প্রকৃতিক সৌন্দর্য্য, বনরাজি বেষ্টিত ছায়াঘেরা ও মনমুগ্ধকর স্থান বেথপেজ স্টেট পার্কে গত ৮ জুলাই প্রবাসের অন্যতম সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিয়ানীবাজার সমিতির বার্ষিক বনভোজনের আয়োজন ছিল। নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে বিয়ানীবাজারবাসির অংশগ্রহণে বনভোজন হয়ে উঠে উৎসবমুখর ও প্রাণের স্পন্দনে হৃদ্রতায় ভরপুর। প্রচন্ড গরমেও পিকনিকপ্রেমিদের দমাতে পারেনি। সুযোগ ও উসিলায় সবাই ছুটে আসেন বনভোজনে। বিশেষ করে নবীন ও বাচ্চারা অতি আগ্রহে বনভোজনে আসার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠে। সে দিন বিয়ানীবাজার সমিতির বনভোজন স্পট ঈগল পেভিলিয়ন ছিল লোকেলোকারণ্য। সব বয়সী মানুষের একত্রিত হয়ে উঠে পেভিলিয়ন কোলাহল আনন্দপূর্ণ ও মুখরিত। উচ্ছ্বাস- আনন্দে সবাই একাকার হয়ে যায়। বনভোজন স্পট হয়ে যায় মিলন মেলায়। সমিতির ব্যবস্থাপনা ছিল অত্যন্ত সুশৃঙ্খল, পরিপাটি ও সুন্দর সাজানো। পার্কের দুই দিকে পুরুষ ও মহিলার পৃথক পৃথক বসা এবং খেলাধুলোর ব্যবস্থা ছিল। স্কুল বন্ধ থাকার কারণে বনভোজনে আসা বাচ্চারা দৌড় ঝাপ, খেলাধুলায় মত্ত ছিল। পারিবারিক শৃঙ্খলা থেকে মুক্ত হয়ে বিহঙ্গের মত খোলা আকাশের নিচে যেন ডানা মেলে মনের সুখে বাতাসে উডে বেড়ানো। বনভোজনে আসা একে অন্যের হৃদ্রতার অনন্য বন্ধন লক্ষ্য করা যায়। সবাই গল্প-গুজবে মেতে উঠেন। অনেক জীবনের ফেলে আসা সোনালী দিনের স্মৃতি রোমন্থ করেন। একে অপরের স্মৃতি রোমন্থন মুগ্ধ হয়ে শুনেন।
প্রবাসের অন্যতম সামাজিক সংগঠন বিয়ানীবাজার সমিতির বনভোজনে প্রতিবার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আসেন। এবার বাংলাদেশ সোসাইটির আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী, তাদের কুশিলবদের উপস্থিতি ও কুশল বিনিময় বিয়ানীবাজার সমিতির বনভোজন আরো প্রাণবন্ত হয়ে উঠে। সূচনায় বনভোজন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মুহিবুর রহমান রুহুল ধন্যবাদ জানিয়ে স্বাগতিক বক্তব্য রাখেন। বনভোজনের আনন্দ সবাই উপভোগ করা, বনভোজনে আগত অতিথি আপ্যায়নে কোন রকম ত্রুটি না হওয়া, খেলাধুলা সঠিকভাবে পরিচালনার দিকে খেয়াল রাখা ইত্যাদি বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া সে সাথে কমিটির বিভিন্ন সদস্যদের কাছে ন্যস্ত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা হচ্ছে কিনা- তা পালনে সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন ছিলো চোখে পড়ার মত। মধ্যহ্ন ভোজে সবাই তাদের ভোজনের পেতে ত্রুটি-বিচ্যুতি যাতে না হয় সে দিকে সজাগ দৃষ্টি ও খোঁজ খবর নেয়ার জন্য সমিতির বর্তমান সহ-সভাপতি মুহিবুর রহমান রুহুলের কার্যক্রম প্রশংসার দাবিদার। সব চেয়ে আকর্ষণীয় ছিলো সভাপতি র্যাফেল ড্র’র বিভিন্ন পুরস্কারের নাম ও স্পন্সরকারীদের নাম উল্লেখ করে র্যাফেল ড্র’র টিকেট কেনার জন্য উৎসাহ প্রদান। হিসাব পুংখানুপুংখভাবে সংরক্ষিত করেন কোষাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান দুখু।
বনভোজনে খেলাধুলা ও র্যাফেল ড্র। ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ছিলো বাচ্চাদের চিত্রাঙ্কন, ফুটবল খেলা, মহিলাদের মিউজিকেল চেয়ার, বাচ্চাদের দৌড় ইত্যাদি। র্যাফেল ড্র’তে ১ম পুরস্কার নগদ ২ হাজার ডলার, ২য় পুরস্কার আই ফোন ১৫ প্রো মেক্স, ৩য় পুরস্কার নিউইয়র্ক-ঢাকা-নিউইয়র্ক এয়ার টিকেট, ৪র্থ পুরস্কার ৬৫ ইঞ্চি স্মার্ট এলইডি টিভি, ৫ম পুরস্কার ৬৫ ইঞ্চি স্মার্ট এলইডি টিভি, ৬ষ্ঠ পুরস্কার ল্যাপটপ, ৭ম এ্যাপেল ওয়াচ, ৮ম পুরস্কার ডিপ ফ্রিজ, ৯বম পুরস্কার পারফিউম সেট, ১০ম পুরস্কার এয়ার কুলার, ১১তম পুরস্কার নিনজা কফি মেশিন, ১২তম পুরস্কার লিনাক্স ডিনার সেট, ১৩তম পুরস্কার অ্যাপেল এয়ার প্যাড, ১৪তম পুরস্কার ভ্যাকুম মেশিন, ১৫তম ১ সেট পাঞ্জাবি ও শাড়ি।
মধ্যহ্ন ভোজ শেষে খেলাধুলায় অংশগ্রহণকারী ও র্যাফেল ড্রতে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আব্দুল মান্নান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সেক্রেটারী রেজাউল আলম অপু। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন উপদেষ্টা হারুন মিয়া, মোজাহিদুল ইসলাম, ফখর উদ্দীন, ফখরুল ইসলাম, গহর চৌধুরী কিনু। বনভোজনে বাংলাদেশ সোসাইটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দীকি, সোসাইটির বর্তমান কোষাধ্যক্ষ নওশাদ হোসেন, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম, সাবেক কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক উপদেষ্টা আব্দুল খালিক লালু, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সভাপতি বদরুল হোসেন খান, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক উপদেষ্টা আজীজুর রহমান পাখী, বাংলাদেশ স্পোর্টস কাউন্সিলের সভাপতি হাজী এনাম, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সভাপতি বুরহান উদ্দীন কপিল, সাবেক উপদেষ্টা হাজী শামছুল ইসলাম, সাবেক সেক্রেটারী ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, বাংলাদেশ সোসাইটির সিনিয়র সহ সভাপতি দেওয়ান মহিউদ্দিন, সহ সভাপতি ফারুক চৌধুরী, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক সভাপতি মাসুদুল হক ছানু, সাবেক সভাপতি মোস্তফা কামাল, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সেক্রেটারী মিছবাহ আহমদ, গোলাবশাহ সমাজ কল্যাণ সমিতির সভাপতি শামছুল হক বেবুল, সেক্রেটারী জয়নাল আহমদ, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল হোসেন, সমিতির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ তালহা, মোহাম্মদ তুলন, সমিতির সাবেক দপ্তর সম্পাদক আব্দুল হামিদ, সমিতির সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক ইফজাল আহমদ, সমিতির সাবেক মহিলা সম্পাদক নাজমা বেগম, মিশিগান থেকে আগত মোহাম্মদ রিপন।
সমিতির বনভোজনকে সুন্দর ও স্বার্থক করার জন্য সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন বনভোজন কমিটির সদস্য সচিব রাজু আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল কবির রুবেল, ক্রীড়া সম্পাদক জামিল আহমদ, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক ফয়েজ আহমদ, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক হাফসা ফেরদৌস হেলেন, কার্যকরি সদস্য মাহবুব উদ্দীন, মোহাম্মদ আমিন উদ্দীন, মাসুদুর রহমান, রেজওয়ান আহমদ, ফরহাদ হোসেন, ছিদ্দিক আহমদ,শামছুল আলম শিপলু, আবু রাসেল, ইকবাল হোসেন, শরীফ আহমদ।
অনুষ্ঠান শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন।