রাস্তায় শপথ নিলেন তাহের-আরিফ পরিষদের কয়েকজন


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 06-11-2024

রাস্তায় শপথ নিলেন তাহের-আরিফ পরিষদের কয়েকজন

চট্টগ্রাম সমিতির নির্বাচন, ফলাফল ঘোষণা, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক শপথ পড়ানোর ঘটনা নিয়ে ক্রমশই পরিস্থিতি ঘোলাটে হচ্ছে। গত ২০ অক্টোবর রোববার চট্টগ্রাম সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও সংগঠনটি পুনরায় পেছনের দিকে হাঁটছে বলে অনেকে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। নির্বাচনের দিন মিডিয়া এবং উভয় প্যানেলের প্রতিনিধিদের সামনে ঘোষণা করা ফলাফল পাঁচ দিন পর পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট জটিলতা চট্টগ্রাম সমিতিকে পুনরায় দ্বিধাবিভক্ত করে তুলেছে। দীর্ঘদিনের বিভক্তির অবসান ঘটিয়ে ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর সবার সম্মতিতে সাধারণ সভার মাধ্যমে একটি অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি দীর্ঘ ১৮ মাসের অধিক ধরে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেও নির্বাচনের ব্যবস্থা করে। কিন্তু সেই নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে পুনরায় বিভক্ত হতে যাচ্ছে প্রবাসের এই বৃহৎ সংগঠনটি। 

নির্বাচনের দিন ঘোষিত ফলাফল পরিবর্তন করে ২৫ তারিখ রাতে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নতুন ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন। আর এই ফলাফল ঘোষণা শুরু থেকেই প্রত্যাখ্যান করে আসছে মাকসুদ-মাসুদ পরিষদ।

প্রথম ফলাফলের পর নির্বাচন কমিশন জানান, তাদের কাছে ৬টি চ্যালেঞ্জ ভোট আছে। কিন্তু কি কারণে এ চ্যালেঞ্জ ভোট তার সঠিক কোনো ব্যাখ্যা নির্বাচন কমিশন দিতে পারেনি বলে মাকসুদ-মাসুদ পরিষদ অভিযোগ করেছেন। তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ধারা অনুযায়ী, পেনসিলভানিয়া কেন্দ্রে অনৈতিকভাবে গৃহীত চারটি চ্যালেঞ্জ ভোট বাতিলের জন্য মাকসুদ-মাসুদ প্যানেল নির্বাচন কমিশনকে পরপর দুটি অভিযোগ দাখিল করেছি, কয়েক বার ফোন করা হয়। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাদের অভিযোগের কোনো উত্তর দেননি এবং ফোনকলও রিসিভ করেননি। তাদের এসব অভিযোগকে অগ্রাহ্য করে কমিশন নির্বাচিতদের কয়েক জনের কাছে শপথের জন্য ২৪ ঘণ্টারও কম সময় আগে স্বাক্ষরবিহীন চিঠি পাঠায়। চিঠির ভাষ্য অনুযায়ী, গত রোববার ৩ নভেম্বর দুপুর ২টায় সংগঠনের কার্যালয়ে শপথ পড়ানোর কথা থাকলেও মাকসুদ-মাসুদ পরিষদ আগে থেকেই সংগঠনের কার্যালয় তাদের দখলে নিয়ে নেয়। ফলে নির্বাচন কমিশন সিকিউরিটি ভাড়া করে, তাহের-আরিফ পরিষদের বেশ কিছু সমর্থকসহ সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তা যেমন সাবেক সভাপতি আব্দুর রহিম, মোহাম্মদ হানিফ, মনির আহমদ, কাজী আজম প্রমুখ এবং সর্বশেষ পুলিশ কল করেও ভবনে প্রবেশ করতে পারেনি বলে জানা গেছে। ভবনের ভেতরে ঢুকতে না পেরে বাধ্য হয়ে নির্বাচন কমিশন তাহের-আরিফ পরিষদের কয়েক জনকে ফুটপাতে সিকিউরিটি এবং পুলিশের পাহারায় শপথ পাঠ করান, যা নিয়ে কমিউনিটিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। আবার কেউ কেউ কমিশনের বিরুদ্ধে স্লোগানও দেন। 

উল্লেখ্য, দ্বিতীয় ফলাফল ঘোষণার পর থেকে মাকসুদ-মাসুদ পরিষদের প্রতিনিধি ও সচেতন কয়েকজন চট্টগ্রামবাসী বিষয়টিকে সুরাহা করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে বারবার অনুরোধ করেছেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন গঠনতন্ত্রের ধারা রক্ষার কথা বলে তাদের কোনো অনুরোধের প্রতি কর্ণপাত না করায় সংগঠনটি আজ বিভক্তির মুখে পড়েছে বলে মাকসুদ-মাসুদ পরিষদ ও কয়েকজন চট্টগ্রামবাসী অভিযোগ করেছেন। তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচন কমিশন তাদের শপথ ভঙ্গ করেছেন। তারা নিজেদের করা বিধিমালা নিজেরাই ভঙ্গ করেছেন, তারা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাক্ষর গ্রহণ করেছেন, যা সম্পূর্ণ অনৈতিক, অসাংগঠনিক, গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী। তারা বিতর্কিত চ্যালেঞ্জ ভোট গণনার সময় মাকসুদ-মাসুদ পরিষদের কোনো প্রতিনিধি সঙ্গে রাখেননি। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মাকসুদ-মাসুদ পরিষদের দাবি-হয় প্রথম রেজাল্ট, যা মেশিন ভোটের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়েছে, তা মেনে নিতে অথবা সংগঠনের বৃহত্তর স্বার্থে পেনসিলভানিয়ার ভোট বাতিল করে ওই কেন্দ্রে পুনরায় নির্বাচন দিতে। অন্যথায় মাকসুদ পরিষদেই চট্টগ্রাম সমিতির ভবিষ্যৎ কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। কারণ ওই বিতর্কিত কেন্দ্রের ভোট বাতিল করলে অন্যান্য সবকটি কেন্দ্রে মাকসুদ-মাসুদ পরিষদ পূর্ণ প্যানেলে জয়ী হয়েছেন।

তারা বলেন, আমরা কোনো বিভক্তি চাই না, তবে জোর করে কেউ জনগণের দেওয়া ভোটের রায়কে নস্যাৎ করতে পারবে না। সচেতন চট্টগ্রামবাসী মাকসুদ-মাসুদ পরিষদের পক্ষে আছে বলে তারা দাবি করেছেন।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)