নিউইয়র্কে বিশ্ব ফোর টুয়েন্টি দিবস


হাবিব রহমান , আপডেট করা হয়েছে : 12-06-2025

নিউইয়র্কে বিশ্ব ফোর টুয়েন্টি দিবস

আমরা প্রায়ই কথায় কথায় বলি বেটা তুই একটা ফোর টুয়েন্টি (৪২০)। অনেকেই ছলচাতুরী বা অসাধু কাজের জন‍্য এটিকে গালি হিসেবেই ব্যবহার করে থাকেন। কেউ বাটপারি করলে বলতো ৪২০, আবার কেউ কোনো দুই নম্বরি করলেও বলতো ৪২০। কিন্তু আমরা হয়তো অনেকেই জানি না প্রতি বছর ২০ এপ্রিল তারিখে নিউইয়র্কসহ বিশ্বের অনেক দেশে আড়ম্বরের সঙ্গে ৪২০ বা ফোর টুয়েন্টি দিবসটি পালন করা হয়। পশ্চিমা বিশ্বে এই সংখ্যা গাঁজা সংস্কৃতির কোড ভাষা।

বিশ্বের কিছু দেশে গাঁজা উৎপাদন, সেবন বৈধ হলেও বেশির ভাগ দেশেই এখনো এটি নিষিদ্ধ। তবে প্রতি বছর ২০ এপ্রিল রীতিমতো উৎসব করে গাঁজা সেবন করেন পশ্চিমের অনেকে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এদিন আয়োজন করে প্রকাশ্যে গাঁজা সেবন করা হয়। সঙ্গে থাকে সংগীতসহ নানা আয়োজন। দিনব্যাপী গাঁজা সেবন চলে বলে দিনটিকে ইংরেজিতে অনেকে ‘উইড ডে’ বলে। কিন্তু এই আয়োজন কিংবা গাঁজার সঙ্গে ৪২০-এর সম্পর্ক কী? কেনই বা একে ৪২০ বলা হয়? এ নিয়ে নানা ধরনের গল্প শোনা যায়। সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য গল্পটি হাইস্কুলপড়ুয়া একদল বন্ধুর।

১৯৭০-এর দশকে ক্যালিফোর্নিয়ার মারিন কাউন্টির সান রাফায়েল হাইস্কুলে পড়ুয়া একদল ছাত্র নিজেদের ডাকতেন ‘দ্য ওয়ালডোস’ (ঐশ্বরিক ক্ষমতাসম্পন্ন) নামে। শোনা যায়, ১৯৭১ সালে তারা প্রতিদিন বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে ক্যাম্পাসে স্থাপিত অণুজীব বিজ্ঞানী লুই পাস্তুরের ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হয়ে গাঁজা সেবন করতেন। গাঁজা নিষিদ্ধ হওয়ায় তারা সবার সামনে এ নিয়ে কথা বলতে পারতেন না। তাই শুধু ‘৪:২০ লুই’ বললেই ওয়ালডো গ্যাংয়ের সদস্যরা বুঝে যেতেন। পরবর্তী সময়ে ওই ‘৪:২০ লুই’ কোড থেকে ‘লুই’টুকু বাদ দিয়ে কোড দাঁড়ায় ৪:২০।

ওয়ালডো গ্যাংয়ের এক সদস্যের ভাই ছিলেন তৎকালীন জনপ্রিয় ব্যান্ড গ্রেটফুল ডেডের বেস গিটারিস্ট ফিল লেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। মার্কিন সংবাদমাধ্যম হাফিংটন পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফিল লেশ নিজেই এই গল্পটা বলেছিলেন। মূলত গ্রেটফুল ডেড ব্যান্ডের মাধ্যমেই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এই কোড।

ওয়ালডোদের একজন স্টিভ ক্যাপার। তার বয়স এখন ৬৯ বছর। তিনি বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, ‘কীভাবে আমাদের একটা কোড এতো বড় আকার পেলো তা একটি বিস্ময় বৈকি! কত ট্রেন্ডই তো শুরু হয়, আবার হারিয়েও যায়। কিন্তু ৪২০ এখনো টিকে আছে।’ ৪২০ কোডটির উদ্ভাবক কারা সে ব্যাপারে অনেকটা নিশ্চিত হওয়া গেলেও ৪২০-কে এমন উৎসবে কে পরিণত করেছে তা আজও অজানা।

যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঙ্গরাজ্যেই গাঁজা এখন বৈধ। ২৪টি অঙ্গরাজ্যে মানুষ বিনোদনের জন্য গাঁজা সেবন করতে পারে এবং ১৪টি অঙ্গরাজ্যে শুধু চিকিৎসকের পরামর্শে গাঁজা গ্রহণ করা বৈধ। তবে জো বাইডেনের প্রশাসন গাঁজাকে ‘কম বিপজ্জনক’ তকমা দিতে চেয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসনও এ ইস্যুতে আগের প্রশাসনের সঙ্গে অনেকটাই একমত।

জানালার দাম ৩০ লাখ ডলার!

নিউইয়র্কে আমেরিকার চিত্রশিল্পী লুই কমফোর্ট টিফানীর কাচের কারুকাজে আঁকা প্রস্ফুটিত ফুল, বাঁকা নদী, দূরের পাহাড়ে আলোছায়ার মিতালি দিয়ে করা ‘গদার মেমোরিয়াল উইন্ডো’ নামের জানালাটি নিলামে উঠে ১২ জুন। জানালাটির প্রাথমিক মূল‍্য ধরা হয়েছিলো ২০-৩০ লাখ ডলার। গদার মেমোরিয়াল উইন্ডো নামের জানালাটি তৈরি হয়েছিল ১৯১০ সালে। কাচের কারুকাজে অনন্য এবং ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ জানালাটি এখনো শিল্পবোদ্ধাদের গভীর আগ্রহের বিষয়। টিফানির জানালাগুলো সাধারণত গির্জা, প্রাসাদ কিংবা সমাজের অভিজাতদের আলিশান বাড়িতে স্থাপন করা হতো। ফলে সাধারণ মানুষের জন্য এগুলোর মালিক হওয়ার সুযোগ বরাবরই অত্যন্ত বিরল। তবে গত কয়েক বছরে টিফানি স্টুডিওর কিছু জানালা বিশ্ববিখ্যাত জাদুঘর ও নিলামঘরগুলোয় বিপুল দামে বিক্রি হয়েছে। ২০২৩ সালে নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্ট তাদের আমেরিকান উইংয়ে প্রদর্শনের জন্য একটি বিশাল টিফানি জানালা সংগ্রহ করে। এরপর ওহাইওর একটি চার্চ থেকে সংগ্রহ করা হয় ইমপ্রেশনিস্টিক ঘরানায় তৈরি আরো একটি জানালা। ১ কোটি ২৪ লাখ ডলারে বিক্রি হওয়া সেই জানালাটি টিফানির যে কোনো শিল্পকর্মের দামের রেকর্ড ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায়ই বিশ্বখ্যাত নিলাম প্রতিষ্ঠান ক্রিস্টিজ আগামী ১২ জুনের ডিজাইন সেলে নিলামে তুলতে যাচ্ছে গদার মেমোরিয়াল উইন্ডো নামের জানালাটি।

মেরি এডিথ জেনকস গদার নামে এক নারী তার প্রয়াত স্বামী উইলিয়াম গদারের শোককে স্মরণীয় করে রাখতে জানালাটি তৈরি করিয়েছিলেন। রোড আইল্যান্ডের ইস্ট গ্রিনউইচে অবস্থিত একটি গির্জার দেওয়ালে জানালাটি স্থাপন করাই ছিল তার উদ্দেশ্য।

এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে সেন্ট লুকস চার্চের দেওয়ালে থাকা জানালাটি এখন বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে গির্জা কর্তৃপক্ষ। জানালাটি বিক্রি থেকে পাওয়া অর্থ গির্জার মিশন ও ভবিষ্য তহবিলের কাজে ব্যয় হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

ইরানি রেস্টুরেন্ট-মিরাজ হেলদি গ্রিল (হালাল)

ইরানের খাবার পারসিয়ান খাবার বলে পরিচিত। ইরানি রান্না পদ্ধতিতে কোজিয়ান, তুর্কি, লেভান্তীয়, গ্রিক, মধ্য এশিয়া এবং রাশিয়ান পদ্ধতি মিলেমিশে একাকার। এশীয় মুগল রাজবংশের হাত ধরে ইরানি রন্ধনবিদ্যা পাক ভারতীয় রন্ধনপ্রণালিতে গৃহীত হয়েছে।

সাধারণত ইরানের প্রধান খাবারের মধ্যে আছে ভাত, ভেড়ার মাংস, মুরগির মাংস, মাছ, পেঁয়াজ এবং বিভিন্ন ধরনের শাক। ইরানের খাবারে বাদাম, তাল, ডালিম, কুইন, পরুনিস, খুরফু, এবং রেসিনসের মতো ফলের সঙ্গে সবুজ গুল্ম ব্যবহার করা হয়। ইরানি মসলার মধ্যে আছে জাফরান, শুকনা লেবু, দারুচিনি এবং পেসলে যা বিশেষ খাবারের সঙ্গে ব্যবহৃত হয়। ইরানের কাবার, স্টু এবং ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো বিশ্ববিখ্যাত।

ইরানি খাবারের টেস্ট নিতে আজ আমরা এসেছি লং আইল্যান্ডের একটি ইরানিয়ান রেস্টুরেন্টে। নাম মিরাজ হেলদি গ্রিল এবং তা অবশ্যই হালাল।

এখানে পার্সিয়ান, ইরানিয়ান এবং মেডিটেরিয়ান খাবার পাওয়া যায়। বেস্ট পার্সিয়ান হালাল ফুডের জন্য বিখ্যাত। লং আইল্যান্ড এবং ম্যানহাটানে মিলে দুটো শাখা রয়েছে।

ভোজনরসিক হিসেবে আমি খাবারের সন্ধানে সিটির বিভিন্ন এলাকায় ঢুঁ মারি। তবে কোনো পার্সিয়ান বা ইরানিয়ান রেস্টুরেন্টে এবারই আমার প্রথম পদার্পণ। পার্সিয়ান খাবারে এটাই আমার প্রথম অভিজ্ঞতা। ঢুকতেই চোখে পড়লো বেশ কয়েকটি ইরানিয়ান পরিবারকে যারা রাতের খাবার খেতে এসেছেন।

খাবারের তালিকায় আছে নানা রকম স্যুপ, কাবাব, চিকেন এবং ভেড়ার মাংসের নানা আইটেম, ভেগান ফুড, স্যান্ডউইচ, হোম মেড পেস্ট্রি।

আছে পার্সিয়ান টি, গ্রিন টি, টার্কিশ কফি, আইসক্রিম ইত্যাদি।

যারা গতানুগতিক খাবারের বাইরে গিয়ে একটু রুচিবদল করতে চান, তারা ইরানি খাবার চেখে দেখতে পারেন।

(সতর্কবাণী : এই রেস্টুরেন্টে ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করা হয় না। তাই ক‍্যাশ সঙ্গে নিয়ে যাবেন।

ঠিকানা:

১৭১ হিলসাইড অ্যাভিনিউ, উইলস্টন পার্ক, নিউইয়র্ক ১১৫৯৬

ফোন : ৫১৬-৭৪৭-৩১৮১


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)