বাংলাদেশি পিতা নূরুস সাফা-পুত্র মইদুল সাফা গ্রেফতার


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 12-09-2024

বাংলাদেশি পিতা নূরুস সাফা-পুত্র মইদুল সাফা গ্রেফতার

ভুয়া ট্যাক্স রিটার্নসহ বেকার হওয়া শ্রমিকদের পুনর্বহালের জন্য পিপিপি (প্যা চেক প্রটেকশন প্রোগ্রাম) কর্মসূচিতে মিলিয়ন ডলারের অধিক হাতিয়ে নেওয়ার মামলায় নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলিনের দুই বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এফবিআই কর্তৃক ব্যাপক তদন্তের পর ৫ সেপ্টেম্বর তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন কমিউনিটির পরিচিত নূরুস সাফা (৬৫) এবং তার পুত্র মইদুল সাফা (৩৪)। 

ব্রুকলিন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি এরিক গঞ্জালেস গত ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসাকে চাঙ্গা করার জন্য পিপিপি লোন মঞ্জুর করা হয় খুবই সহজ শর্তে। সেই সুযোগ নিয়ে পিতা-পুত্রের মালিকানাধীন রাহিল কন্ট্রাক্টিং ইনকের নামে পিপিপি লোনের আবেদন করা হয়। আবেদনের সঙ্গে জাল কাগজপত্র ছাড়াও ট্যাক্স রিটার্নের ভুয়া ডকুমেন্টও সাবমিট করা হয়। ট্যাক্স রিটার্নের জাল কাগজ তৈরির সময় ট্যাক্স প্রস্তুতকারীর স্বাক্ষরও জাল করা হয়েছিল বলে তদন্তে দেখা যায়। এরপর ফেডারেল গভর্নমেন্ট পিপিপি লোন হিসেবে ১০ লাখ ৮৪ হাজার ৪৭৭ ডলার ৫০ সেন্ট মঞ্জুর করে। এ অর্থ ওই কনস্ট্রাকশন ফার্মের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হবার পরই তা ব্যক্তিগত কাজে ব্যয় করা হয়। 

মামলার উদ্ধৃতি দিয়ে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি আরো জানান, লোনের অর্থ ড্র করার পরই তারা নিউজার্সিতে ভুরহীস এবং পাইন হীল এলাকায় ৫ বেডরুমের দুটি বাড়ি ক্রয় করেছেন মোট ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৬৭০ ডলারে। একই সময় ২০২১ মডেলের একটি বিএমডব্লিউ এম-৫ স্পোর্টস সিডান গাড়ি ক্রয়ের ডাউন পেমেন্ট হিসেবে ৭১ হাজার ডলার দিয়েছেন। তদন্তে আরো উদঘাটিত হয়েছে যে, ঋণের অবশিষ্ট অর্থ ব্যয় করা হয়েছে ব্যক্তিগত বিলাসিতার জন্য। অর্থাৎ পিপিপি লোনের অর্থ ব্যয় করার একটি শর্তও তারা পালন করেননি বলে আদালতে অভিযোগ করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর পিতা-পুত্রকে ব্রুকলিন সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি ডিনা ডগলাসের এজলাসে হাজির করা হলে উভয়কে জামিন প্রদান করা হয়েছে। মামলার পরবর্তী তারিখ হচ্ছে ৩০ অক্টোবর। তাদের বিরুদ্ধে চুরি, জালিয়াতি এবং ব্যবসার ভুয়া কাগজপত্র সংরক্ষণের গুরুতর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। 

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের সন্তান নুরুস সাফা ইতিপূর্বে উত্তর আমেরিকাস্থ সন্দ্বীপ সোসাইটির প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছেন। জানা গেছে, করোনাকালীন লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সচল করার লক্ষ্যে ফেডারেল সরকার পিপিপি লোন বরাদ্দ করেছিল। খুব সহজশর্তে এই লোন মঞ্জুর করা হয় বেকার হওয়া শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়াসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ভাড়া-মর্টগেজ পরিশোধ করার জন্য। প্রয়োজনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করাও যাবে। কিন্তু নিউইয়র্ক অঞ্চলের অনেক প্রবাসী ব্যবসায়ী জালকাগজ এবং ভুয়া প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে পিপিপি লোন হিসেবে মোটা অংক ড্র করেছেন। সেগুলো তদন্তে এফবিআইসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে নেমেছে। ইতিপূর্বে মিশিগান, শিকাগো, ম্যারিল্যান্ড, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, নিউজার্সি, পেনসিলভানিয়াতে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, এই তদন্তে আরো কয়েকজন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী রয়েছেন। তাদের মধ্যেও আতঙ্ক বিরাজ করছে।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)