বাচ্চা নিলেই মিলবে ৫ হাজার ডলার


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 23-04-2025

বাচ্চা নিলেই মিলবে ৫ হাজার ডলার

যুক্তরাষ্ট্রে জন্মহার ক্রমাগত নিম্নমুখী। ২০২৪ সালে দেশটির জন্মহার ছিল প্রতি এক হাজার জন নারীর মধ্যে মাত্র ১.৬- যেখানে স্থিতিশীল জনসংখ্যা বজায় রাখতে প্রয়োজন ২.১ হার। এই প্রেক্ষাপটে হোয়াইট হাউস এমন কিছু প্রণোদণামূলক নীতিমালা বিবেচনা করছে, যার লক্ষ্য নারীদের সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করা এবং ভবিষ্যতের কর্মশক্তি ও অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করা। আলোচ্য প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে মূলত বিবাহিত দম্পতিদের জন্য ৫ হাজার ডলারের ‘বেবি বোনাস’, যা সন্তানের জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই দেওয়া হবে। এছাড়া নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করতে ‘ন্যাচারাল ফার্টিলিটি’ শিক্ষা প্রবর্তনের পরিকল্পনা রয়েছে, যার মাধ্যমে প্রাকৃতিকভাবে গর্ভধারণের পদ্ধতি শেখানো হবে। ছয় বা ততোধিক সন্তানের জননীদের জন্য ‘মাদারহুড মেডেল’ নামক একটি জাতীয় পুরস্কার প্রবর্তনের চিন্তা করা হচ্ছে। এই জাতীয় পুরস্কার মূলত বিবাহিত দম্পতিদের জন্ম নেয়া সন্তানদের জননীদের দেয়া হবে। একই সঙ্গে বিবাহিত এবং সন্তানসহ প্রার্থীদের জন্য ফেডারেল স্কলারশিপে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রস্তাবও বিবেচনায় আছে।

এই উদ্যোগের জোরালো সমর্থন জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি এই নীতিকে “জাতীয় নিরাপত্তা”-র অংশ হিসেবে বিবেচনা করছেন, কারণ তার মতে, ভবিষ্যতের অর্থনীতি ও কর্মক্ষেত্রের জন্য বর্তমান জন্মহার যথেষ্ট নয়। এই প্রয়াসের আরেক সমর্থক হলেন ইলন মাস্ক, যিনি নিজে ১৪ সন্তানের জনক এবং জনসংখ্যা হ্রাসকে মানবজাতির জন্য “সবচেয়ে বড় হুমকি” বলে বিবেচনা করেন। মাস্ক হারিটেজ ফাউন্ডেশনকে আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন এই বিষয় নিয়ে একটি গভীর গবেষণা পরিচালনা করে, যেখানে জনসংখ্যা হ্রাসের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এবং তা মোকাবিলায় কার্যকর নীতির দিকনির্দেশনা থাকবে।

তবে এই প্রস্তাব ঘিরে রয়েছে তীব্র বিতর্ক। নারী নেত্রীরা সমালোচকরা বলছেন, নারীদের সন্তান নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে, অথচ তাদের স্বাস্থ্যসেবা ও মাতৃত্বকালীন সুরক্ষা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, সম্প্রতি সিডিসি’র “ডিভিশন অব রিপ্রোডাকটিভ হেলথ” বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং প্রজনন স্বাস্থ্য গবেষণায় বাজেট কমানো হয়েছে। শুধু বিবাহিত নারীদের জন্য প্রণোদনার কথা বলায় একক মা, অবিবাহিত নারী এবং এলজিবিটিকিউ পরিবারগুলো বাদ পড়ছেবলে এমন আশঙ্কাও উত্থাপিত হয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কেবল প্রণোদনার মাধ্যমে জন্মহার বাড়ানো সম্ভব নয়। বরং প্রয়োজন নারীদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি, মাতৃত্বকালীন ছুটি, ডে-কেয়ার সুবিধা, এবং নিরাপদ পরিবার গঠনের সামাজিক কাঠামো তৈরি। সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত যেন নারীর পছন্দ, নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়- এটাই হওয়া উচিত রাষ্ট্রীয় নীতির মূল দর্শন। হোয়াইট হাউসের এই উদ্যোগ জনসংখ্যাগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ হলেও, এর বাস্তবায়ন হতে হবে মানবিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)