ডিসেম্বর নাগাদ দেশে ফিরছেন তারেক রহমান?


বিশেষ প্রতিনিধি , আপডেট করা হয়েছে : 23-10-2024

ডিসেম্বর নাগাদ দেশে ফিরছেন তারেক রহমান?

বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রত্যাশায় এখন তারেক রহমান। কবে দেশে ফিরবেন বিএনপির এ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান? এ প্রশ্ন এখন সর্বত্র। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার হচ্ছে ‘নেতা আসছে, রেডি থাক, যে কোনো মুহূর্তে এয়ারপোর্টে যাবার ডাক আসবে।’ কিন্তু সে ডাক কবে আসবে সেটা কেউই জানেন না। তবে ধারণা করছেন যে কোনো মুহূর্তে ফিরতে পারেন বিএনপির এ নেতা মাতৃভূমিতে।

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো এখনও রয়ে গেছে। এ ব্যাপারে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ক’দিন আগে আল্টিমেটামও দেয়া হয়। কিন্তু তার দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। 

মামলা থাকা অবস্থায় তারেক রহমান দেশে ফিরলে কী হতে পারে? এটা জটিল এক প্রশ্ন। অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিনির্ধারকগণই বলতে পারবেন কী সিদ্ধান্ত হবে তার জন্য। অন্তর্বর্তী সরকারের সিগনাল ছাড়া তারেক রহমান দেশে ফিরবেনও না, ফেরা সম্ভবপরও না। ফলে একটা রফা দফা করেই কেবল ফিরবেন। নতুবা একটা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মোকবেলায় পড়তে হবে তাকে। যেমনটায় পড়তে হয়েছিল মাহমুদুর রহমানকে। জেলেও খেটেছেন। এরপর মুক্তি। 

মূলত ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাবার পর থেকে তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়টি আলোচনায় আসে। এর আগেও আলোচনায় ছিলেন তিনি। সেটা ছিল শেখ হাসিনা বলতেন, তারেককে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখী করবেন। শাস্তি দেবেন। কিন্তু সে প্রেক্ষাপটের এখন পরিবর্তন। 

অবশ্য মামলা প্রত্যাহারের দাবি শুধু তারেক রহমানের জন্য প্রযোজ্য তা নয়। বিএনপির মহাসচিব একাধিকারবার বলেছেন, তার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার সরকারের মোট মামলার পরিমাণ প্রায় দেড় লাখ। ফলে ওই সব নেতাকর্মী ৫ আগষ্টের পর এখন নিজ নিজ মামলা প্রত্যাহারের দৌড়ঝাঁপেই ব্যস্ত। হাটছেন আদালতের বারান্দায়। 

জানা গেছে, ওয়ান ইলেভেনের সময় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে হওয়া ১৭ টি মামলার মধ্যে অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলা এবং সম্পদের তথ্য গোপনের মামলায় সাজা হয়েছে। এছাড়া কর ফাঁকি, চাঁদাবাজির বাকি ১৫টি মামলা স্থগিত রয়েছে। মোট পাঁচটি মামলায় তারেক রহমানের সাজা হয়েছে। এছাড়া তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সত্তরটিরও বেশি মানহানির মামলা আছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৭ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের ও ব্যবসায়ীদের আটক করা হয়। তারেক রহমানকে ওই বছরের সাতই মার্চ গ্রেপ্তার করা হয়। পরের বছর ৩রা সেপ্টেম্বর মুক্তি পেয়ে লন্ডন চলে যান তিনি। যদিও সেটা তিনি সেচ্ছায় যাননি। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে তারেক রহমান আর রাজনীতি করবেন না এমন একটা সই দিয়েই তিনি দেশ ত্যাগের অনুমতি পেয়েছেন। নতুবা দেশের কারাগারে তাকে ধুঁকতে হতো। 

এদিকে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমান দেশে ফেরার একটা সম্ভব্য সময় নির্ধারিত হয়েছে। সেটা ডিসেম্বরের দিকে। ওই মাসটিকে সামনে রেখে বিভিন্ন কর্মসূচিরও আয়োজন হচ্ছে গোপনে। এটা হতে পারে প্রাথমিক একটা সিদ্ধান্ত। মূল সিদ্ধান্তটা আসবে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেই। যদিও এমন কথা বলার সুযোগ কম। তবুও বিএনপির সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার যেহেতু বার বার সংলাপ চালিয়ে যাচ্ছে, এর মধ্যে তারেক রহমানের ফেরার বিষয়টি অবশ্যই নিশ্চিত করবেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ। 

এ কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না, আওয়ামী লীগও এখন চাচ্ছে বিএনপি সোচ্চার হোক, তারেক রহমান দেশে ফিরুক। বিএনপি নির্বাচনের দাবি জোরালো করুক। এতে আওয়ামী লীগের মাঠে ফিরতে সুবিধা হবে। এটা অনুমান করছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র জনতাও। কিন্তু সব কিছু এত সহজেই হবে সেটা আওয়ামী লীগ নিজেরাও অনুধাবন করে। তবে ওটা এখানে অপ্রসঙ্গিক। 

মূল বক্তব্য দীর্ঘ পরবাসে থাকা তারেক রহমানের দেশে ফেরা। এ ব্যাপারে বিএনপির বিভিন্ন সূত্র থেকে নিশ্চিত হতে চেষ্টা করা হলে কেউ সঠিক তথ্য দিতে পারেনি। সবাই আশা করছেন। কিন্তু কবে এটা বলতে পারছেন না বা আড়াল করছেন। 

দীর্ঘ ১৬ বছরে তাদের অনেক কার্যক্রম, মামলা-মোকদ্দমা যদি ফ্যাসিস্ট কায়দায় হয়ে থাকে, তাহলে তারেক রহমানের বেলায়ও সেটা প্রযোজ্য। ন্যায়নীতি পাওয়ার অধিকার তারেক রহমানেরও- এটা দলের কোটি সাপোর্টার মনে করেন। এ জন্যই উদগ্রীব তারা তারেক রহমানের দেশে ফেরা প্রসঙ্গে।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)