বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইনের মামলা


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 03-09-2025

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইনের মামলা

মিজৌরি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ড. মুন চয়ের বিরুদ্ধে একটি শিক্ষার্থী সংগঠন মিজৌরি স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের বিশ্ববিদ্যালয়ের হোমকামিং প্যারেড থেকে রাজনৈতিক কারণ দেখিয়ে মিজৌরি স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন-কে একতরফাভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর অধীনে থাকা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার স্পষ্ট লঙ্ঘন। এই মামলাটি মুসলিম অধিকার ও অ্যাডভোকেসি সংস্থা কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (কেয়ার ) দায়ের করেছে এবং এটি মিজৌরির কলাম্বিয়া শহরে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেছে মুসলিম অধিকার ও অ্যাডভোকেসি সংস্থা কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (কেয়ার)। গত ২৭ আগস্ট বুধবার মিজৌরির কলাম্বিয়া শহরে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কেয়ার মামলার ঘোষণা দেয়। এর আগে সংস্থাটি ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের বিরুদ্ধেও অনুরূপ একটি মামলা জিতে নেয়, যেখানে একটি ফিলিস্তিনি স্মরণ অনুষ্ঠানের অনুমতি না দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়কে এক লক্ষ ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে হয়েছিল।

আদালতের নথি অনুযায়ী মিজৌরি স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন-এর হোমকামিং প্যারেডে অংশগ্রহণের আবেদন প্যারেড কমিটি এবং মিজৌরি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছিল। তাদের পরিকল্পনা ছিল একটি ফ্লোটের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি সংস্কৃতি তুলে ধরা, যার মধ্যে ছিল ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশনা, ফিলিস্তিনি মিষ্টি বিতরণ এবং সিসফায়ার নাউ ও স্টপ দ্য জেনোসাইড লেখা দুটি ব্যানার প্রদর্শন। তবে আবেদন অনুমোদনের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মিজৌরি স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন -এর সঙ্গে একটি আলাদা বৈঠকের আয়োজন করে, যেখানে অন্য কোনো ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে এ ধরনের বৈঠক হয়নি। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ইন্টারিম ডিন অব স্টুডেন্টস মিশেল ফ্রোসে, যিনি প্রেসিডেন্ট চয়ের প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেন। মিজৌরি স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন অভিযোগ করেছে, তাদের আবেদন বিশেষ পর্যালোচনার আওতায় নেওয়া হয়, যার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেন প্রেসিডেন্ট চয় নিজে।

প্যারেডের তিন দিন আগে প্রেসিডেন্ট চয় মিজৌরি স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইনকে ই-মেইলের মাধ্যমে জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে তাদের আবেদন বাতিল করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন সংগঠনের ইভেন্টে সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে, তাই নিরাপত্তার কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে মিজৌরি স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন দাবি করেছে, তারা কোনো জাতীয় সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। মিজৌরি স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন -এর সাবেক সভাপতি ইস্লিন আতাল্লাহ বলেন, আমাদের সংগঠনের সঙ্গে জাতীয় স্তরের কোনো সম্পর্ক নেই। অন্য কোথাও ঘটেছে বলে আমাদের বাদ দেওয়া সম্পূর্ণ পক্ষপাতদুষ্ট ও অযৌক্তিক।

মামলার নথিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, হোমকামিং প্যারেডে একাধিক রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন অংশ নেয়, যেমনস্থানীয় নির্বাচনী প্রার্থী, মিড-মিজৌরি প্রাইড ফেস্ট এবং মামস ডিম্যান্ড অ্যাকশন ফর গান সেন্স ইন আমেরিকা। এমনকি দুটি নাম না জানা ছাত্রসংঘের ফ্লোটে প্রকাশ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণাও চালানো হয়। কেয়ারের আইনজীবী আহমাদ কাকি বলেন, হোমকামিং প্যারেড একটি উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম, যেখানে রাজনৈতিক বার্তা প্রদানের সুযোগ থাকে। শুধু মিজৌরি স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইনের মতামতকে নিষিদ্ধ করা মতপ্রকাশের অধিকার লঙ্ঘন এবং এটি স্পষ্টভাবে ভিউপয়েন্ট ডিসক্রিমিনেশন।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র ক্রিস্টোফার অ্যাভ এক বিবৃতিতে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন সংগঠনের সম্পৃক্ত ইভেন্টে যেসব বিশৃঙ্খলা ঘটেছে, তা বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়। তিনি আরো জানান, হোমকামিংয়ের সময় মিজৌরি স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইনের এক সিনিয়র সদস্যের বিরুদ্ধে উদ্বেগজনক আচরণের অভিযোগ ছিল এবং তাকে পরে ক্যাম্পাস থেকে বহিষ্কার করা হয়।

কেয়ার জানিয়েছে, মামলার মাধ্যমে তারা আদালতের কাছ থেকে স্বীকৃতি চায় যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক ছিল। একই সঙ্গে প্যারেডের প্রস্তুতিতে ব্যয় হওয়া অর্থের ক্ষতিপূরণ এবং ২০২৫ সালের হোমকামিং প্যারেডে অংশগ্রহণের অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে। মিজৌরি স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন ইতোমধ্যে ২০২৫ সালের প্যারেডে একই পরিকল্পনা নিয়ে আবেদন করেছে, যার সময়সীমা ছিল বুধবার রাত ১১:৫৯ পর্যন্ত। কেয়ার বলছে, আমরা বিশ্বাস করি এটি একটি স্পষ্ট ফার্স্ট অ্যামেন্ডমেন্ট লঙ্ঘন। শিক্ষার্থীদের নিজ দেশে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)