১৮ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার, ০১:৫০:৪৯ পূর্বাহ্ন


বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সমাবেশে জোহরান মামদানি
আমরা নতুন ইতিহাস গড়তে যাচ্ছি
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-১০-২০২৫
আমরা নতুন ইতিহাস গড়তে যাচ্ছি বক্তব্য রাখছেন জোহরান মামদানি


নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি সকলকে সজাগ থাকার উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেন, ৪ নভেম্বর আমরা নতুন ইতিহাস গড়তে যাচ্ছি। তাই কোনো ধরনের অপপ্রচারণায় বিভ্রান্ত না হয়ে ব্যালট যুদ্ধে বিপুল বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে। যেমনটি দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের নির্বাচনে আপনারা আমাকে দিয়েছেন। জোহরান উল্লেখ করেন, আমরা ১৩ পয়েন্টের ব্যবধানে ধরাশায়ী করেছি নিউইয়র্কের সাবেক গভর্ণর এবং প্রয়াত গভর্নরের পুত্রকে (ক্যুমো)। এরপরও তিনি থাকেননি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। তিনি আপনাদের প্রত্যাশাকে ধূলিসাৎ করতে চান। আপনাদের এগিয়ে চলাকে থামিয়ে দিতে চান। আমি এবং আপনারা যাতে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম না হোন সে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

‘জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন’ (জেবিবিএ) এবং ‘বাংলাদেশিজ ফর জোহরান’-এর যৌথ উদ্যোগে ৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় সানাই পার্টি হলে ব্যবসায়ী-কর্মজীবী প্রবাসীদের এক সমাবেশে সিটি মেয়র নির্বাচন ঘিরে যে উত্তেজনা বিরাজ করছে সেদিকে ইঙ্গিত করে জোহরান মামদানি বলেন, কয়েক সপ্তাহ আগে এ স্থানেই আপনাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে বিজয়ের যে জয়গানে মিলিত হয়েছিলাম, আজকের সমাবেশ থেকে এই সংকল্প উচ্চারিত হচ্ছে। এটাই আমাদের লক্ষ্য অর্জনকে ছিনিয়ে আনতে সহায়তা করবে। কারণ আমরা সকলের বসবাসের উপযোগী একটি শহর গড়তে চাই।

নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে প্রথম মুসলমান প্রার্থী জোহরান আরো উল্লেখ করেন, বিশ্বে সবচেয়ে ব্যয়বহুল এই সিটিকে কঠোর পরিশ্রমী-খেটে খাওয়া অভিবাসীসহ সবার বসবাসের উপযোগী করার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে আসছে ৪ নভেম্বরের নির্বাচনেও সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আজকের এই সমাবেশে সর্বস্তরের বাংলাদেশির সমাগম থেকে আমি সেই স্বপ্নের পরিপূরক পথেই রয়েছি বলে মনে করছি। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং মুসলমান ও দক্ষিণ এশিয়ান ভোটারকে দলে দলে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে হবে। জোহরান বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছি নিউইয়র্ক সিটিকে সত্যিকারের স্বপ্নের শহরে পরিণত করতে। নিউইয়র্ক সিটির মেয়র হিসেবে একজন মুসলমানকে নির্বাচিত করার মধ্য দিয়ে নয়া ইতিহাসের সাক্ষী হওয়ার জন্যে আমরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছি।

‘বাংলাদেশিজ ফর জোহরান’-এর সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহানের সূচনা বক্তব্যের পর জেবিবিএর প্রেসিডেন্ট গিয়াস আহমেদের সভাপতিত্বে এ নির্বাচনী সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন-বাংলাদেশ সোসাইটির বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের পরিচালক ইমাম শামসী আলী, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, জেবিবিএর সেক্রেটারি তারেক হাসান খান প্রমুখ। সবাই মামদানিকে বিপুল বিজয় দিতে পরস্পরের সহযোগী হয়ে কাজের সংকল্প ব্যক্ত করেছেন। এ সময় অতিথি হিসেবে মঞ্চে আরো উপবিষ্ট ছিলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার অ্যাট লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, অ্যাম্পায়ার কেয়ার এজেন্সির সিইও এবং আবাসন ব্যবসায়ী নুরুল আজিম, বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, সিনিয়র সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান, সহ-সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুল এবং সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।

ডেমোক্রেটিক পার্টির বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস পুনর্নির্বাচনের দৌড় থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আহবানে। কারণ সবাই জরিপেই ক্যুমো এবং অ্যাডামসের চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছেন জোহরান। জোহরান হচ্ছেন ট্রাম্পের ভাষায় ‘সমাজতান্ত্রিক ডেমোক্র্যাট’ অথবা চরমপন্থি ডেমোক্র্যাট। তাই তাকে যে কোন উপায়ে পরাজিত করতে না পারলে নিউইয়র্ক সিটি সব ফেডারেল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে বলেও হুমকি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এই সিটির বাংলাদেশি তথা মুসলিম ভোটাররা জোট বেঁধেছেন জোহরানের পক্ষে। উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সিটির রেজিস্টার্ড ভোটারের মধ্যে দু’লাখের মতো মুসলমান রয়েছেন। দক্ষিণ এশিয়ান হিসেবে ৩ লাখের বেশি। উগান্ডায় মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করায় আফ্রিকান আমেরিকানদের একটি অংশ ছাড়াও হিসপ্যানিক ও নতুন প্রজন্মের ভোটারের সমর্থনও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে জোহরানের প্রতি।

শেয়ার করুন