সিলেট বিভাগ নিয়ে কোনো টালবাহানা বিশ্বময় গ্রেটার সিলেটবাসী মেনে নেবে না, সিলেট বিভাগ নিয়ে জালালাবাদ প্রদেশ বাস্তবায়নের দাবিতে গ্লোবাল জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিশিষ্টজনদের অংশগ্রহণে এক আন্তর্জাতিক জুম মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে।
গ্লোবাল জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহিবুর রহমান মুহিবের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ময়নুল হক চৌধুরী হেলালের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশ্বের প্রায় ৪০টি দেশের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট পৌরসভা ও সিলেট সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান বাবরুল হোসেন বাবুল, আমেরিকার ডিস্কেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসার ও সিলেট কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জিয়াউদ্দিন আহমদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ আখতারুল ইসলাম, রানা ফেরদৌস চৌধুরী, ইউকে বিসিএর সাবেক প্রেসিডেন্ট এমএ মুনিম ওবিই, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মিঠু চৌধুরী, গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকের ফাউন্ডার্স কনভেনর মোহাম্মদ মকিস মনসুর, গ্লোবাল জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ছোটন, সহ-সভাপতি অলিউদ্দিন শামীম,আব্দুল মোনেম জাহেদী ক্যারল, সৈয়দ হাসান আহমদ, শেখ ফারুক আহমদ, জামাল আহমেদ খান, কেন্দ্রীয় ট্রেজারার রফিকুল হায়দার, সহ-সম্পাদক আবুল হোসেন, ইয়াকুব কামালী, ইসবাহ উদ্দিন, ফয়জুল হক, প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি জাহাংগীর খান, আশিকুর রহমান, অস্ট্রেলিয়া থেকে ইঞ্জিনিয়ার রাসেল আহমদ, বাংলাদেশ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মহিব উদ্দিন, ট্রেজারার শামীম আলম কোরেশী, এবিসি নিউজের চেয়ারম্যান আলাউর রহমান খন্দকার, ফ্যান্স কমিটির সহ-সভাপতি আব্দুল বাসিত, স্পেনের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমদ, পর্তুগাল থেকে আবুল হাসনাত, সাংবাদিক সাহাব উদ্দিন, প্রফেসার মিছবাহ উদ্দিন, দুবাই থেকে ছয়ফুল ইসলাম, নিউইয়র্ক বাফেলো থেকে আব্দুল মুক্তাদির, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী মুরাদ, নিউইয়র্ক থেকে শ্যমল চন্দ চন্দ ও ইংল্যান্ড জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদেক আহমদ, বাহরাইন থেকে স্মারাট নজরুল ইসলাম সিদ্দিকী, বদরুল হক মনসুর ও এ শামীম আহমদ প্রমুখ।
সভায় বক্তারা সিলেট বিভাগ নিয়ে কোনো টালবাহানা মেনে নেওয়া হবে না, চট্টগ্রামের সঙ্গে সিলেটকে যুক্ত করার চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে। আমরা সিলেট বিভাগ নিয়ে জালালাবাদ প্রদেশ চাই, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ মতে, বাংলাদেশকে যদি কয়েকটি প্রদেশে ভাগ করতে হয় তাহলে বৃহত্তর সিলেটের চারটি জেলা নিয়ে একটি প্রদেশ গঠন করা হবে যুক্তিযুক্ত। চট্টগ্রামের সঙ্গে যুক্ত করা হবে অবাস্তব ও অযৌক্তিক। বৃহত্তর সিলেটের ভৌগোলিক অবস্থা ও লে-আউট আলাদা একথা সরকারের বুঝা উচিৎ, সিলেট থেকে চট্টগ্রামের চেয়ে ঢাকায় বরং যাওয়া যাবে দ্রুত। তাই চট্টগ্রামের সঙ্গে সিলেট কানেক্ট করে প্রদেশ করলে সিলেট হবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বঞ্চিত, এরকম হটকারি, অবাস্তব এবং অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত কোনো অবস্থাতেই বিশ্বময় বসবাসকারী সিলেটের মানুষ মেনে নেবে না।
১৯৪৭ সালে আমরা সিলেট বিভাগ রেফারেন্ডারের মাধ্যমে বর্তমান বাংলাদেশে আসে তখন থেকেই সিলেটের আলাদা মর্যাদার অঙ্গীকার ছিল বলে উল্লেখ করে বক্তারা আরো বলেন, বৃহত্তর সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেট নিয়ে সিলেট বিভাগ গঠিত আমাদের কাছে ‘জালালাবাদ’ নামেও পরিচিত। হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর নামানুসারে এ নামকরণ।
এ নামের ব্যাপক পরিচিতি ঘটে, যখন ষাটের দশকে ‘জালালাবাদ’ প্রদেশ আন্দোলন দানা বেঁধে ওঠে। আন্দোলনকারীদের যুক্তি ছিল, যেহেতু ৪৭ সালে গণভোটের মাধ্যমে সিলেট পাকিস্তানের সঙ্গে যোগ দেয়, তাই সিলেটের বিশেষ মর্যাদা পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই ছিল। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে, তথা রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষাদীক্ষা, জ্ঞান-গরিমা, সাংস্কৃতিক ইতিহাস ইত্যাদি সর্বক্ষেত্রে এমনকি প্রবাসের মাটিতে ক্যাটারিং সেক্টর ও ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিশ্বময় বাংলাদেশ কমিউনিটির কল্যাণে ব্যাপক ভূমিকা রাখাসহ বাংলাদেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনে গ্রেটার সিলেটবাসীর অবদান অনস্বীকার্য।
সিলেট বাংলাদেশের অন্যতম সম্পদশালী এলাকা সিলেটের খনিজ তেল, গ্যাস, পাথর, চা-শিল্প, পর্যটন ও দেশের রেমিট্যান্সের সিংহভাগই আসে প্রবাসী সিলেটবাসীর মাধ্যমে বলে উল্লেখ করে বক্তারা আরো বলেন, বর্তমান সরকার যদি প্রাদেশিক সরকার গঠন করে, তাহলে সিলেটের নাম আসবে সবার আগে। কারণ সিলেটের মানুষের এই দাবি দীর্ঘদিনের। সিলেটবসীর ন্যায্য দাবি সিলেট প্রদেশ বাস্তবায়নের ক্যাম্পেইনে দেশ-বিদেশে সিলেটবাসীকে আরো বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।