয়েছে অনেকে


বাসদ সমর্থক ফোরাম যুক্তরাষ্ট্র শাখার পক্ষে মো. জামান তপন এক বিবৃতিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হামলা ও আহত করার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি আদালতের দোহাই দিয়ে সময়ক্ষেপণ না করে ছাত্রদের কোটা সংস্কারের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। 

বিবৃতিতে জামান তপন বলেন, ছাত্ররা কোটাব্যবস্থার সংস্কার দাবি করলেও ২০১৮ সালে সরকার কোটাব্যবস্থা বাতিল করে পরিপত্র জারি করেছে, যা কারো কাম্য ছিল না। সম্প্রতি উচ্চ আদালতের রায়ে কোটাব্যবস্থা বাতিল, পরিপত্র বাতিল ঘোষণা করায় এর বিরুদ্ধে আবার ছাত্ররা আন্দোলনে নামে। সমাজের বিভিন্ন অনগ্রসর অংশকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে মূল স্রোতে নিয়ে আসার জন্য সারা দুনিয়াতেই কোটাব্যবস্থা চালু আছে। আবার এটা ঠিক যে কোটাব্যবস্থা চালু হয় তা ক্রমে বিলোপ সাধনের জন্য। সমাজের নারী, প্রতিবন্ধী, আদিবাসীসহ অনগ্রসর শ্রেণির জন্য কোটা পদ্ধতি থাকা প্রয়োজন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিদের সুবিধা দেওয়ার নামে ৩০ শতাংশ কোটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সেজন্য কোটা পদ্ধতির সংস্কারের দাবি যৌক্তিক। 

তিনি আরো বলেন, চীন সফর-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি বিরক্ত হয়ে ২০১৮ সালে কোটা পদ্ধতি সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার শপথ ভঙ্গ করেছেন। কারণ তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার সময় অঙ্গীকার করেছেন রাগ-অনুরাগের বশবর্তী হয়ে প্রধানমন্ত্রী কোনো কার্য সম্পাদন করবেন না। এছাড়া ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিদের চাকরি না দিয়ে রাজাকারদের নাতি-পুতিদের চাকরি দেবো?’ এর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের ছাত্র-যুবকদের উদ্দেশ্যেপ্রণোদিতভাবেই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শিবিরে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করে নির্যাতনের মাধ্যমে আন্দোলনকে দমন করতে চাইছেন। যার নগ্ন প্রকাশ ইডেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলা। গত ১৪ জুলাইয়ের সন্ত্রাসী হামলায় ছাত্র ফ্রন্টের সুস্মিতা মরিয়ম, অদিতি ইসলাম, ইনজামাম, প্রিয়া, ছাত্র ফ্রন্ট মার্কসবাদীর সায়মা আফরোজ, সুমিসহ প্রায় তিন শতাধিক ছাত্রছাত্রী আহত হয়েছে। এদিকে ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনকারীদের বাধা ও হামলা করেছে পুলিশ ও ছাত্রলীগ। এ হামলার উসকানিদাতা প্রধানমন্ত্রী নিজেই। এছাড়াও গত কয়েকদিনে আন্দোলনকারীদের নামে পুলিশ মিথ্যা মামলাও দায়ের করেছে। এটিকে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দমন-পীড়ন, নির্যাতন করে এ ন্যায়সংগত আন্দোলন দমন করা করা যাবে না। 

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ হামলা, মামলা, দমন-পীড়নের পথ পরিহার করে অবিলম্বে কোটা সংস্কারের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান এবং হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন। বিবৃতিতে জামান তপন সরকারের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক-জনতাকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বর্তমান এই ফ্যাসিবাদী সরকারের গণবিরোধী শাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে লড়াই জোরদার করার জন্য সর্বস্তরের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। 

শেয়ার করুন