ষড়যন্ত্র ঠেকাতে কঠোরভাবে মাঠে নামছে বিএনপি


সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ , আপডেট করা হয়েছে : 12-02-2025

ষড়যন্ত্র ঠেকাতে কঠোরভাবে মাঠে নামছে বিএনপি

কেবল একটি দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনই নয়, বাংলাদেশ নিয়ে দেশে বিদেশে ষড়যন্ত্র ঠেকাতে-ও কঠোর ভাবে মাঠে থাকবে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি। বিএনপির পাশাপাশি সারাদেশেই তাদের সর্বস্তরের অঙ্গসংগঠন শুভানুদ্যায়ীদের মাঠে থাকতে যা করার সব ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশি তাদের সাথে যুগপৎ আন্দোলনে সঙ্গী মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগমততে বিভিন্নভাবে সম্পৃক্ত করবে। এবার বিএনপি শুধু মাঠে-ময়দানে সভাসমাবেশই নয়, সেমিনার কর্মশালাসহ বিভিন্ন সামাজিক অসাম্প্রদায়িক ইস্যুতেই দলের নেতাকমী পেশাজীবীদেরকে মাঠে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর একাজে দলটি শুধু তাদের নেতাকর্মী বা সমর্থকই না সর্বস্তরের সংস্কৃতিকমনা জনগণকে সম্পৃক্ত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। 

৬৪ জেলায় জনসভা

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি দেশব্যাপী জনসভা করার ঘোষণা দিয়েছে। আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা ১০ দিনে দেশের ৬৪ জেলায় জনসভা করবে দলটি। এরপরই বিভাগীয় শহরগুলোতে সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এসব সমাবেশ গুরুত্বপূর্ণ এবং ভালো লোকসমাগমের জন্য জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ সিনিয়র নেতারা এসব সমাবেশে উপস্থিত থাকার নিদের্শ দেয়া হয়েছে। এমনকি পরবর্তীতে যে বিভাগীয় শহরগুলোতে সভা-সমাবেশ হবে তা-তে দলের মহাসচিবসহ গুরুত্বপূর্ণরা উপস্থিত থাকবেন। 

কিন্তু কেন?

বিএনপি একটি সূত্র জানায়, যদিও বলা হচ্ছে যে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি স্থানীয় পর্যায়ে রাখার দাবিতে, অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির দাবিতে এসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু আসলে ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে অন্য বিষয়। দলটি’র নেতারা মনে করেন দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি নিয়ে একটি মহল বেশ ষড়যন্ত্র করছে। এর পাশাপাশি বিএনপি’র নেতারা মনে করেন, বাংলাদেশে এখন পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্ত চলছে। এর পাশাপাশি সক্রিয় রযেছে উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। এদের বিভিন্ন ধরনের অপচেষ্টা মোকাবিলাসহ বিভিন্ন জনদাবিতে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে জেলা ও মহানগরে পর্যায়ক্রমে সভা ও সমাবেশের ডাক দেয়া হয়েছে। তবে দলের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায় সম্প্রতি ছাত্র সমাজের উদ্দেশে শেখ হাসিনার ভাষণের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবন থেকে শুরু হয় হামলা-ভাঙচুর। পরে যা দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। 

দুই দিন ধরে চলমান এসব ঘটনায় সরকারের ব্যর্থতাকে বিএনপি অন্যভাবে দেখছে। বিএনপি মনে করে মাঠে একটি রাজনৈতিক দল বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার ইমেজকে পুঁজি করে সারাদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে নানান ধরনের ফায়াদা লুটতে চায়। ওই রাজনৈতিক দলটি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা তাদের শক্তি হিসাবে মাঠে জানান দিতে এমন ঘটনা’কে পরিকল্পিতভাবে সহিংসতার দিকে নিয়ে সরকারকে বেকায়দা ফেলে বা চাপ সৃষ্টি করে একটা প্রেক্ষাপট তৈরি করতে চায়। ওই রাজনৈতিক দলটি বিএনপি টেক্কা নিয়ে মাঠে তাদের শক্ত অবস্থান জানান দিতে চায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপি’র বৈঠকটি কেবল নির্বাচন ইস্যুতেই নয়। ওই বৈঠকেও উঠে আসে কারা এমন নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি কাদের সহায়তা নিয়ে করে একের পর এক ঘটিয়ে যাচ্ছে। এনিয়ে ড. ইউনুসকে তার আসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অবস্থানতেও দেশে বিদেশে তুলে ধরার আহবান জানান। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ওই বৈঠকেও বিএনপি প্রধান উপদেষ্টাকে তার পাশে থাকার ও একসাথে কাজ করার কথা জানিয়ে এসেছেন। ফলে বোঝাই যাচ্ছে বিএনপি এখন কেবল নির্বাচনই নয় দেশকে অস্থিতিশীল করে ভিন্ন দিকে নিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি রাজনৈতিক দল ও মতাদর্শের বিপক্ষেও শক্ত অবস্থান নিচ্ছে। কেননা বিএনপি’র হাই কমান্ড মনে করে নির্বাচেন আগে আরও এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে দলটি বিএনপিসহ পুরো অন্তর্বর্তী সরকারকেই বেকায়দায় ফেলে দিতে পারে। বিএনপি’র হাইকমান্ড মনে করেন দেশের ভেতরে বিএনপি তার সাংগঠনিক ক্ষমতা দেখাতে ব্যর্থ হওয়াতে বা কিছুটা নিরবতায় এমন বিশৃংখল অবস্থা একটি মহল তৈরি করে ফেলেছে বা পতিত সরকার সে-ই ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছে। বিএনপি’র নেতারা মনে করেন সামনের দিনে বিএনপি মাঠে বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক ইস্যুতে মাঠে থাকলে দল ও দেশ নিরাপদ থাকবে। আর একারণে বিএনপি এখন মাঠে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে বলে সূত্রটি আভাস দেন।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)